Ajker Patrika

‘জানি না নিজেকে জীবিত করতে আর কত দিন ঘুরতে হবে আমার’

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
‘জানি না নিজেকে জীবিত করতে আর কত দিন ঘুরতে হবে আমার’

বেঁচে আছেন আব্দুল মৌলু। কিন্তু কাগজপত্রে তিনি মৃত। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন অফিসে ঘুরে এখন ক্লান্ত ওই রীতিমতো জীবিত মানুষটি। দীর্ঘদিনেও নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে না পাড়ায় রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের গাফিলতির কারণে এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার মো. আব্দুল মৌলু। সে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বাবার নাম, দুলো মিয়া ও মায়ের নাম মোসা. জমশেদা খাতুন। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে নম্বরে তিনি মৃত। 

ভুক্তভোগী আব্দুল মৌলু বলেন, প্রতিবেশী লোকজনের মতো তাঁরও জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত মদন পৌর নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মৃত। এমন খবরে এলাকার লোকজনও হতভম্ব হয়ে পড়েন। পরে বিষয়টি যাচাই করতে মদন নির্বাচন অফিসে যান আব্দুল মৌলু। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মারা গেছেন। এরপর থেকেই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে আবেদন নিয়ে ঘুরে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। 

মৌলু আরও বলেন, ‘আমি এখনো জীবিত আছি। কিন্তু কাগজপত্রে আমি মারা গেছি। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে নির্বাচন অফিসের কথামতে বেশ কয়েকবার আবেদন করেছি। গত দুই দিন আগে আবারও আবেদন করেছি। এখন কী করব বুঝতেছি না। কাগজপত্রে আমি মৃত থাকায় সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’ 

ভুক্তভোগী আব্দুল মৌলু আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই হল আমাদের দেশ, যে দেশে জীবিত থেকেও মৃত হয়ে বাঁচতে হয়। জানি না নিজেকে জীবিত করতে আর কত দিন ঘুরতে হবে আমার।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হামিদ ইকবাল বলেন, আব্দুল মৌলুর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি দিয়ে যাচাই করে দেখেছি। সেখানে তাঁকে মৃত দেখাচ্ছে। তথ্য সংগ্রহের সময় ভুল হলে মূলত এ সমস্যা হয়ে থাকে। আব্দুল মৌলুর আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্রুত বিষয়টির সমাধান করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত