Ajker Patrika

এনজিওর ঋণের চাপে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেন আলী: পুলিশ 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
এনজিওর ঋণের চাপে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেন আলী: পুলিশ 

ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় স্বামী আলী হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেপ্তার আলী হোসেন হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।  

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর পৌনে ৩টায় জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেন। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আলী হোসেন ২০১২ সালে দায়ের হওয়া আরও একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় তিনি টানা পাঁচ বছর কারাভোগ করে ২০১৭ সালের আগস্টে জামিনে মুক্তিলাভ করেন। এরপর তিনি ২০১৯ সালে তাঁর আপন মামাতো বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করে দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। এরই মাঝে তাঁদের সংসারে আবু বক্কর সিদ্দিক ও আনাছ নামে দুটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ফলে তাঁর চার সদস্যের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। 

এ কারণে সম্প্রতি তিনি একটি এনজিও থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ওই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই তাঁদের অপমান করা হতো। এতে হতাশ হয়ে আলী হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই মাঝে গত ১৬ মে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে গভীর রাতে স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন আলী হোসেন। এরপর মৃত স্ত্রীর ওড়না দিয়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে গর্ত করে মাটিতে পুতে রেখে পালিয়ে যান। 

এ ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন গত ২২ মে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এরপর গতকাল ২২ মে বিকেলে গাজিপুর জেলার শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। 

এর আগে, গত ২১ মে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে একটি ধানের খেতে কুকুর শিয়ালের টানাহেঁচড়ায় এক নারী ও দুই শিশুকে মাটি খুঁড়ে পুতে রাখার ঘটনার সন্ধান পায় এলাকাবাসী। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। 

নিহতরা হলেন—ঘাতক আলী হোসেনের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৩০), তার শিশুপুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও আনাছ (২)।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাইমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফাল্গুনী নন্দী, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেনসহ এই গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবি পুলিশের সদস্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত