Ajker Patrika

চরাঞ্চলে চিকিৎসক সংকট: রোগী দেখেন ফার্মাসিস্টনার্স-স্টাফরা, স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • সেবাবঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ
  • রোগের কথা শুনে প্যারাসিটামল, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হয়
  • ৪৬ জনের জনবলকাঠামো গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ
ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ 
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১: ১০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেড় যুগেও পূর্ণতা পায়নি বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত ময়মনসিংহের চরাঞ্চল ২০ শয্যার হাসপাতাল। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে চরাঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ। হাসপাতালের কমপ্লেক্স ও স্টাফদের আবাসন ভবন থাকলেও নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল। অধিকাংশ সময়ই চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন ফার্মাসিস্ট, নার্স ও স্টাফরা। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরঘেঁষা চরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাতের শাসনামলে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার পরানগঞ্জে ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। হাসপাতালটি উদ্বোধনের পরপরই ক্ষমতা হারায় বিএনপি। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও ২০ শয্যার এ হাসপাতালে নিয়োগ হয়নি প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল।

অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি সরকারের আমলে হাসপাতালে বরাদ্দকৃত শয্যা, এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম নিজ এলাকা গৌরীপুরে নিয়ে যান আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান। স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপি সরকার হাসপাতাল ভবনসহ চিকিৎসক ও স্টাফদের বেশ কয়েকটি আবাসন ভবন নির্মাণ করে গেলেও বিগত ১৮ বছরে হাসপাতালটি চালু করেনি আওয়ামী লীগ সরকার।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেবা নিতে লাইনে ১৫০-২০০ জন দাঁড়িয়ে আছে। তিনজন চিকিৎসক থাকলেও এদিন কেউ কর্মস্থলে যাননি। একজন ফার্মাসিস্ট ও নার্স রোগীদের কাছ থেকে রোগের বর্ণনা শুনে প্যারাসিটামল আর মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট দিচ্ছেন। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায়ই চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন ফার্মাসিস্ট ও নার্স। এতে রোগীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে।

সেবা নিতে আসা বোররচর ভাটিপাড়া গ্রামের আবু হানিফা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগছি। এখানে আসার পর তারা আমাকে এক পাতা ট্যাবলেট দিয়েছে। তা খেলে নাকি ভালো হয়ে যাব।’

বীর বওলা গ্রামের মো. হানিফ বলেন, ‘আমার গলাব্যথা; তাই এসেছিলাম হাসপাতালে। কিন্তু এসে কোনো ডাক্তার পাইনি।

যাঁরা আছেন, তাঁরাই আমাকে দেখে গলাব্যথার জন্য নাপা ট্যাবলেট দিয়েছেন।’

গোলাম আব্বাস বাবুল নামের স্থানীয় সাবেক এক ইউপি সদস্য বলেন, ‘বিএনপির আমলে হাসপাতালটি নির্মাণ হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। এ কারণে এই অঞ্চলের দুই লক্ষাধিক মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সেবাবঞ্চিত হয়েছে। তারা হাসপাতালটির বেডসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদিও অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। আমরা এখন চাই, এই অঞ্চলের মানুষের সেবা নিশ্চিতের স্বার্থে পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটি চালু হোক।’

আলী আজগর নামের স্থানীয় আরেকজন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিহিংসার জন্য হাসপাতালটি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। তিনজন চিকিৎসক থাকলেও প্রায় সময়ই তাঁরা আসেন না। রোগীদের সেবা দেন স্টাফরা। এতে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। বিশেষ করে এই এলাকা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু হলে গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক সুবিধা হতো। আমরা চাই, জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠানটি চালু হোক।’

তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে, আরেকজন ছুটিতে এবং অন্যজন প্রশিক্ষণে থাকায় রোগীদের কাছ থেকে রোগের কথা শুনে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির ফার্মাসিস্ট মিন্টু দে। তিনি বলেন, ‘টিকিটের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০০-২৫০ জন সেবা নেন। চিকিৎসকেরা না আসায় রোগের কথা শুনে প্যারাসিটামল, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে। এতে করে রোগীরা কোনো সমস্যায় পড়বে না।’

সিনিয়র স্টাফ নার্স রেখা খাতুন বলেন, ‘জনবলসংকটের কারণে আমরা প্রায়ই নিজেরা ওষুধ দিয়ে থাকি। রোগীরা আমাদের কাছে তাদের সমস্যার কথা বললে আমাদের বুঝে ওষুধ দিতে কোনো সমস্যা হয় না।’

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহজাহান কবির জানান, হাসপাতালটিতে ২৩ জনের জনবল চাহিদা থাকলেও ১৩ জনের পদ শূন্য রয়েছে। জনবলসংকটের কারণে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালটি চালু করতে ৪৬ জনের জনবলকাঠামো গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। নিয়োগকাজ সম্পন্ন হলে চরাঞ্চলের মানুষের শতভাগ সেবা নিশ্চিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবার বঁটির আঘাতে মেয়ে খুন

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে এক বাবার বঁটির আঘাতে তাঁর মেয়ে খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের কুড়িশাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মেয়ের নাম পূর্ণিমা রানী দাশ (২২)। অভিযুক্ত বাবার নাম মতি লাল দাশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে পূর্ণিমা রানী স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি কুড়িশাইলে আসেন। স্বামীর বাড়িতে থাকার সময় মোবাইল ফোনে অন্য পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সন্দেহজনক চলাফেরার অভিযোগে দাম্পত্যসম্পর্কে ভাঙন ধরে। পিত্রালয়ে ফিরে আসার পরও পূর্ণিমা বিভিন্ন সময় মোবাইলে কথা বলতেন এবং সম্প্রতি এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে ঢাকায় পালিয়ে যান। পরে পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এ ঘটনার পর থেকে পরিবারটিকে স্থানীয় বাসিন্দারা কটু মন্তব্য করতে থাকেন। এসব মন্তব্যে মানসিকভাবে চাপে পড়েন পূর্ণিমার বাবা মতি লাল দাশ। আজ দুপুরে এমন পরিস্থিতিতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুমন্ত মেয়ের মাথায় বঁটি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় মতি লাল নিজেই গ্রাম পুলিশসহ মেয়েকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পূর্ণিমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং অভিযুক্ত পিতা মতি লাল দাশকে আটক করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মতি লাল মেয়ের আচরণ ও প্রতিবেশীদের কটু মন্তব্যে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ক্ষোভ ও লজ্জা থেকে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। নিহত মেয়েটির মা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার প্রস্তুত: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

চরফ্যাশন সংবাদদাতাভোলা প্রতিনিধি
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য এখন স্পষ্ট। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার প্রস্তুত। আর নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। সেখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকার শুধু সহযোগিতা করবে।

‎আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক জনগণের স্বার্থে কাজ করা। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার সঙ্গে চরফ্যাশনের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। এখানকার মানুষের নৌপথের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বেতুয়া নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এমন টার্মিনাল ভবন বাংলাদেশের কোথাও আমার চোখে পড়েনি। টার্মিনালটি আপনাদের, এটাকে সুন্দর রাখার দায়িত্বও আপনাদের। এ দেশের ঐতিহ্য রক্ষার্থে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পুনরায় চালু করেছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, এই প্যাডেল স্টিমার ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলবে। তবে সপ্তাহে এক দিন ঢাকা-ভোলা নৌপথে চলবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এমাদুল হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (চরফ্যাশন সার্কেল) মেহেদী হাসান প্রমুখ। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

‎পরে বিকেল ৪টার দিকে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নের গাছীর খাল লঞ্চঘাটে নবনির্মিত পল্টুনের উদ্বোধন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমনখেতে ইঁদুরের উপদ্রব, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
ধানখেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধানখেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মাঠে মাঠে আমন ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। কিন্তু ধানখেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। প্রতিনিয়ত ধানগাছ কেটে নষ্ট করে ফেলছে ইঁদুর। ইঁদুরনিধনে ফাঁদ পাতলেও তাতে সমস্যা কমছে না। ইঁদুরের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৯০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা ইঁদুরের উপদ্রব থেকে ধান রক্ষা করতে খেতের মধ্যে বাঁশের কঞ্চি গেড়ে তাতে পলিথিন টাঙিয়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার খেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরি করে রেখেছেন।

সাহেবগঞ্জ গ্রামের চাষি নুর মোহাম্মদ জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। এখন ধানের শীষ বের হচ্ছে। এই অবস্থায় খেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। ওষুধ ছিটিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। এখন তিনি খেতের মধ্যে পলিথিন বেঁধে দিয়েছেন। বাতাসে পলিথিন উড়লে শব্দ হয়। আর সেই শব্দ শুনে ইঁদুর পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নুরুল আমিন, মনা মিয়াসহ আরও বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ধানখেতে ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়েছেন, তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। খেতের ধানগাছ ইঁদুর কেটে ফেলছে। স্প্রে করে ও ওষুধ দিয়ে উপকার মিলছে না। ইঁদুরের উপদ্রব কমছে না। কেউ কেউ খেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ তৈরি করে রেখেছেন। তবুও ইঁদুরের উৎপাত কমছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, ইঁদুরনিধনে বিষ, টোপসহ বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইঁদুর তাড়ানোর জন্য কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মোতাবেক কাজ করলে ইঁদুর নিধন করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নভেম্বর থেকে আমন সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে: খাদ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী মধ্য নভেম্বর থেকে সরকারের খাদ্যগুদামের জন্য আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেছেন, দেশের খাদ্যভান্ডার রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল। চলতি মৌসুমেও আমনের ফলন ভালো হবে। চাল সংগ্রহে এবার মানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আজ সোমবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে বিভাগের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং আসন্ন মৌসুমে আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে খাদ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘কৃষকের উৎপাদন খরচ ও লাভ বিবেচনা করে আমন ক্রয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। কৃষকদের স্বার্থে সরকার কৃষিতে নিয়মিত ভর্তুকি দিয়ে আসছে। এই আমন সংগ্রহ অভিযান কীভাবে সফল করা যায়, তা নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সুবিধা-অসুবিধা চিহ্নিত করা হয়েছে।’

উপদেষ্টা বলেন, সরকার খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা বজায় থাকবে।

সরকারের খাদ্য মজুত সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে। এ সময় পর্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত অতীতের তুলনায় বেশি থাকবে। কিছু চাল আমদানি করতে হতে পারে। তবে আগের বছরের তুলনায় তা অনেক কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টন চাল আমদানি করা লাগবে।’

এর আগে মতবিনিময় সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদসহ বিভাগের আট জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকেরা অংশ নেন। সভায় আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, তা বাস্তবায়ন এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত