Ajker Patrika

বেতন নিতেন হাসপাতালের, কাজ করতেন এমপির বাড়িতে 

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০২
বেতন নিতেন হাসপাতালের, কাজ করতেন এমপির বাড়িতে 

নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী ভিত্তিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি পান মোশারফ হোসেন ও সুজন মিয়া নামে দুই যুবক। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নিয়োগের পর থেকে হাসপাতালের বেতন-ভাতা পেয়েও কাজ করতেন সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের বাড়ি ও খামারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পান উপজেলার দেউলডাংরা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোশারফ হোসেন। হাসপাতালে নিয়োগ পেলেও কাজ না করে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের নান্দাইল পৌর সদরের বাসায় কাজ করতেন ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত। বেতন-ভাতা কম থাকায় মোশাররফ হোসেন বিদেশ চলে যান। একই বছরের আগস্টে মোশাররফ হোসেনের পরিবর্তন একই ইউনিয়নের কোনাদেউলডাংরা গ্রামের নূর উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে যোগদান করেন।

মোশাররফ হোসেনের মতো সুজন মিয়াও হাসপাতালের কাজ না করে সংসদ সদস্যের নিজ বাড়ি জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের গরু-ছাগলের খামারে কাজ শুরু করেন এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি তুহিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজিত হন। এরপর থেকে সুজন মিয়া গরু-ছাগলের খামারের কাজ ছেড়ে দেন। অন্যদিকে হাসপাতালেও যান না। মোশাররফ হোসেন ও সুজন মিয়া বিশেষ বলয়ে হাসপাতালের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা সম্মানী ভাতা নিতেন।

অভিযোগের বিষয়ে সুজন মিয়া বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। হাসপাতাল থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা নিলেও কাজ করতাম এমপির বাড়ির খামারে। এমপি প্রতি মাসে আমাকে আরও চার হাজার টাকা দিত। এহন তো চাকরি নাই, যদি আবার চাকরিটা ফিরে পেতাম তাহলে চলতে পারতাম।’

নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, ‘বিষয়টি অনিয়ম ও দুর্নীতি। উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবেক এমপি ও কমিটির সদস্যের জোর সুপারিশে অস্থায়ী নিয়োগ দিতে বাধ্য হই। এসব অনিয়মের ব্যাপারে মুখ খুললে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করা হবে, এ ভয়ে কিছু বলতে পারিনি।’

এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত