Ajker Patrika

কুঠিবাড়ি রক্ষাবাঁধে আবারও ধস, আতঙ্কে পদ্মাপাড়ের মানুষ

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১৫: ১৫
কুঠিবাড়ি রক্ষাবাঁধে আবারও ধস, আতঙ্কে পদ্মাপাড়ের মানুষ

শুকনো মৌসুমে এবার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষাবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। বিগত সাত দিনে পদ্মাপাড়ের শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি এলাকায় প্রায় ১৫০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বা সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। শুধু চিঠি চালাচালির মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধ রক্ষা সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। 

অন্যদিকে, নির্মাণের মাত্র তিন বছরের মাথায় বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত পদ্মাপাড়ের মানুষ। হুমকিতে পড়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি ও আশপাশের এলাকা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে অভিযোগ ছিল। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্য দিয়ে গত ২০১৮ সালের ৩০ জুন অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে-কলমে হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করা হয়নি। ফলে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পড়েছে। কিন্তু এ নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। এখনই ধস ঠেকানো না গেলে কুঠিবাড়িসহ আশপাশের কয়েক হাজার ফসল, কৃষিজমি, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধ’ প্রকল্প শিরোনামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি রক্ষা করার জন্য ৩ দশমিক ৭২০ কিলোমিটার এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ না হতেই গত ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাঁধে প্রথম ভাঙন দেখা যায়। তখন বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে যায়। 

এবার আবার শুকনা মৌসুমে কোমরকান্দি এলাকায় ১৫০ মিটার বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে শিলাইদহ কুঠিবাড়িসহ আশপাশের বিশাল জনপদ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পদ্মাপাড়ের মানুষ। তবে ধস লাগার সাত দিন পার হয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো খবর নেই। 

শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি প্রতিরক্ষা বাঁধ ধসে গেছেআজ রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোমরকান্দি এলাকায় পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার ধসে গেছে। ধস অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে কোমরকান্দি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সপ্তাহখানেক আগে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। নির্মাণের সময় পাইলিংয়ের কাজে অনিয়ম থাকায় অসময়ে বাঁধ ধসে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। 

স্থানীয় কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, কাজে অনিয়ম থাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে কুঠিবাড়িসহ আশপাশ এলাকায় কৃষিজমি, ফসল, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে। 

কোমরকান্দি গ্রামের মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘শেষ আশাটুকুও ভেঙে গেল। ব্যাটারা কাজে ফাঁকি দিছে। মাইরে খাইছে। এখন আমরা দিশেহারা হয়েছি।’

কলেজছাত্রী বাসনা খাতুন বলেন, ‘এই বাঁধ দিয়েই নিয়মিত কলেজে যাওয়া-আসা করি। নির্মাণকাজে ত্রুটি থাকায় ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙন রোধ করা দরকার।’ 

কুঠিবাড়ির কাস্টডিয়ান মখলেসুর রহমান মোবাইলে বলেন, ‘ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। এটা আমাদের কাজ নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যাপার। তবু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে দৃশ্যমান কোনো কাজ পানি উন্নয়নয় বোর্ড এখনো শুরু করেনি। 

এ নিয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবছার উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে ব্যস্ত রাজবাড়ীর চাষিরা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর মাঠে মাঠে চলছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ। গতকাল সকালে সদর উপজেলার মেছোঘাটা মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজবাড়ীর মাঠে মাঠে চলছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ। গতকাল সকালে সদর উপজেলার মেছোঘাটা মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চলতি মাসের শুরুতে কয়েক দফায় বৃষ্টিপাতের কারণে রাজবাড়ীতে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। দেরিতে আবাদ শুরু হলেও ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। তবে বেশি দামে সার কেনায় খরচ কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। আর কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকেরা যেন চাহিদা অনুযায়ী ন্যায্য দামে সার পান, সেদিকে নজরদারি করা হচ্ছে।

রাজবাড়ী সদর, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা মাঠে হাজির হচ্ছেন মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করতে। চাষিরা কেউ মুড়িকাটা পেঁয়াজের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ রোপণ করছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন। যাঁরা আগেভাগে আবাদ করেছিলেন, তাঁরা চারা গাছের যত্ন নিচ্ছেন। কেউবা চারায় কীটনাশক দেওয়ার কাজ সেরে নিচ্ছেন।

রাজবাড়ী-২
রাজবাড়ী-২

কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া চরের পেঁয়াজচাষি কাশেম মোল্লা বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টির কারণে সপ্তাহ দুই দেরি হয়েছে পেঁয়াজ রোপণে। গত বছর থেকে এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে খরচ কম। এ বছর বিঘায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন যদি ভালো হয়, তাহলে বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ পেঁয়াজ পাব।’

চাষি কাশেম মোল্লা আরও বলেন, ‘গত বছর তো পেঁয়াজে লোকসান গেছে। বিঘায় খরচ পড়েছিল এক লাখ টাকা করে। গুটি পেঁয়াজ কিনতে হয়েছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা মণ। এবার গুটি পেঁয়াজ ৩ হাজার থেকে ৩৫ শ টাকা মণ দরে কেনা যাচ্ছে। যে কারণে খরচ কমছে।’

পাশেই দাঁড়িয়ে আফজাল মোল্লা। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিতে কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল। তারপরও আশা করতেছি ফলন ভালো পাব। তবে সমস্যা হচ্ছে, সার পাচ্ছি না বাজারে। যা পাচ্ছি, দাম একটু বেশি নিচ্ছে।’

আরেক চাষি আব্দুল আজিজ প্রামাণিক বলেন, ‘সার, সেচ, চাষ, শ্রমিক খরচ সব আগের মতোই আছে। খালি এ বছর গুটি পেঁয়াজের দামটা কম। গত বছর ১০-১৫ হাজার টাকা মণ কেনা লাগছিল, এ বছর তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ। এ জন্য আবাদ খরচ কম লাগতেছে।’ তবে বাজারে সার কম পাওয়া যাচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা। সারা দেশের ১৪ শতাংশ পেঁয়াজ এই জেলায় হয়ে থাকে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করে চাষিরা। মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন তোলা যায়। ফলে লাভের আশায় চাষিরা এ জাতের পেঁয়াজের আগাম চাষ করেন। কিন্তু এবার সেপ্টেম্বর মাসের শেষ ও অক্টোবরের শুরুতে কয়েক দফায় বৃষ্টির কারণে কিছুটা দেরিতে পেঁয়াজ আবাদ শুরু হয়েছে।’

সারের দাম নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারের দামের ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। কোথাও কোথাও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে, তবে আমরা কৃষকদের বলছি, সরকারি দামে সার নিতে হবে। সেই সঙ্গে ডিলারদেরও কড়া নজরে রেখেছি যেন কৃষক সঠিক দামে সব উপকরণ পেয়ে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষাবাদ করতে পারে।’

শহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হবে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার টন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত ভাড়ায় ব্যস্ত, সেবাবঞ্চিত খানসামার রোগীরা

এস এম রকি, খানসামা (দিনাজপুর) 
সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাইরের গাড়ি ভাড়া করে রোগী অন্যত্র যাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাইরের গাড়ি ভাড়া করে রোগী অন্যত্র যাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (পাকেরহাট) সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত ভাড়ায় ব্যবহৃত হওয়ায় জরুরি মুহূর্তে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন তাঁদের স্বজনেরা। রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ এক রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ সময় রোগীর স্বজনেরা অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, অ্যাম্বুলেন্স ‘বাইরে রয়েছে’, অন্য গাড়িতে রোগী নিয়ে যেতে হবে।

পরে খোঁজ নিয়ে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি সে সময় সরকারি সেবা বা রোগী পরিবহনে নয়, বরং ব্যক্তিগত ভাড়ায় বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে অন্য গাড়িতে করে দিনাজপুরে রওনা করেন রোগীর স্বজনেরা।

ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন নূর মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জরুরি বিভাগে রোগী আনার পর অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার স্থানান্তর করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় বাইরের গাড়ি করে আমরা দিনাজপুর নিয়ে যাচ্ছি। জরুরি মুহূর্তে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছি না, শুনলাম সেটি নাকি ভাড়ায় বাইরে গেছে!’

এ বিষয়ে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁরা মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেন।

অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সচালক মোকলেছুর রহমানের কাছে মোবাইল ফোনে অবস্থান জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘রোগী নিয়ে দিনাজপুর আসছি।’ কিন্তু রোগীর নাম জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুব্রত হালদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী জরুরি চিকিৎসা ও রোগী পরিবহন ছাড়া সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম; খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পথচারী নিহত

  • প্যাডের ‘ত্রুটির’ পুরনো অভিযোগ নতুন করে সামনে।
  • কয়েক ঘণ্টা বন্ধের পর ফার্মগেট বাদে ট্রেন চালু।
  • ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
  • নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও চাকরির আশ্বাস।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মেট্রোরেলের ভারী বিয়ারিং প্যাডের আঘাতে মারা গেছেন আবুল কালাম চোকদার। তাঁর মরদেহ পেতে হাসপাতালে এসেছেন স্বজনেরা। সেখানে সন্তান কোলে আর্তনাদ করছেন কালামের স্ত্রী। গতকাল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মেট্রোরেলের ভারী বিয়ারিং প্যাডের আঘাতে মারা গেছেন আবুল কালাম চোকদার। তাঁর মরদেহ পেতে হাসপাতালে এসেছেন স্বজনেরা। সেখানে সন্তান কোলে আর্তনাদ করছেন কালামের স্ত্রী। গতকাল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে খুলে পড়ল ভারী বিয়ারিং প্যাড। এবার রাবার ও ইস্পাতের তৈরি শক্ত এ বস্তুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। এতে দুজন আহত হয়েছেন।

গতকাল দুপুরের এ দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। তবে বেলা ৩টার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফার্মগেট হয়ে পুরো রুটে আবার কখন ট্রেন চালু হবে, তা বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগে বলা যাবে না।

১৩ মাসে দুবার এমন গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম খুলে পড়ায় মেট্রোরেলের নিরাপত্তা- ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর প্রথমবার প্যাড খুলে পড়ার পর খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, নির্মাণকাজের সময়ই এ উপকরণটির মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, গতকাল দুপুর ১২টার কিছু আগে মেট্রোরেল চলার সময় ওপর থেকে হঠাৎ একটি বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে পথচারী আবুল কালামের (৩৫) মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় কাছে থাকা আরও দুজন আহত হন এবং ফুটপাতসংলগ্ন একটি চায়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঙ্গে থাকা পাসপোর্টের কথা উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি শরীয়তপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম।

মেট্রোরেলের লাইন যে কংক্রিটের কাঠামোর ওপর পাতা থাকে, তা হচ্ছে ভায়াডাক্ট। আর ভায়াডাক্টগুলো দাঁড়িয়ে থাকে বিশাল ও প্রশস্ত খুঁটি বা পিলারের ওপর। ভায়াডাক্ট ও পিলারের সংযোগস্থলের মধ্যে রাবার ও স্টিলের তৈরি ৮০ কেজি ওজনের বিয়ারিং প্যাড বসানো হয়। এটি ট্রেন চলাচলের সময় ওপরের কাঠামোর ভার নিচের পিলারে স্থানান্তর করে এবং কম্পন শোষণ করে। এতে কাঠামোর ক্ষয় ও সম্ভাব্য স্থানচ্যুতি রোধ করা যায়।

মেট্রোরেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) প্রকৌশল সূত্র বলেছে, বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক ঘটনা। বিষয়টি কাঠামোর নির্মাণত্রুটি নাকি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যর্থতা, তা খতিয়ে দেখা হবে।

জানা গেছে, মেট্রোরেলের দুই পিলারের মাঝখানে থাকা প্রতিটি স্প্যানের জন্য চারটি করে বিয়ারিং প্যাড রয়েছে। মেট্রোরেলের এ পর্যন্ত চালু হওয়া ৬ নম্বর লাইনটিতে (মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত) মোট পিলার আছে ৬২০টি।

তদন্ত কমিটি গঠন

এ ঘটনায় সাবেক মেট্রোরেল এমডি এবং বর্তমান সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—বুয়েটের অধ্যাপক এ বি এম তৌফিক হাসান, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) সহকারী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব এবং সড়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসফিয়া সুলতানা। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের কেউ কর্মক্ষম থাকলে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

দুর্ঘটনার পরপরই ফার্মগেটে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি এ সময় বলেন, ‘এটা নির্মাণকাজের ত্রুটির জন্য হয়েছে নাকি নাশকতামূলক কিছু ঘটেছে, সেটি তদন্তে বের হবে। যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সুপারিশ করা হবে।’

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিয়ারিং প্যাডের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আলগা হয়ে পড়ে যাওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি রক্ষণাবেক্ষণে নজরদারির ঘাটতি বা নির্মাণপর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতার ফল হতে পারে। এখন সবচেয়ে জরুরি হলো পুরো ট্র্যাকের নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা।’

এবার বিয়ারিং প্যাড পড়েছে ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে, যার অবস্থান ফার্মগেট স্টেশনের পশ্চিম পাশে। ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্যাড পড়েছিল ৪৩০ নম্বর পিলার থেকে। তবে সেবার কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল ১১ ঘণ্টা।

প্যাড নিয়ে উদ্বেগ পুরনো

মে্ট্রোরেলের ভায়াডাক্টে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাড নিয়ে নির্মাণের সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এ ব্যাপারে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে কারিগরি পরীক্ষা করে একাধিক প্যাডের মানে ঘাটতি পাওয়া যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু তখন অজ্ঞাত কারণে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। তবে নতুন করে ‘উন্নত’ প্যাড আনার উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছিল।

বুয়েটের ল্যাবে উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা প্যাডের মান পরীক্ষা করা হয়েছিল। এসব প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল–থাই। তবে যখন অভিযোগ ওঠে, ততদিনে প্রায় আট কিলোমিটার উড়ালপথে প্যাড বসানোর কাজ হয়ে গিয়েছিল।

যাত্রীদের উদ্বেগ ও ভোগান্তি

বিচিত্র ধরনের এ দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজাদুল হক নামের এক যাত্রী লিখেছেন, ‘আমরা ভাবতাম মেট্রোরেল সবচেয়ে নিরাপদ। এখন ভয় লাগছে; যদি ট্র্যাকের নিচ থেকে কিছু খুলে পড়ে, তাহলে নিরাপত্তা কোথায়?’ স্টেশনের যাত্রীদের মধ্যেও এ নিয়ে গুঞ্জন চলে।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধের পর ফার্মগেট ও মতিঝিল স্টেশন এলাকায় যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বিকল্প পরিবহন খুঁজে নিতে বাধ্য হন। অফিস ছুটির পর নিয়মিত যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।

গতকাল বিকেলে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ আপাতত বন্ধ থাকবে। আজ (রোববার) চালু করা সম্ভব হবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পুরো রুট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তবে নির্দিষ্ট সময় এখনই বলা যাচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থেমে গেল কালামের ছুটে চলা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিশরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৫০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

একসময় প্রবাস জীবনযাপন করেছেন, এরপর দেশে ফিরে ঘর বেঁধেছেন বছর পাঁচেক আগে। ঘরে আছে দুই সন্তান ও স্ত্রী। নিজে ভালো থাকা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা আবুল কালাম চোকদারের জীবন থেমে গেল। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে যে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে, সেটির আঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর।

শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদার পাঁচ বছর আগে ঘর বেঁধেছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়, প্রিয়ার সঙ্গে। ঘরে আছে দুই সন্তান আবদুল্লাহ ও ফারিয়া। বয়স যথাক্রমে ৪ ও ২ বছর। তাদের নিয়ে পাঠানটুলী এলাকায় মনোয়ার ভিলায় থাকতেন।

গতকাল সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, আবুল কালামের শাশুড়ি রিনা আক্তার বিলাপ করছেন। আর স্বামীর লাশের পাশে আর্তনাদ করছেন প্রিয়া।

প্রিয়ার বোন নুসরাত বলেন, ‘কালাম ভাই ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। এখন আমার বড় বোন অসহায় হয়ে গেল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কীভাবে থাকবে? আমার বাবা ইতালি থাকেন। আমাদের কোনো ভাই নেই। উনিই আমাদের ভাইয়ের অভাব পূরণ করেছিলেন।’

নিহত কালামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে আবুল কালাম চোকদার। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে কালাম ভাইদের মধ্যে ছোট। প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁর বাবা ও মা মারা যান।

কালামের চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই ইলিয়াস চোকদার চাঁদপুরে সিলভারের ব্যবসা করেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন। বাড়িতে তাঁর একটি ঘর রয়েছে এবং মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি আসেন।

মেজ ভাই খোকন চোকদার বাড়িতেই থাকেন এবং কৃষিকাজ করে সংসার চালান। তাঁকে মাঝেমধ্যে আর্থিক সহযোগিতা করতেন আবুল কালাম।

আবুল কালাম ছয়-সাত বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর তিনি আর বিদেশে যাননি। ঢাকাতেই জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ফার্মগেট এলাকায় তিনি একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায়। গ্রামে থাকা মেজ ভাইয়ের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।

কালামের ভাবি আসমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিল। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আসো। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসব। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর শুনি—মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে।’

সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ও-ই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

ছোটবেলা থেকে কালাম পরিশ্রমী ছিলেন বলে জানান তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেওয়া কঠিন।’

গতকাল রাত ১০টায় পাঠানটুলীর বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে কালামের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর তাঁর মরদেহ শরীয়তপুরে নিজ গ্রামে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার সকাল ৯টায় নড়িয়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত