ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
সীমাহীন দুঃখ-কষ্টও তাঁদের ভালোবাসার রং ধূসর করতে পারেনি। তাঁদের জীবনসংগ্রাম হার মানিয়েছে সব দুঃখ, কষ্ট ও ভালোবাসার কাহিনিকে। টাকায় পাওয়া নম্বর থেকে যে ভালোবাসার শুরু, তা আজ ১৪ বছর পেরিয়েছে।
এটি কোনো সিনেমা বা নাটকের গল্প নয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বসবাসরত সোহেল-রওশনের ভালোবাসার গল্প। রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া। রওশন আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার গুজিয়াম টানপাড়া গ্রামে। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাঁদের।
জন্ম থেকেই দুই পা অচল রওশনের। পায়ে ভর দিয়ে চলার শক্তিটুকুও নেই তাঁর। সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। পারিবারিক সম্পর্ক ছিন্ন করেই ভালোবাসার টানে নিজ পায়ে চলতে অক্ষম রওশনের কাছে ছুটে আসেন তিনি। পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন রওশনকে। রওশনও তাঁর পরিবারের অমতে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন সোহেলের হাত ধরে।
শারীরিক সীমাবদ্ধতার পরও কোনো দিন সোহেল-রওশনের ভালোবাসায় কোনো কমতি দেখতে পায়নি তাঁদের প্রতিবেশীরা। বরং প্রতিকূল পরিবেশে আরও বেড়েছে তাঁদের ভালোবাসা। সোহেল পেয়েছে রওশনের কাছ থেকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর রওশন তাঁর শারীরিক অক্ষমতার পরও পেয়েছে সোহেলের উদার মনের প্রাণখোলা ভালোবাসা। আছে পাওয়া-না পাওয়ার হিসাবও।
সুখের সংসার গড়ে বছর চারেক ছিলেন ঢাকা শহরে। সোহেল চাকরি করতেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এরই মধ্যে রওশনের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক কন্যাশিশু।
অচল পায়ে হাঁটু গেড়ে হাতে ভর দিয়ে চলা রওশনের পক্ষে তাঁর মেয়েকে সামলিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার এদিকে রওশনের বাবা অসুস্থ হওয়ায় তাঁরাও চাইছিলেন তাঁরা ঢাকা ছেড়ে ত্রিশালে পাড়ি জমাতে।
সোহেল-রওশন দম্পতি তাঁদের মেয়েশিশুসহ চলে এলেন ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গুজিয়াম টানপাড়া গ্রামে। রওশনের বাবা-মা ছাড়া সোহেল-রওশন দম্পতির দুই পরিবারের কেউই মেনে নিতে পারেনি এই বিয়ে।
সোহেলের পরিবারের ক্ষোভ পা অচল রওশনকে বিয়ে করা। আর রওশনের পরিবারের ক্ষোভ—এই উচ্চশিক্ষিত ছেলে কোনো এক সময় রওশনকে ছেড়ে পালাবে।
চলেছে দিন, গেছে বছরের পর বছর। এই ভুল বিশ্বাস দূর হয়েছে রওশনের বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের। এরই মধ্যে মারা গেলেন রওশনের বাবা। আর এবার বাবার বাড়িতে আশ্রয় খুঁজে নেওয়া রওশনকে তাঁর ভাই-ভাবিরা ভাবতে লাগলেন সম্পদের অংশীদার হিসেবে। ভাই-ভাবিদের অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হতে থাকলেন তাঁরা।
পারিবারিক সম্পর্ক থেকে বঞ্চিত এই দম্পতি স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় ঘরের পাশেই দিয়েছেন ছোট্ট একটি দোকান। এভাবে ভালোই চলছে তাঁদের সংসার। বিশেষ প্রয়োজনে রওশনকে কাঁধে ভর করে নিয়ে যান সোহেল। এমনকি অনেক সময় ঘুরতেও বের হন তাঁকে কাঁধে নিয়েই। তাঁদের মেয়ে সিদরাতুল মুনতাহা স্বরণী (৯) এখন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সোহেল মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আট ভাই-বোনের মধ্যে আমিই সবার ছোট। পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরিও করতাম। পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে এখানে চলে আসি। শত প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা ভালো ছিলাম। ২০০০ সালের নভেম্বরে আমি স্ট্রোক করি। এখন অনেক কিছু মনে থাকে না। অর্থকষ্ট থাকলেও আমাদের ভালোবাসায় কোনো কমতি নেই।’
রওশন আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন জানি আমার ভাই-ভাবিরা আমাদের শত্রু মনে করে। তারা আমাদের সহযোগিতা তো দূরের কথা, আমরা এখানে থাকি এটাই তারা চায় না। আমার স্বামীর মতো ভালো মানুষ আমি কখনো দেখিনি। উচ্চশিক্ষিত একটা ছেলে হয়েও সে আমার মতো পঙ্গু অসহায় মেয়েকে মন থেকে ভালোবেসে যাচ্ছে। বৃষ্টির দিন আমাদের থাকার ঘরে পানি পড়ে। ভালো কোনো গোসলখানা ও টয়লেট নেই। এই শরীর নিয়ে এগুলো ব্যবহার করতে আমার খুব কষ্ট হয়। কোনো টিউবওয়েল না থাকায় অনেক দূর থেকে আমার স্বামী প্রয়োজনীয় পানি নিয়ে আসে। আমাদের সরকার কতজনের জন্য কত কিছু করছে, আমাদের জন্যও নিশ্চয়ই কিছু করবে।’
সীমাহীন দুঃখ-কষ্টও তাঁদের ভালোবাসার রং ধূসর করতে পারেনি। তাঁদের জীবনসংগ্রাম হার মানিয়েছে সব দুঃখ, কষ্ট ও ভালোবাসার কাহিনিকে। টাকায় পাওয়া নম্বর থেকে যে ভালোবাসার শুরু, তা আজ ১৪ বছর পেরিয়েছে।
এটি কোনো সিনেমা বা নাটকের গল্প নয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বসবাসরত সোহেল-রওশনের ভালোবাসার গল্প। রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া। রওশন আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার গুজিয়াম টানপাড়া গ্রামে। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাঁদের।
জন্ম থেকেই দুই পা অচল রওশনের। পায়ে ভর দিয়ে চলার শক্তিটুকুও নেই তাঁর। সোহেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। পারিবারিক সম্পর্ক ছিন্ন করেই ভালোবাসার টানে নিজ পায়ে চলতে অক্ষম রওশনের কাছে ছুটে আসেন তিনি। পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন রওশনকে। রওশনও তাঁর পরিবারের অমতে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন সোহেলের হাত ধরে।
শারীরিক সীমাবদ্ধতার পরও কোনো দিন সোহেল-রওশনের ভালোবাসায় কোনো কমতি দেখতে পায়নি তাঁদের প্রতিবেশীরা। বরং প্রতিকূল পরিবেশে আরও বেড়েছে তাঁদের ভালোবাসা। সোহেল পেয়েছে রওশনের কাছ থেকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর রওশন তাঁর শারীরিক অক্ষমতার পরও পেয়েছে সোহেলের উদার মনের প্রাণখোলা ভালোবাসা। আছে পাওয়া-না পাওয়ার হিসাবও।
সুখের সংসার গড়ে বছর চারেক ছিলেন ঢাকা শহরে। সোহেল চাকরি করতেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এরই মধ্যে রওশনের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক কন্যাশিশু।
অচল পায়ে হাঁটু গেড়ে হাতে ভর দিয়ে চলা রওশনের পক্ষে তাঁর মেয়েকে সামলিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার এদিকে রওশনের বাবা অসুস্থ হওয়ায় তাঁরাও চাইছিলেন তাঁরা ঢাকা ছেড়ে ত্রিশালে পাড়ি জমাতে।
সোহেল-রওশন দম্পতি তাঁদের মেয়েশিশুসহ চলে এলেন ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গুজিয়াম টানপাড়া গ্রামে। রওশনের বাবা-মা ছাড়া সোহেল-রওশন দম্পতির দুই পরিবারের কেউই মেনে নিতে পারেনি এই বিয়ে।
সোহেলের পরিবারের ক্ষোভ পা অচল রওশনকে বিয়ে করা। আর রওশনের পরিবারের ক্ষোভ—এই উচ্চশিক্ষিত ছেলে কোনো এক সময় রওশনকে ছেড়ে পালাবে।
চলেছে দিন, গেছে বছরের পর বছর। এই ভুল বিশ্বাস দূর হয়েছে রওশনের বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের। এরই মধ্যে মারা গেলেন রওশনের বাবা। আর এবার বাবার বাড়িতে আশ্রয় খুঁজে নেওয়া রওশনকে তাঁর ভাই-ভাবিরা ভাবতে লাগলেন সম্পদের অংশীদার হিসেবে। ভাই-ভাবিদের অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হতে থাকলেন তাঁরা।
পারিবারিক সম্পর্ক থেকে বঞ্চিত এই দম্পতি স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় ঘরের পাশেই দিয়েছেন ছোট্ট একটি দোকান। এভাবে ভালোই চলছে তাঁদের সংসার। বিশেষ প্রয়োজনে রওশনকে কাঁধে ভর করে নিয়ে যান সোহেল। এমনকি অনেক সময় ঘুরতেও বের হন তাঁকে কাঁধে নিয়েই। তাঁদের মেয়ে সিদরাতুল মুনতাহা স্বরণী (৯) এখন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সোহেল মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আট ভাই-বোনের মধ্যে আমিই সবার ছোট। পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরিও করতাম। পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে এখানে চলে আসি। শত প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা ভালো ছিলাম। ২০০০ সালের নভেম্বরে আমি স্ট্রোক করি। এখন অনেক কিছু মনে থাকে না। অর্থকষ্ট থাকলেও আমাদের ভালোবাসায় কোনো কমতি নেই।’
রওশন আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন জানি আমার ভাই-ভাবিরা আমাদের শত্রু মনে করে। তারা আমাদের সহযোগিতা তো দূরের কথা, আমরা এখানে থাকি এটাই তারা চায় না। আমার স্বামীর মতো ভালো মানুষ আমি কখনো দেখিনি। উচ্চশিক্ষিত একটা ছেলে হয়েও সে আমার মতো পঙ্গু অসহায় মেয়েকে মন থেকে ভালোবেসে যাচ্ছে। বৃষ্টির দিন আমাদের থাকার ঘরে পানি পড়ে। ভালো কোনো গোসলখানা ও টয়লেট নেই। এই শরীর নিয়ে এগুলো ব্যবহার করতে আমার খুব কষ্ট হয়। কোনো টিউবওয়েল না থাকায় অনেক দূর থেকে আমার স্বামী প্রয়োজনীয় পানি নিয়ে আসে। আমাদের সরকার কতজনের জন্য কত কিছু করছে, আমাদের জন্যও নিশ্চয়ই কিছু করবে।’
ঈদের দিন বিকেলে খেলতে ছিল হামজা। এ সময় পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায় শিশুটি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে একপর্যায়ে তাকে পুকুর পানিতে ভাসতে দেখেন স্বজনেরা। পরে দ্রুত উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
৫ মিনিট আগেআসমা বলেন, ‘মাংসের দাম বেশি। তাই সরা বছর গরুর মাংস কেনার সামর্থ্য হয় না। আমরাও মানুষ। আমাদেরও খেতে ইচ্ছে করে। তাই এক টুকরো মাংসের আশায় ঈদের দিনে ব্যাগ নিয়ে শহরে এসেছি।’
১ ঘণ্টা আগেসারিয়াকান্দিতে দাদা বাড়ি ঈদ করতে এসে পুকুরে ডুবে আদুরী আক্তার (৯) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ছাগলধরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগেমোর্শেদুর রহমান কামাল বলেন, ‘আজকে ঈদের দিন। সবাই আনন্দ করতাছে। আর আমি আমার পরিবার ও প্রতিবেশী লোকজন নিয়া পুকুর থেকে মরা মাছ তুলতেছি। আমার জানা মতে তো কোনো শত্রু নেই। তাইলে কেডা আমার এই ক্ষতিটা করল। দুই পুকুরে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ছিল আমার। সব মইরা শেষ। ১৫ বছরের জমানো পুঁজি সব শেষ।
২ ঘণ্টা আগে