Ajker Patrika

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার মাছ ধরার উৎসব

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার মাছ ধরার উৎসব

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার মাছ ধরার উৎসব। এক সময় বর্ষায় গ্রাম বাংলার নিচু জমি খাল-বিলের পানি নেমে যেত। আর সেখানে গ্রামের মানুষ পানি সেচে মাছ ধরত। সেই সময়ের মাছ ধরার চিরায়ত দৃশ্য এখন সচরাচর চোখে পড়ে না।

আগে খাল-বিল, পুকুর-ডোবা আর খেত শুকিয়ে গেলে গ্রামের মানুষ দল বেঁধে থালা-বাটি নিয়ে মাছ ধরার জন্য নেমে যেত। খাল, বিল, নদী নালা ডোবার পানি সেচে মাছ ধরত তারা। এ সময় আনন্দ উল্লাসে গ্রামের মানুষ ডোবা, নালা, খাল-বিলের শূন্য পানিতে কাঁদার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে তুলে আনত একের পর এক মাছ। ডোবায় মিলত শোল, টাকি, পুঁটি, খলশে, কৈ, মাগুর, শিং, ট্যাংরা, পুঁটি ও দেশীয় প্রজাতির নানা মাছ। 

স্থানীয়দের জানান, ভাদ্র মাসের তীব্র গরম আর প্রখর রোদে নদ-নদীর পানি, খাল-নালা ও নিচু জমির পানি শুকিয়ে যেতে থাকে। ডুবে থাকা ডোবা, নালা, খাল বিলের পানি শুকিয়ে গেলে এসব স্থানে আটকা পড়ে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। সে সময় কাঁদা পানিতে নেমে হাত দিয়ে মাছ শিকার করে গ্রাম-বাংলার মানুষ। তীব্র রোদে হাঁটু পর্যন্ত কাঁদা পানিতে মাছ ধরা গ্রাম বাংলার অন্যতম বিনোদনও বটে। তবে মাছ ধরার এমন দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।

বর্তমানে উপজেলার নদী, খাল, বিল ও ছোট ছোট খাদ কালের বিবর্তনে অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে। তারপরও বর্ষা মৌসুমে পানিতে টইটম্বুর হয়ে ওঠে এসব নদী খাল বিল ও ডোবা নালা। বর্ষায় ডুবে যায় ধানখেত আর নিচু জমি। পানির সঙ্গে সেই জমিতে দেশীয় জাতের নানা মাছের আগমন ঘটে। কিন্তু আগের মতো মাছ ধরার দৃশ্য এখন দেখা যায় না। 

সোয়াইল গ্রামের শাহজাহান খান বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষাকাল শেষ হলে পানি কমে যায়। এ অঞ্চলের নিচু জমিগুলোতে মাছ ধরার উৎসব চলে। সেই উৎসবে মাছ ধরায় মেতে ওঠে নারী-পুরুষ, ছেলে-বুড়ো সকলে। কাঁদা পানিতে নেমে কে কত বেশি মাছ ধরতে পারে, তা নিয়ে চলে অলিখিত প্রতিযোগিতা। তবে আগে নানা জাতের দেশীয় মাছ প্রচুর ধরা গেলেও, এখন আর সেদিন নেই। নেই মাছের সে প্রাচুর্য। প্রতিনিয়ত মাছের অভয়ারণ্য কমে যাওয়ায় আগের মতো জমে ওঠে না মাছ ধরার উৎসব। দেশীয় মাছের উৎসগুলো ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছে।’

আবুল হোসেন বলেন, ‘খাল বিল থেকে মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরার দিন শেষ। আবার পাঁচ মিশালি মাছের রান্নার ঘ্রাণও এ মৌসুমে এখন আর আগের মতো ছড়িয়ে পড়েনা। এখন নিচু জমিগুলোতে বাঁধ দিয়ে পাঙাশ চাষ করা হচ্ছে। মাছের নিরাপদ আশ্রয়গুলো সংকুচিত হয়ে গেছে। এ জন্য আগের মতো নদী, বিলে খালে দেশীয় মাছ পাওয়া যায় না। তার জায়গা দখল করে নিয়েছে চাষ করা বিভিন্ন জাতের মাছ।’ 

বাপার ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্যসচিব কামরুল হাসান বলেন, ‘দিন দিন ভালুকার সরকারি খালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য আমাদের দেশি মাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত খালগুলো রক্ষা করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

এলাকার খবর
Loading...