Ajker Patrika

ভিক্ষুক যখন চেয়ারম্যান প্রার্থী

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ০৮: ২৭
ভিক্ষুক যখন চেয়ারম্যান প্রার্থী

আবুল মুনসুর ফকির (৭০) থাকেন মহাসড়কের পাশে খালের ওপর মাচা তৈরি করে। মানুষের দেওয়া দানে চলে তাঁর জীবনযাপন। এমন পরিস্থিতিতেই ভেবেছেন জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করবেন। ত্রিশালের ২ নম্বর বৈলর ইউনিয়নের এবারের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনি। চার ছেলে এক মেয়ের এই জনক এখন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন এলাকায়। নিজের চশমা প্রতীকের পোস্টার নিজেই সাঁটাচ্ছেন ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে। এ কাজে তাঁকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কিছু এলাকাবাসী। ভিক্ষাবৃত্তি করায় নামের শেষে উপাধি স্বরূপ লাগিয়েছেন ফকির।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এক হাতে পোস্টারের ব্যাগ আরেক হাতে আঠার বালতি নিয়ে এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাই নিজের পোস্টার সাঁটাচ্ছেন আবুল মুনসুর ফকির।

ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া মহল্লা বাড়ি-বাড়ি, হাটে-বাজারে একাই ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।  আবুল মুনসুর ফকিরের প্রতীক চশমা। টাকা নেই তাই এটাকে পাগলামি ভেবে নিজের সন্তান ও আত্মীয়রা পাশে থাকছেন না ।

এই বিষয়টাকে স্থানীয়রা নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন।

২নম্বর বৈলর ইউনিয়নের ভরাডোবা গ্রামের বাসিন্দা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, আবুল মুনসুর ফকিরের ইচ্ছা তিনি জনগণের সেবা করবেন। এই বিষয়গুলো বহুদিন থেকেই তিনি মানুষের কাছে বলাবলি করছিল। আমরা স্থানীয়রা এই আগ্রহ দেখে তাঁকে উৎসাহ দিই। চশমা প্রতীক পেয়ে উনিও মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

বৈলর বড় পুকুর পাড়ের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আমরা স্থানীয়রা টাকা তুলে পোস্টার করে দিয়েছি। জনগণকে বুট, মুড়ি আমরা টাকা তুলে খাওয়াচ্ছি। শুনেছি উনি ওনার একটি কার্ডের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন। উনাকে কার্ড করে দেননি ওই চেয়ারম্যান। তখনই উনি নিয়ত করেছিলেন উনি জনপ্রতিনিধি হবেন।

বৈলর ভরাডোবা গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহিন মিয়া বলেন, আমরা এর আগে অনেক লোককে ভোট দিয়েছি। এলাকার তেমন কোনো কাজ হয়নি। এবার ফকিরকে ভোট দিয়ে দেখি কি হয়। এটা আমাদের মনের একটা তৃপ্তি। উনি ফকির হলেও সবার সঙ্গে কথাবার্তায়, আচার আচরণে অনেক ভালো।

 সাজ্জাত নামে একজন বলেন, অনেকের কাছে এটা পাগলামি মনে হতে পারে। শোনা যায়, একটা বিশেষ দলীয় প্রতীক পেতে কোটি টাকাও ঘুষ লেনদেন হয়। নির্বাচনী খরচ তো কথাই নাই। টাকার ছড়াছড়ি। কথিত ওই সব সমাজসেবকদের কারণে যেখানে যুবসমাজ ধ্বংসপ্রায়, সেখানে আবুল মুনসুর ফকিরের দৃঢ়তা থেকে একটা বিষয় শিক্ষণীয়। সেটা হলো, জনগণের কাছে যেতে একাও কম নয়। টাকা নয়, ইচ্ছাশক্তি দরকার।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবুল মুনসুর ফকির বলেন, আমি ভোটের জন্য জনগণের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। জনগণ ভালোই সাড়া দিচ্ছে। আমি জয়ী হতে পারলে জনগণকে কোনো টাকা,পয়সা ছাড়ায় বিভিন্ন কার্ড করে দেব। গরিব গরিবের দুঃখ বুঝে। আমিও গরিবের পাশে থাকতে চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত