Ajker Patrika

বৃষ্টিতে গাংনীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

রাকিবুল ইসলাম (গাংনী) মেহেরপুর
গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনীতে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব‍্যাহত হচ্ছে পাঠদান। প্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি থইথই করছে। প্রবেশপথসহ খেলার মাঠগুলো পানিতে টইটম্বুর। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এসব প্রতিষ্ঠানে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া হয় না স্থায়ী কোনো সমাধান। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ আর কষ্ট নিয়েই ক্লাসরুমে যেতে হয়।

স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টিতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পানি জমে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট করেই ক্লাসরুমে যেতে হয়। অনেকে আবার পড়েও যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাঁটুপানিতে বই-খাতা নিয়ে শ্রেণিকক্ষ পর্যন্ত পৌঁছাতে ভিজে যায় পোশাক। আর পড়ে গেলে বইগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভিজে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় ছোট ছোট শিশুদের। তারা বলে, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার জন্য।’

কাজীপুর গ্রামের রোজিফা খাতুন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আছে। এতে একদিকে যেমন চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, অন্যদিকে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে সময় পার করেন অভিভাবকেরা। অনেক সময় বিদ্যালয় ছোটখাটো গর্ত থাকলে ছোট শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকে। তাই অতি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর করার জোর দাবি জানাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।’

বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী কাজল আহমেদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে জলাবদ্ধতা। এটা বামন্দী এলাকার একটি জনপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠ। কিন্তু দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে কোনো খেলাই এখানে হয় না। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। পাইপ দিয়ে পানি বাইরে বের করে দিচ্ছে, কিন্তু আমরা চাই স্থায়ী সমাধান।’

আরেক শিক্ষার্থীর নাহিয়ান হোসেন বলে, ‘স্কুলে জলাবদ্ধতার কারণে আমরা খেলা করতে পারছি না। একঘেয়ে ক্লাস করতেও ভালো লাগছে না। তাই এর একটা সুষ্ঠু সমাধান দরকার।’

কাজীপুর মধ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিদা হাসান বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে পানি নিষ্কাশন করা দরকার। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল সাজেদুর রহমান স্বপন বলেন, ‘আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে অনেক পানি জমে যায়। আমরা উদ্যোগ নিয়ে কিছুটা জলাবদ্ধতা কমিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। এর একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। আমরা এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো অনুদান পাইনি। আর জেলা পরিষদ থেকে যে অনুদান দেওয়ার কথা রয়েছে, সেটাও এখনো হাতে পাইনি। তা ছাড়া বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলাম (অ. দা.) বলেন, ‘বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এটা নিরসনের জন্য আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টা নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ করছি। প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সংগ্রহ করছি। জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে জলাবদ্ধতার কথা শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত