Ajker Patrika

মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ, শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৪, ২২: ৩৫
মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ, শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে উত্তেজিত জনতা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম খলিলুল্লাহ্ (২৭)। মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসায় মুহতামিম তিনি। একই ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মো. লাল মিয়ার ছেলে তিনি। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে কামালপুর গ্রামের লাল মিয়ার বড় ছেলে মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা স্থাপন করেন। সেখানে তার ছোট ভাই মাওলানা খলিলুল্লাহ্ মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। 

ওই শিক্ষক মাদ্রাসার নূরানী শাখার এক ছাত্রকে তিনবার ধর্ষণ করেন। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি ছাত্রের বাবা জানতে পেরে মাদ্রাসায় উপস্থিত ছাত্রদের কাছে জিজ্ঞেস করে সত্যতা পান। পরে মুহতামিম খলিলুল্লাহ্কে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তোপের মুখে স্বীকার করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা খলিলুল্লাহ্কে গণপিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রাখেন। 

নান্দাইল মডেল থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে খলিলুল্লাহ্কে থানা নিয়ে যায়। এরপর পরেই মাদ্রাসার ছাত্ররা মাদ্রাসা থেকে যার যার বাড়িতে চলে যায়। 

নূরানী শাখার এক ছাত্রের অভিভাবক মো. আসাদুল্লাহ্ বলেন, ‘মাদ্রাসার হুজুরে এমন ঘটনা করবে তা কখনো চিন্তা করি নাই। খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া তো কিছু করার নেই।’ 

স্থানীয়র গণপিটুনি দিয়ে শিক্ষককে পুলিশে দেয়। ছবি: আজকের পত্রিকাওই মাদ্রাসা ছাত্রের বাবা বলেন, ‘ছেলেটিকে হাফেজ বানাব বলে মাদ্রাসায় দিছি। ছেলে কান্নাকাটি করে বলছে হুজুর আমার সঙ্গে তিন দিন খারাপ কাজ করছে। আমি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলে সবাই বলছে হুজুর খারাপ কাজ করে। এর সঠিক বিচার চাই।’ 

মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তো মাদ্রাসায় থাকি না। আজকে মাদ্রাসায় আসলে ছাত্রের বাবা এসে ঘটনা বলতেছে। উত্তেজিত লোকজন ভাইকে মারধর করছে। এখন তো ঘটনা সত্য না হলেও তো সত্য।’ 

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘মাদ্রাসা ছাত্রকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনাকবলিত বাসে ট্রাকের ধাক্কা, দুই যাত্রী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি
দুর্ঘটনাকবলিত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনাকবলিত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গভীর রাতে দুর্ঘটনাকবলিত একটি যাত্রীবাহী বাসে পেছন থেকে দ্রুতগতির ট্রাকের ধাক্কায় দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন। হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ও আহত ব্যক্তিরা দুর্ঘটনাকবলিত বাস থেকে নেমে সামনে দাঁড়িয়েছিল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা উপজেলার তাড়াইল বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভাঙ্গামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন পাবনার বেড়া থানার বনগ্রামের ফারজানা বেগম (৩০) এবং মাগুরা জেলার মিনহাজুল রহমান শাকিল (২৪)। এ সময় ফারজানা বেগমের কোলে থাকা দেড় বছরের শিশুকন্যা জান্নাতুল গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরাগামী ‘যমুনা লাইনের’ একটি যাত্রীবাহী বাস প্রথমে সামনে থাকা একটি ট্রাককে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এই সময় বাসের ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী নেমে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আরেকটি মালবাহী ট্রাক দ্রুতগতিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। ফলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা চাপা পড়ে ও ছিটকে যায়।

ওসি জানান, ঘটনাস্থলেই মিনহাজুল নামে যুবক মারা যান। আহত ব্যক্তিদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক ফারজানা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর কোলে থাকা শিশুটিকে তাৎক্ষণিকভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনায় দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়িতে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার লিটন ত্রিপুরা। ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এক স্কুলশিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে লিটন ত্রিপুরা (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

‎মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর বন্ধুকে নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে আলুটিলা এলাকায় বেড়াতে যান। ওই সময় লিটন ত্রিপুরা তাঁদেরকে অনুসরণ করেন। আলুটিলায় তারেং এলাকায় পৌঁছানোর পর মোটরসাইকেলচালক লিটন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই শিক্ষিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ১০ হাজার টাকাও দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগীর বন্ধু স্থানীয় সেনাক্যাম্পে খবর দিলে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে লিটন ত্রিপুরাকে আটক করে। এরপর তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। 

মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা ধর্ষণের অভিযোগে মোটরসাইকেলচালক লিটন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করি। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৭
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পিলারে দেখা যায় চুলের মতো সরু ফাঁকা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

যমুনা রেলসেতুর পিলারে দেখা দেওয়া কিছু ফাটলের ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো আসলে ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট সূক্ষ্ম ‘হেয়ার ক্র্যাক’ বা সরু ফাটল। বৃহস্পতিবার থেকে একাধিক ফেসবুক পেজে এসব ফাটলের ছবি দেখা যাচ্ছে।

যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. নাইমুল হক বলেন, যমুনা রেলসেতুতে কোথাও কোনো ফাটল ধরেনি। কোনো পিলারে ফাটলের চিহ্নও নেই। একটি চক্র এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাটলের ছবি তৈরি করেছে এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে গুজব ছড়িয়েছে।

যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মার্ক হ্যাবি বলেন, রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের ৮-১০টি পিলারের নিচে হেয়ার ক্র্যাক শনাক্ত হয়েছে। এসব জায়গায় ইতিমধ্যে রেজিন বা বিশেষ আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

মার্ক হ্যাবি আরও বলেন, এটি কোনো নির্মাণ ত্রুটি নয়, এমনকি ‘হানিকম্ব’ সমস্যাও নয়। প্রচণ্ড গরম ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কংক্রিটের নিচে শূন্য দশমিক ১ থেকে ৩ মিলিমিটার পর্যন্ত সূক্ষ্ম ফাঁক তৈরি হয়েছে। এতে সেতুর গঠন বা স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়বে না।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক জানান, এসব হেয়ার ক্র্যাক ধীরে ধীরে ঘষে মেরামত করা হচ্ছে। সেতুর কাঠামো বা ট্রেন চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি বড় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

উল্লেখ্য, যমুনা সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার ভাটিতে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান। এটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

সেতুটিতে আসা-যাওয়ার দুটি লাইন (ডুয়েলগেজ ট্র্যাক) রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালকসহ নিহত ৩

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদীর রাইনাদী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের রাইনাদী গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে সিয়াম মিয়া (২২), আলতাফ হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৮) ও রবিউল ইসলামের ছেলে অটোচালক ফাহিম মিয়া (৩০)।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, রাতে ইজিবাইকে করে তিনজন মাধবদীর দিক থেকে রাইনাদী এলাকায় যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে সিলেটগামী দ্রুতগতির বাসটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এ সময় দুজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান আরও একজন।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজন মারা গেছেন। ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। বাসটি জব্দ করা হলেও পালিয়ে গেছেন বাসের চালক ও তাঁর সহযোগী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত