Ajker Patrika

মমেক হাসপাতালে চুরির মহোৎসব

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
মমেক হাসপাতালে চুরির মহোৎসব

ময়মনসিংহের ত্রিশালের বালিপাড়া থেকে পেট ব্যথা নিয়ে গত (২৯ অক্টোবর) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন রইছ উদ্দিন। তাকে দেখভালের জন্য সঙ্গে থাকা স্ত্রী হাফিজা আক্তার (৩৭) ওয়ার্ডটির নিচ তলায় গোসল করতে গেলে সঙ্গে নিয়ে যান নিজের ভ্যানিটি ব্যাগ। কিন্তু চোখের পলকেই মোবাইল ও নগদ টাকা থাকা ব্যাগটি চুরি হয়ে যায়। ঘটনাটি গত ৩১ অক্টোবরের। 

হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দার মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন শম্ভুগঞ্জ এলাকার আব্দুল হালিম। একই দিনে তাঁর পাশের বিছানার এক রোগীর মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তিনি খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি আর ফেরত পাননি।

মোবাইল ফোন বা স্বর্ণালংকার চুরির এমন ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘটছে। 

আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এই চিত্রটি একদিনের নয়, নিত্যকার। মূলত হাসপাতালের অতিরিক্ত রোগীর চাপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সামাল দিতে না পারায় স্বজনের বেশে উৎপেতে থাকা সংঘবদ্ধ চোর সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল ফোন, নগদ টাকাসহ দামি স্বর্ণালংকার। গত ছয় মাসে এমন শতাধিক ঘটনা ঘটলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশির ভাগ চুরির ঘটনারই কোনো কিনারা করতে পারেনি। ফলে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের জন্য উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই চোর সিন্ডিকেট। 

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বিষয়টিকে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত চুরির ঠেকাতে তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে বাড়তি নজর দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) জুলহাস উদ্দিন বলেন, নেশাগ্রস্তরা রোগীর স্বজন হিসেবে হাসপাতালে প্রবেশ করে মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। গত এক মাসে ১০ থেকে ১২টি চুরির ঘটনা ঘটলেও দুইটি ঘটনার মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। অনেকে চোর ধরে মারধর করে ছেড়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পুলিশের করার কিছু থাকে না।

জানা যায়, বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ছাড়াও আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি জেলার রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন সেবা নিতে। চিকিৎসার মান ভালো হওয়ায় সম্প্রতি রোগীর চাপ বেড়েছে হাসপাতালে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে বারান্দার মেঝেতেও ঠাঁই হচ্ছে না। এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯০০ জনের মতো। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছে চোরের দল।

হাসপাতালে চুরির হিড়িকের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী বলেন, অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণেই কিছু চুরির ঘটনা ঘটছে। সবাইকে বলা আছে মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখার জন্য। তারপরেও যদি চুরির ঘটনা ঘটে আমাদের করার কিছু থাকে না। তবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে বলা হবে নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্য। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত