Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত, রাস্তায় দীর্ঘ যানজট

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত, রাস্তায় দীর্ঘ যানজট

নাব্য সংকট ও ফেরি বিকল হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীহাটঘাট থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট। এতে করে দুই পাড়ে আটকা পড়েছে কয়েক শত পণ্যবাহী যানবাহন। দুর্ভোগে পড়েন এই রুটে চলাচলকারী যাত্রী, চালক এবং শ্রমিকেরা। 

গত এক সপ্তাহ ধরে এই সংকট বলে জানিয়েছে চালক ও শ্রমিকেরা। এই নৌরুটে চলাচল করছে ৫টি ফেরি। এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ থেকে কনকচাপা নামে ফেরিটি বিকল। 

গতকাল শুক্রবার সকালে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ভোলার ইলিশা ঘাটে যাওয়ার জন্য মজুচৌধুরীহাটের ফেরিঘাট ও সড়কের ওপর পারাপারের অপেক্ষায় আছে। অপর পারেও একই অবস্থা। 

বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুট দিয়ে যাতায়াত করে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটটি চালু করে সরকার। এখন কলমিলতা, কনকচাপা, কিষানী ও কাবেরীসহ পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। 

এ ছাড়া প্রতিদিন এই ঘাট থেকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে ৮ থেকে ১০টি লঞ্চ ভোলা ও বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

মজুচৌধুহাট ফেরিঘাটের এক কিলোমিটার দূরে রহমতখালী চ্যানেল। সম্প্রতি এই চ্যানেলে জেগে উঠেছে বিশাল এক ডুবোচর। এই নৌ-রুটের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকটি নতুন ডুবোচর জেগে উঠেছে। এসব ডুবোচরের আশপাশের এলাকায় ভাটার সময় থাকে কোমরসমান পানি। এতে করে প্রতিদিন চার থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান ডুবোচরে আটকে থাকে। জোয়ারের সময় নদীতে পানি কিছুটা বাড়ে। তখন ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

ট্রাক চালক রহিম উল্যাহ ও মারফত মিয়া বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে নাব্যতা ও ফেরি সংকটে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় এই নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীদের। সঠিক সময়ে গন্তব্যে ফেরি ও লঞ্চ না পৌঁছায় দুই পারে দিনের পর দিন আটকে থাকতে হয়। এ কারণে ট্রাকের কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটের (বিআইডাব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক মো. কাউছার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। এর মধ্যে একটি ফেরি বিকল রয়েছে। বিকল ফেরিটি মেরামতের কাজ চলছে। পাশাপাশি নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়েই ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। এইদিকে ফেরি সংকট ও নাব্যতার কারনে দুই পাড়ে আটকা পড়েছে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ী-পাবনা সীমান্তবর্তী পাংশা উপজেলার হাবাসপুর খেয়াঘাট এলাকার অদূরে পদ্মার চর থেকে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাতনামা এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, পদ্মায় মাছ ধরার সময় দুপুরে জেলেরা চরে মরদেহটি দেখতে পান। পরে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। মরদেহটি পাবনা জেলার সীমানায় পাওয়ায় পাবনা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দু-এক দিন আগে হত্যার পর লাশ চরে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করা যুবক পালাল পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় গণধোলাইয়ে আহত ছিনতাইকারী এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশকে ছুরিকাঘাত করেছে। তবে ঘটনার পর পুলিশের একাধিক দলের সাঁড়াশি অভিযানে ছুরিকাঘাতকারী ওই যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে পাহারায় নিয়োজিত এক কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ইমাম হোসেন আকাশ (৩০) নামের ওই যুবক। তিনি আনোয়ারার দিঘীরপাড় বরুমছড়া এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং বন্দর এলাকার আজাদ কলোনির বাসিন্দা। পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তাঁর দুই সহযোগীর নাম এখনো জানা যায়নি।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলায়মান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারী ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানায়, চমেক হাসপাতালে পুলিশের পাহারায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিযুক্ত ছিনতাইকারী ইমাম হোসেন আকাশ। ওই দিন রাতে ইমামের সঙ্গে দুজন নারীসহ তিনজন দেখা করতে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইমাম হোসেন রাজু সেখানে দায়িত্বরত একজন কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ওই দিন রাতেই নগর পুলিশের একাধিক টিম ওই ছিনতাইকারীকে ধরতে মাঠে নামে। পরে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকা থেকে তাঁকে দুই সহযোগীসহ আটক করা হয়।

গত মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর সিপিআর ৫ নম্বর গেট-সংলগ্ন ব্রিজের সামনে এক চীনা নাগরিক ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। দুই-তিনজন ছিনতাইকারী ওই চীনা নাগরিককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাঁর সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট, ভিসা, নগদ অর্থ ও নথিপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত জনতা ধাওয়া দিয়ে দুই ছিনতাইকারীদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

বন্দর থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক দুই ছিনতাইকারীদের মধ্যে ইমাম হোসেন আকাশ গুরুতর আহত থাকায় তাঁকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। শাহাদাত হোসেন (২৫) নামের আরেক ছিনতাইকারীকে হাজতে রাখা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘নির্যাতন সইতে না পেরে’ কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন, গৃহবধূর মৃত্যু

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মিতু বেগম। ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মিতু বেগম। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ এক গৃহবধূ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। যৌতুকের জন্য স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মারা যাওয়া নারীর নাম মিতু বেগম (২০)। গায়ে আগুন দেওয়ার পাঁচ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মিতু বেগম ফরিদগঞ্জের উত্তর হাঁসা গ্রামের অটোরিকশাচালক রাকিবের স্ত্রী।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিতু তাঁর স্বামীর বসতঘরে পারিবারিক কলহের জেরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় তাঁর মা পারভীন বেগম ফরিদগঞ্জ থানায় মিতুর স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে যৌতুকের জন্য চাপ ও নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়।

পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর আগে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে জামাতা ও তার পরিবার আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয় এবং শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও আমার মেয়েকে মারধর করলে নির্যাতন সইতে না পেরে নিজ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাঁচ দিন পর আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এ ঘটনায় উপযুক্ত বিচার চাই।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিতু বেগমের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর স্বামী রাকিব ও পরিবারের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধ মিতু ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর মায়ের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত