Ajker Patrika

মায়ের জন্য পান কিনতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ০৪
মায়ের জন্য পান কিনতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত

শেরপুরের শ্রীবরদীতে ধানখেত থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জসিম (১৩) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাঁসধরা গ্রামের একটি ধানখেত থেকে জসিমের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানা-পুলিশ। নিহত জসিম উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের হাঁসধরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত গোলাপ মিয়ার ছেলে। সে হাঁসধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

নিহত শিশুর মা জবেদা বেগম বলেন, ‘আমি গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জসিমকে বাজার থেকে একটি পান কিনে আনতে বলি। সে আমার আরেক ছেলে রুবেল মিয়ার অটোরিকশা ভ্যান নিয়ে ভায়াডাঙ্গা বাজারে যায়। তার পর থেকে জসিমকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধানখেত থেকে জসিমের লাশ পাওয়া যায়। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।’ 

নিহত জসিমের বড় ভাই রুবেল মিয়া বলেন, ‘‘আমার মা জসিমকে পান কেনার কথা বললে। সে আমার কাছ থেকে ভ্যান নিয়ে ভায়াডাঙ্গা বাজারে যায়। রাত আটটা বেজে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় আমরা তাকে খুঁজাখুঁজি করতে থাকি। পরে জানতে পারি যে শ্রীবরদী বাজারে একজন লোককে ভ্যানগাড়িসহ চোর সন্দেহে আটক করা হয়েছে। পরে আমি ও আমার বড় ভাই জুয়েল শ্রীবরদী উত্তর বাজারস্থ আরাফাত ডেকোরেটর অ্যান্ড মাইক সার্ভিস এসে আমার ভ্যানগাড়টি দেখতে পাই। 

‘পরে আটক মো. মাসুদ মিয়ার কাছে আমার ছোট ভাই জসিমের বিষয়ে জানতে চাইলে সে আবল-তাবল বকতে থাকে। তখন স্থানীয়রা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিলভরট গ্রামের মো. নয়বর মিয়া আমার ছোট ভাইয়ের লাশ দেখে চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করি। মাসুদসহ কয়েকজন আমার ভাইকে ফুসলিয়ে বিলভরাট নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’ 

আরাফাত ডেকরেটর মালিক মো. মিল্টন মিয়া বলেন, ‘ভ্যানটি নিয়ে আমার কাছে বিক্রির জন্য আসে। গাড়িটির নতুন তবুও ১৫ টাকা দাম চায়। এতে আমার সন্দেহ হয়। তখন আমি তাকে আটক করে স্থানীয়দের ডাকি। স্থানীয়রা এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে সে চুরির কথা স্বীকার করে। পড়ে আমরা পুলিশকে সংবাদ দিই। এ সময় প্রকৃত ভ্যানের মালিক রুবেল মিয়াও আসেন। ভ্যানসহ মাসুদকে থানায় সোপর্দ করা হয়। আজ সকালে শুনতে পাই জসিমের লাশ উদ্ধার হয়েছে।’

শ্রীবরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এবং বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাসুদ জসিমকে হত্যা করে ভ্যানটি বিক্রির চেষ্টা করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করা হবে। 

শ্রীবরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, জসিমের গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত জসিমের বড় ভাই রুবেল মিয়া বাদী হয়ে মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা দু-তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। পুলিশ গুরুত্বসহকারে মামলাটি তদন্ত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত