Ajker Patrika

ধোবাউড়ায় নেতাই নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন, বন্যায় প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২১, ১২: ০১
ধোবাউড়ায় নেতাই নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন, বন্যায় প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদীর কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারীতলা, ঘোষগাঁও ও বাঘবেড় ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে সব রাস্তা-ঘাট ও বীজতলা। বন্যার পানিতে ডুবে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। পানিবন্দী হয়ে শিশুসন্তান নিয়ে আতঙ্কে বাস করছে বন্যাকবলিত এলাকার অনেক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে ঘোষগাঁও ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দিঘলবাগ ও কালিকাবাড়ি গ্রাম। দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের বল্লভপুর, কাশিপুর, সোহাগীপাড়া, গোনাপাড়া, গোসাইপুর, টাঙ্গাডি, দড়িপাড়া, কড়ইগড়া, রামসিংহপুর, বাগপাড়া, ঘিলাগড়া, ছোট মুন্সীপাড়া ও উত্তর রানীপুর গ্রাম। এ ছাড়া বাঘবেড় ইউনিয়নের শালকোনা, থলুয়াপাড়া, মেকিয়ারকান্দা, ডোমঘাটা, মান্দালিয়া, গোস্তাবহুলী ও নয়নকান্দি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। 

বুধবার দিনভর মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে এসব এলাকার মানুষের। পুকুর ডুবে মাছ ভেসে যাওয়া ও বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক কৃষক।

দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের হেলাল উদ্দিন সাফি জানান, গোনাপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস মেম্বারের বাড়ির পাশে নেতাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

গামারীতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রমজান আলী জানান, মন্দিরঘোনা, তারাগড়া, কলসিন্দুর, নলগড়া, রায়পুর, কামালপুর ও চান্দেরনগর এলাকার অবস্থা বেশি ভয়াবহ। তাঁদের রান্নাঘরে পানি উঠে গেছে। রান্না না হওয়ায় শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে।

দক্ষিণ ডোমঘাটা গ্রামের বাবুল হোসেন বলেন, 'আমার ফিশারি ডুবে ৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ ভেসে গেছে।’ 

পাহাড়ি ঢল ও দিনব্যাপী মুষলধারে বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকা প্লাবিত হয়েছে এতে ছিপ জাল নিয়ে মাছ ধরছে এলাকার মানুষএ ছাড়া পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের বেতগাছিয়া, বহরভিটা, উদয়পুর, রায়কান্দুলিয়া, হরিণধরা, কালীনগর, আটাম, আঙ্গুরাকান্দা, বতিহালা, পাতামসহ নিম্ন এলাকাগুলোয় ঢলের পানি প্রবেশ করেছে এবং অন্য গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে গামারীতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ইতিমধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্লাবিত এলাকার বাসিন্দা ও গবাদিপশু নিরাপদে অন্য এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্যায় প্লাবিত এলাকায় সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, নেতাই নদীতে স্থায়ী বাঁধ না দেওয়ায় এভাবে প্রতিবছর মানুষের ঘর-বাড়ি ভেঙে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। পানিতে এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা দিয়ে চলাচল করছেন গ্রামবাসী।

এ ছাড়া ঘোষগাঁও, পোড়াকান্দুলিয়া, বাঘবেড় ইউপির চেয়ারম্যানরা জানান, তাঁদের এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এবারেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। বন্যায় প্লাবিত এলাকায় ত্রাণসহায়তা দেওয়ার কথাও জানান তাঁরা।

ইতিমধ্যে বুধবার বিকেলে উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নের নেতাই নদীর ভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফিকুজ্জামান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ উজ্জ্বল। পরিদর্শন শেষে ডেভিড রানা চিসিম সংশ্লিষ্টদের পানিবন্দী মানুষদের কাছে দ্রুত ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও রাফিকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, বুধবার বিকেলে প্লাবিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর মধ্যে খাদ্য ও ত্রাণসহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত