Ajker Patrika

১০ হাজার দিলে ১ লাখ টাকা ঋণ, কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও 

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মে ২০২৩, ১৯: ৪৯
১০ হাজার দিলে ১ লাখ টাকা ঋণ, কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও 

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে দেড় শতাধিক ব্যক্তির থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মানবকল্যাণ সংস্থা (এমকেএস) নামের একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। গত ১৫ দিনে এসব টাকা তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভুগীরা। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০-৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত মানবকল্যাণ সংস্থার (এমকেএস) সরকারি রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর এ-১১৫৭০ (৭৮৫)। প্রশিক্ষণ ও মানবকল্যাণ কেন্দ্র নাম দিয়ে রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের শেখপুরা বাজারের দক্ষিণে একটি নির্জন মার্কেটে তাঁদের কার্যালয় রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংস্থাটির শেখপুরা প্রকল্প কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভুগীরা ভিড় করছিলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ দিন আগে ৪-৫ জন পুরুষ ও এক মহিলা এসে তাঁদের সন্তানদের বিদেশ যেতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলেন। এর জন্য প্রথমে তাঁদের সংস্থায় সপ্তাহে ২০০ টাকা জমার একটি সঞ্চয়পত্র খুলতে বলেন। 

সঞ্চয়পত্র খোলার পর যাঁরা তাঁদের থেকে ঋণ নিতে ইচ্ছুক তাঁদের প্রতি লাখের জন্য ১০ হাজার করে টাকা জমা দিতে বলেন। এতে বিশ্বাস করে ও লোভে পড়ে ১০০-১৫০ জন ব্যক্তি ১০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা জমা দেন। গতকাল সোমবার তাঁদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। টাকা জমা দেওয়া ব্যক্তিরা সোমবার সংস্থাটির কার্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান তালা দেওয়া। কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। 

 লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মানবকল্যাণ সংস্থার (এমকেএস) সঞ্চয়পত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা এমকেএস সংস্থায় টাকা জমা দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কাওয়ালিডাঙ্গা ডেঙ্গুর বাড়ির ফাতেমা বেগম (২০ হাজার), ফাতেমা বেগম (৩০ হাজার), মোহন আলম (১৫ হাজার), পশ্চিমবিঘা গোদার বাড়ির জান্নাতুল ফেরদৌস (৪০ হাজার), একই বাড়ির শিল্পী আক্তার (২০ হাজার), পূর্ব বিঘা জগি বাড়ির আমেনা বেগম (২০ হাজার), শামছুর নাহার (২০ হাজার), পূর্ব বিঘা খন্দকার বাড়ির মমিন হোসেন (২৯ হাজার), সাথি আক্তারের (১২ হাজার), জলিল মিয়া (৩০ হাজার), ফাতেমা আক্তার (১৫ হাজার), পূর্ব শেখপুরা সৈয়দ আলী ব্যাপারী বাড়ির মোরশেদ আলম সোহাগ (১৮ হাজার), নোয়াগাঁও গ্রামের মালেক হাজী বাড়ির মো. আল আমিন (৪০ হাজার), সোনাপুর খলিফা বাড়ির জামাল হোসেন (৮ হাজার), পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাফা গ্রামের জয়নাল আবদিন (১৭ হাজার), খলিলুর রহমান (২০ হাজার), তাসলিমা আক্তার (২০ হাজার), মিন্টু মিয়া (৩০ হাজার), রাজিব হোসেন (৩০ হাজার) টাকাসহ দেড় শতাধিক গ্রাহক। 

ভুক্তভুগীরা বলেন, ‘গত ১৫ দিন আগ থেকে আমাদের সবাইকে আজ সোমবার ঋণ দেবে বলে খবর দেওয়া হয়। আমরা অফিসে এসে দেখি অফিসের মেইন গেটে তালা মারা। সংস্থার কর্মকর্তা আতিক স্যার, আছমা ম্যাডামসহ সকলের মোবাইল বন্ধ। আমরা অল্প সুদে এখান থেকে ঋণ পাওয়ার আশায় অন্য সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে টাকা দিয়েছি। এখন আমরা সর্বস্ব হারিয়েছি। আমরা এখন কী করব জানি না, চোখে অন্ধকার দেখছি।’ 

স্থানীয় ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বলেন, ‘এ বাড়িটি একই এলাকার মৃত আবদুল কাদের মিয়ার। তাঁর স্ত্রী ও ছোট একটি মেয়ে ছাড়া পরিবারের আর কেউ নেই। কীভাবে বাড়িটি ওই এনজিও সংস্থা ভাড়া নিয়েছেন আমরা তা জানি না। তবে গত ১৫-২০ দিন আগে লক্ষ্মীপুর থেকে কয়েকজন লোক এসে মালামাল রেখে যান এখানে। তাঁরা পরে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুক্তি করবেন বলে জানালেও এখন তাঁদের সবার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।’ 

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মানবকল্যাণ সংস্থার (এমকেএস) সাইনবোর্ডখবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ময়নাল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলেও এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। তবে সঞ্চয়পত্রে দেওয়া কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর নিয়ে ঘটনা উদ্ঘাটনে চেষ্টা করব।’ 

এ বিষয়ে রামগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ‘এনজিও সংস্থার ব্যাপারে আমাদের কোনো তদারকি নেই। এ ছাড়া এনজিও ব্যুরো ঢাকার মাধ্যমে ঋণদান বা এনজিও সংস্থাগুলো অনুমোদন পায়।’ 

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, ‘এদের লাইসেন্স নম্বরটি ভুয়া হতে পারে। গোপনে অফিস স্থাপন করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে অনেক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। প্রতারকদের শনাক্ত করা না গেলে বা সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জনগণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাড়াশে গরুবোঝাই নছিমনের চাপায় প্রতিবন্ধী যুবক নিহত

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গরুবোঝাই নছিমনের চাপায় হাফিজুর রহমান (৩৭) নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তাড়াশ পৌর সদরের বারোয়ারিতলা মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজুর রহমান তাড়াশ দক্ষিণপাড়ার রবিউল করিমের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাফিজুর রহমান রাস্তা পারাপারের সময় একটি গরুবোঝাই নছিমন গাড়ি তাঁকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নছিমনটি থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ,

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামালপুরে ৩৫ বছরেও হয়নি সেতু, দুই জেলার মানুষের দুর্ভোগ চরমে

জামালপুর প্রতিনিধি 
এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে তৈরি করে বাঁশ ও কাঠের সেতু। সেই সেতু দিয়ে এলাকার মানুষ চলাচল করছে বছরের পর বছর। ছবি: আজকের পত্রিকা
এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে তৈরি করে বাঁশ ও কাঠের সেতু। সেই সেতু দিয়ে এলাকার মানুষ চলাচল করছে বছরের পর বছর। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের মাদারগঞ্জে একটি সেতুর অভাবে ৩৫ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ১৩টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। চলাচল ও কৃষিপণ্য পরিবহনে এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ১৯৯০ সালের এক ভয়াবহ বন্যার পর, যখন যমুনার ভাঙনে গ্রামগুলো উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে নির্মিত নড়বড়ে বাঁশ ও কাঠের সেতুটিই এখন এই এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

১৯৯০ সালের বন্যায় যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে জামালপুরের মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলাসহ ১৩টি গ্রাম উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই ভাঙনে যমুনার শাখা নদী বড় নদীতে পরিণত হয়, যা পারাপারের জন্য কোনো পাকা সেতু নির্মিত হয়নি।

সেতুবিহীন এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলা, নাদাগাড়ী, পশ্চিম সুখনগরী এবং জোড়খালী ইউনিয়নের ফুলজোড়, কাইজের চর, আতামারীর বাসিন্দারা। এ ছাড়া বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষও এই পথে যাতায়াত করে।

নাংলা গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী আলতাফুর রহমান জানান, ১৯৯০ সালের ভাঙনে যমুনার শাখা নদী বড় নদীতে পরিণত হয়। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রম আর চাঁদা তুলে বাঁশ-কাঠের এই সেতু তৈরি করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। চরাঞ্চলের কৃষক ফসল—মরিচ, পেঁয়াজ, আলু, পাট সঠিক দামে বাজারে বিক্রি করতে পারেন না। যোগাযোগব্যবস্থার সমস্যার কারণে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

পশ্চিম সুখনগরী গ্রামের মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘৩৫ বছরেও সেতু হয়নি। মনে হয় মাদারগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকে আমরা বাদ পড়ে যাচ্ছি। সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সাতবার ভোট দিয়েও স্থানীয় এমপির নজরে আসেনি এই দুর্ভোগ। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে, অনেক কোমলমতি শিশু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সেতু পার হতে ভয় পায়।’

নাদাগাড়ী গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, জামালপুরের শেষ সীমান্ত, গাইবান্ধা জেলা এবং বগুড়ার হাজার হাজার মানুষ এই পথ ব্যবহার করে, কিন্তু ৩৫ বছরেও এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়নি, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে বেইলি ব্রিজ করার সুযোগ নেই। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হবে।

এলাকাবাসীর জোর দাবি, দ্রুত একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে দীর্ঘদিনের অসহনীয় দুর্ভোগের অবসান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাউজানে সিএনজি-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষ, সবজি ব্যবসায়ী নিহত; আহত ৩

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজিম উদ্দীন । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাজিম উদ্দীন (৪০) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের অদুদিয়া সড়কের আতুন্নিরঘাটা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাজিম উদ্দীন চিকদাইর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রমজান আলী তালুকদার বাড়ির মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহর থেকে মুরগির বাচ্চাবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান আসার সময় নতুন হাট থেকে ছেড়ে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং কাভার্ড ভ্যানটি সড়ক থেকে ছিটকে ধানখেতে পড়ে যায়।

এতে সিএনজিতে থাকা যাত্রী নাজিম উদ্দীন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত নাজিমের সঙ্গে থাকা মানিক নামের এক যুবক জানান, নাজিম উদ্দীন ভোরে সবজি কেনার জন্য নতুন হাট থেকে অটোরিকশায় করে চট্টগ্রাম নগরীতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কাভার্ড ভ্যানটি রং সাইডে এসে অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। নিহত নাজিম উদ্দীন চার কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পর রাউজান থানা-পুলিশ গাড়ি দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আবু হানিফ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার শাহাদাত হোসেন। নিহত আবু হানিফ (৩০) পেশায় নিরাপত্তাপ্রহরী। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, দুপুরে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক মারধর করেন। বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় তাঁকে মারধর করা হয়।

নিহত ব্যক্তির মেজ বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইয়েরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তা-ও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে, সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে, কবে তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়া যায়। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীরে (হানিফ) ভেতরে বসায়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই।’

হানিফ খানপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছেন বলে জানান নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ছেলে অপরাধ করলে তারে শাস্তি দিব আইনে। কিন্তু তারে মাইরা ফেলল কোন যুক্তিতে! আমি এর বিচার চাই।’

এই ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার কোনো অভিযোগ আগে আমাদের থানায় কেউ করেনি। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পায়। ধর্ষণের আসলেই কোনো চেষ্টা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত