Ajker Patrika

মদনে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহত্যা, থানায় মামলা

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মে ২০২২, ১৫: ২৭
মদনে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহত্যা, থানায় মামলা

নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণের শিকার এক তরুণী (২১) আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় মদন থানায়  একটি মামলা করা হয়েছে। ওই তরুণীর ভাই বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে শনিবার রাতে মামলাটি করেছেন। 

ধর্ষণ মামলা তুলে নেওয়াসহ আসামির মোবাইলে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে আত্মহত্যা করেন ওই তরুণী। মামলার আসামিরা হলেন ধোবাওয়ালা গ্রামের মেনু ভূঁইয়ার ছেলে রুমেল (২৫) ও তাঁর বড় ভাই রাসেল (৩৫)। 

পুলিশ ও ওই তরুণীর পরিবার জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগে রুমেলের সঙ্গে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা হয় ওই তরুণীর। সেখান থেকেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে একাধিকবার যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে রুমেল। বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে বিয়ের আলোচনা হয়। কিন্তু রুমেলের পরিবার সেই বিয়েতে সম্মতি দেয়নি। পরে ২০২০ সালের ২ আগস্ট রুমেল ওই তরুণীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে। পরে ৩ আগস্ট রুমেলের বাড়িতে বিষ হাতে অনশনে বসেন ওই তরুণী। স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা একাধিক সালিস করেও বিষয়টির মীমাংসা করতে পারেননি। 

এ ঘটনায় ২০২০ সালের ৭ আগস্ট ওই তরুণীর ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই তরুণী। জবানবন্দিতে তিনি অপরাধের সহযোগী হিসেবে রুমেলের বড় ভাই রাসেল ও বোন হেনা আক্তারের নাম উল্লেখ করেন। কিন্তু কেবল রুমেলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ন্যায়বিচারের আশায় ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেয় বাদীপক্ষ। বর্তমানে মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে। 

ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বুধবার ঈদের কেনাকাটা করতে মদন পৌর সদরে যান ওই তরুণী ও তাঁর ভাই। সেখানে রুমেলের বড় ভাই রাসেল তাদের মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। মামলা তুলে না নিলে রুমেলের মোবাইলে ধারণকৃত ওই তরুণীর অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার ভয় দেখান। পরে বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়িতে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই তরুণী। 

খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারে কাছে হস্তান্তর করেছে। শনিবার নেত্রকোনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনশি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে রাতেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে মদন থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর ভাই। 
 
এদিকে আসামি রাসেল বলেন, ‘মামলা তুলে নিতে কোনো রকম হুমকি দেওয়া হয়নি। আমাদের ফাঁসানো হয়েছে।’ 

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, নিহতের ভাই বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে শনিবার রাতে থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত