Ajker Patrika

প্রশ্ন ফাঁস করে বাগানবাড়ি বানিয়েছেন অসীম, ব্যাংকেও আছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর
আপডেট : ১০ মে ২০২৪, ২০: ৪৭
প্রশ্ন ফাঁস করে বাগানবাড়ি বানিয়েছেন অসীম, ব্যাংকেও আছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের কলাবাড়ি গ্রামের অসীম গাইন বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর বিক্রি করে হয়েছেন কোটিপতি। গড়ে তুলেছে বাগানবাড়ি। কিনেছেন বহু জমি। ব্যাংকেও আছে বহু টাকা। 

বাবা দরিদ্র কৃষক হলেও মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে তিনি এই সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এদিকে অসীম গাইন হঠাৎ এত সম্পত্তির মালিক হওয়ায় দুদক অনুসন্ধানে নেমেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের কলাবাড়ি গ্রামের মৃত ফটিক চন্দ্র গাইনের ছেলে অসীম গাইন (৪৮)। বাবা ছিলেন দরিদ্র কৃষক। দিন আনে দিন খান, এমনভাবেই চলত তাঁদের সংসার। গ্রামে তিনি ডিশ ব্যবসা করতেন। মাঝে মাঝে দালালদের মাধ্যমে বিদেশে লোকও পাঠাতেন অসীম গাইন। 

অসীমের পৈতৃক বাড়ি। ছবি: সংগৃহীতকখনো কখনো গরু কেনাবেচাও করতেন। সেই অসীম গাইন মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে বহু সম্পত্তির মালিক হন। পুরোনো একটি টিনের ঘরের পরিবর্তে নির্মাণ করেছেন দালানঘর। ২০ শতাংশ জমির ওপর অনেকটাই বাগানবাড়ির মত করে গড়ে তুলেছেন বাড়ি। ব্যাংকে আছে বহু টাকা। নিজ গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে বহু জমিও কিনেছেন তিনি। এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় মামলার পর থেকে অসীম গাইন ও তাঁর স্ত্রী রিক্তা গাইন পলাতক আছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৯ মার্চ মাদারীপুরের ১৮টি কেন্দ্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেই পরীক্ষায় অর্থের বিনিময়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহ করে একটি চক্র। 

এ সময় পুলিশ ৮ জনকে আটক করে। এ ছাড়া ইলেকট্রিক ডিভাইস ও একাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে এই ঘটনার পরদিন ৩০ মার্চ মাদারীপুর সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী রেজাউল করিম বাদী হয়ে অসীম গাইনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন। 

পরে অভিযান চালিয়ে অসীম গাইনের সহযোগী রনি বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত পলাতক অসীম গাইনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেননি। 

অসীমের তৈরি নতুন ভবন। ছবি: সংগৃহীতএ দিকে অসীম গাইনের ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা, আলিশান বাড়ি নির্মাণসহ বহু সম্পত্তির মালিক হওয়ার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পায় দুদক। এরপর থেকে দুদক অনুসন্ধানে নেমেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, অসীম গাইন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসহ সরকারি চাকরি নিয়োগ অনেক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। একসেট প্রশ্ন উত্তরসহ দেওয়ার শর্তে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিতেন। মোবাইল ফোনে মেসেজ ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে উত্তর পাঠিয়ে দিতেন। সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছেন গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের বহু প্রার্থীর কাছ থেকে। 

অসীমের তৈরি নতুন ভবন। ছবি: সংগৃহীতএভাবেই কয়েক বছরেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন অসীম গাইন। টিনের ঘরের পরিবর্তে দালান নির্মাণ করেছেন। বাড়ির আশেপাশেসহ বিভিন্ন গ্রামে নিজ নামে ও তাঁর পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে একশ বিঘারও বেশি জমি কিনেছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় মামলার পর থেকে সে বাড়িতে থাকেন না। পালিয়ে আছেন। সম্ভবত তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। 

অসীম গাইনের বৌদি গৌরি দে বলেন, ‘অসীম গাইনের পারিবারিকভাবে কয়েক বিঘা জমিজমা আছে। তাছাড়া সে দীর্ঘদিন ধরে ডিশলাইন ও ইন্টারনেট ব্যবসা করেন। এ ছাড়া গরু বেচা-কেনাও করতেন। এইসব ব্যবসার আয়ের টাকা দিয়েই সে বাড়ি বানিয়েছেন। সে নির্দোষ। সে কোনো অন্যায় করেনি। তার বিরুদ্ধে একটি চক্র মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন।’ 

অসীমের তৈরি নতুন ভবন। ছবি: সংগৃহীতদুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘অসীম গাইনের বিরুদ্ধে মাদারীপুর ও ঢাকায় একাধিক মামলা আছে। তা ছাড়া বিভিন্ন মিডিয়াতে এ ব্যাপারে সংবাদ প্রচার হয়েছে। সেই সংবাদের কপিও সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদারীপুর দুদক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগও পাওয়া গেছে। তাই ইতিমধ্যেই অসীম গাইনের হঠাৎ সম্পদ অর্জনের কারণ অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রধান কার্যালয় থেকে নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাসুদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার কাজের সঙ্গে অসীম গাইন ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও জড়িত আছে। অসীম ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে লাখ লাখ টাকার চুক্তি করেন। পরে তাঁর অন্য সহযোগীদের নিয়ে উত্তরপত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরবরাহ করেন। পুরো ঘটনা জেলার গোয়েন্দা পুলিশ নজরদারি রেখেছেন। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তও করছে। দ্রুত প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহের ঘটনায় মামলার চার্জশিট আদালতে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত অসীম গাইন, তা নিশ্চিত হয়েছে জেলা পুলিশ। এ ছাড়া এটা নিয়ে ঢাকা থেকে আলাদাভাবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।’ 

অসীমের তৈরি নতুন ভবনের গেট। ছবি: সংগৃহীতমাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে পুলিশ ও দুদককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ ছাড় পাবে না। দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাউজানে সিএনজি-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষ, সবজি ব্যবসায়ী নিহত; আহত ৩

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাজিম উদ্দীন (৪০) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের অদুদিয়া সড়কের আতুন্নিরঘাটা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাজিম উদ্দীন চিকদাইর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রমজান আলী তালুকদার বাড়ির মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহর থেকে মুরগির বাচ্চাবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান আসার সময় নতুন হাট থেকে ছেড়ে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং কাভার্ড ভ্যানটি সড়ক থেকে ছিটকে ধানখেতে পড়ে যায়।

এতে সিএনজিতে থাকা যাত্রী নাজিম উদ্দীন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত নাজিমের সঙ্গে থাকা মানিক নামের এক যুবক জানান, নাজিম উদ্দীন ভোরে সবজি কেনার জন্য নতুন হাট থেকে অটোরিকশায় করে চট্টগ্রাম নগরীতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কাভার্ড ভ্যানটি রং সাইডে এসে অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। নিহত নাজিম উদ্দীন চার কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পর রাউজান থানা-পুলিশ গাড়ি দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আবু হানিফ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার শাহাদাত হোসেন। নিহত আবু হানিফ (৩০) পেশায় নিরাপত্তাপ্রহরী। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, দুপুরে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক মারধর করেন। বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় তাঁকে মারধর করা হয়।

নিহত ব্যক্তির মেজ বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইয়েরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তা-ও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে, সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে, কবে তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়া যায়। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীরে (হানিফ) ভেতরে বসায়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই।’

হানিফ খানপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছেন বলে জানান নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ছেলে অপরাধ করলে তারে শাস্তি দিব আইনে। কিন্তু তারে মাইরা ফেলল কোন যুক্তিতে! আমি এর বিচার চাই।’

এই ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার কোনো অভিযোগ আগে আমাদের থানায় কেউ করেনি। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পায়। ধর্ষণের আসলেই কোনো চেষ্টা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জবি ছাত্রদল নেতা হত্যা: বড় ভাইয়ের মামলা, আসামি মাহিরসহ ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো. জুবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে বংশাল থানায় মামলা করেন জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত। সকালে আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানান লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী।

ডিসি মল্লিক আহসান বলেন, ছাত্রদলের নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় তাঁর বড় ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে মাহিরসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলা এলাকায় টিউশনি করতে গিয়ে খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। তিনি এক বছর ধরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামে একটি বাড়িতে এক ছাত্রীকে (এইচএসসি শিক্ষার্থী) পড়াতেন। ওই বাড়ির সিঁড়িতেই তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে রৌশান ভিলার সিঁড়িতে জোবায়েদের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রৌশান ভিলা থেকে ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের ১৫ তম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বাসার সামনে জড়ো হন জোবায়েদের সহপাঠী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে: শামীম বিন সাঈদী

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
আজ সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন শামীম বিন সাঈদী। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন শামীম বিন সাঈদী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পিরোজপুর-২ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী।

শামীম বিন সাঈদী বলেন, ‘আমরা পূর্ব থেকেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। তবে যেহেতু এটি প্রথমবার, আমার মনে হয় প্রাথমিকভাবে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে।’ মঙ্গলবার সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে শামীম বিন সাঈদী বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের নেছারাবাদ, ভান্ডারিয়া ও ইন্দুরকানি থেকে কিছু লোককে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে শুনছি। তবে সাদাপোশাকে এসে কাউকে তুলে নেওয়া আমি সমর্থন করি না। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে পরিচয় প্রকাশ করে এবং নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা উচিত। গ্রেপ্তারের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর অপরাধ সম্পর্কে অবহিত করা প্রয়োজন। নিরীহ ও নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হলে তা আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করব না।’

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ) আসনে এখনো বিএনপি কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। ফলে এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী এককভাবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং নিয়মিতভাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তিনি নেছারাবাদে গণসংযোগে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত