Ajker Patrika

‘চাল নাগালের বাইরে, তাই আটার রুটি খেয়ে বাঁচতে হয়’

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
সকালের আটা পাওয়ার আশায় রাস্তার পাশে শুয়ে এক দিনমজুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালের আটা পাওয়ার আশায় রাস্তার পাশে শুয়ে এক দিনমজুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘড়ির কাঁটায় তখন গভীর রাত। চারপাশ নিস্তব্ধ। কিন্তু নওগাঁর বদলগাছীর কয়েকটি ডিলার পয়েন্টের সামনে তখনো জেগে আছেন কয়েক ডজন মানুষ। কারও হাতে পুরোনো ব্যাগ, কারও কাঁধে মলিন গামছা। কেউ বসে আছেন দোকানের বারান্দায়, কেউবা কয়েল জ্বালিয়ে রাস্তার পাশে শুয়ে। উদ্দেশ্য একটাই—সকাল হলে লাইনে দাঁড়িয়ে সরকার নির্ধারিত পাঁচ কেজি আটা ১২০ টাকায় কিনবেন।

গতকাল সোমবার গভীর রাতে উপজেলার সদরে তিনটি ওএমএস ডিলার পয়েন্টে এ চিত্র দেখা গেছে।

দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে, রাস্তায় শুয়ে আছেন কোনো মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ। কাছে গেলেই বোঝা যায় ভিন্ন চিত্র। ষাটোর্ধ্ব মানিক মিয়া সারা রাত কাটিয়ে দেন ডিলার পয়েন্টের দরজায়। চোখে ঘুম নেই, মুখে কষ্টের রেখা। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল ফজরের আজানের পর এসেছিলাম, কিন্তু আটা পাইনি। তাই আজ রাত ৯টা থেকে এখানে পড়ে আছি। আটা নিয়েই বাড়ি ফিরব।’

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিক মিয়ার মতো একই কষ্ট নিয়ে রাত কাটান বৃদ্ধা রুমি বেগম, বিধবা শেফালী এবং দিনমজুর হেলেনা বেগম। তাঁরা বলেন, ‘বাজারে চালের দাম নাগালের বাইরে। তাই আটার রুটি খেয়ে বাঁচতে হয়। কিন্তু আটা চাইলে যদি সঙ্গে সঙ্গে না পাওয়া যায়, তবে ভোগান্তি বেড়ে যায়।’

তথ্যমতে, বদলগাছী উপজেলায় প্রতিদিন তিনজন (ওএমএস) ডিলারের মাধ্যমে মাত্র এক টন আটা বরাদ্দ থাকে। অথচ উপকারভোগীর সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েও খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা জেনেছি, আটার জন্য মানুষ সারা রাত লাইনে দাঁড়াচ্ছে। কেউ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না। এ বিষয়ে সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘উপজেলার জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিদিনের বরাদ্দ খুবই সীমিত। তিন ডিলারের মধ্যে এক টন আটা ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে গড়ে প্রতিদিন ২০০ জন উপকারভোগী আটা পান। তবে দীর্ঘ লাইনের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ নিয়ে উপজেলা খাদ্য কমিটির সভায় রেজল্যুশন তৈরি করে মন্ত্রণালয়কে জানানোর চিন্তা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত