রামপালে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন
এস. এস শোহান, বাগেরহাট
বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। কৃষিজমির সংকটে কাজের সন্ধানে অনেক কৃষক পাড়ি জমিয়েছেন বড় শহরে। এভাবে শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণ চলতে থাকলে শহরে আসার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে রামপালে সরকারি উন্নয়নকাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের হার বেশি। গেল তিন দশকে এই উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য ৬৩০ একর, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের জন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া রামপাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সন্ন্যাসী এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে নৌ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
এর বাইরে পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে ও পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার ফয়লা বিমানবন্দর থেকে গোনাইব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে ৩৫০ একর জমি ক্রয় করে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে শিল্পগোষ্ঠী ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া ফারুক জুটস মিলস লি., বে-ইস্টার্ন করপোরেশন, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা এলপিজি, পেট্রোম্যাক্স অফিসার্স রেসিডেন্স, ৫টি তেলপাম্প, কয়েকটি মাছ ক্রয়-বিক্রয় আড়ত গড়া হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিজমিতে বাড়ি ও ছোট ছোট দোকান নির্মাণ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ছাড়া পশুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে গেল তিন দশকে এই উপজেলার অন্তত ৫০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
তবে রামপাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গেল ১৫ বছরে এই উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৫০০ একর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রামপাল উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৬৬৩ একর। ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৬৫ একরে। তবে বাস্তবিক অর্থে এই পরিমাণ আরও বেশি। এভাবে দিনের পর দিন জমি কমার কারণে কৃষিকাজ ও ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল অনেকে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বড় শহরে।
উপজেলার রাজনগর এলাকার গুরুদাস মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় একসময় অনেক ধান উৎপাদন হতো, আবার মাছও পাওয়া যেত। কিন্তু ধানি জমি কমতে কমতে এখন অনেকের শুধু বাড়িটুকু আছে। কয়েক বছর আগে আমার প্রতিবেশী তারক দাস পরিবার নিয়ে কাজের আশায় ঢাকা চলে গেছে। মাত্র তিন কাঠা জমি আছে তার বাড়িতে, এতে কি আর সংসার চলে। শুনেছি, ঢাকায় নিজে রিকশা চালায়, বউ মানুষের বাসায় কাজ করে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে।’ শুধু তারক নন, আশপাশের অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়েছে বলে জানান এই বৃদ্ধ।
গৌরম্ভা এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রামে গেছেন দিনমজুর হুমায়ুন কবির। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মানুষের ধানখেত ও বাড়িতে আমি কাজ করতাম। কিন্তু বছর দশেক হলো, এলাকায় কাজ খুব কম। কারণ, আগের মতো ধানি জমি নেই। যার কারণে চট্টগ্রামে চলে আসছি। রাজমিস্ত্রির জোগান দিই, ৩০ দিনই কাজ করা যায়। বেতনও ভালো।’
ওরিয়ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে জমি বিক্রেতা অমৃত লাল সরকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘১০ লাখ টাকায় প্রতি বিঘা জমি বিক্রি করেছি। ওই জমিতে অন্তত ৩০০ জন কৃষক ধান চাষ করতেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ছিল বর্গাচাষি, আবার কেউ কেউ ধানচাষিদের দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তাঁরা মূলত সমস্যায় পড়েছেন।’
কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। খুলনা পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আইনজীবী কুদরাত-ই-খুদা বলেন, ভূমি উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী কৃষিজমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না। রামপালে যেভাবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার কৃষিজীবীরা জীবিকা সংকটে পড়বেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদ, নগর-পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সরকারকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বনায়ন, মাছ চাষ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য আলাদা স্থান নির্বাচনের অনুরোধ করে আসছে। তারপরও সরকারের চোখের সামনে কৃষিজমিতে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে ফসলি জমি ক্রয় করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কিছু করার নেই বলে জানান জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, শিল্প গ্রুপগুলো সরাসরি তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করে না। তারা প্রথমে স্থানীয় জমির দালালদের মাধ্যমে জমি ক্রয় চুক্তি করেন, পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালকদের বিশ্বস্ত কারও নামে জমিটি দলিল করেন। পরে ওই জমিতে বালু ভরাট ও সাইনবোর্ড দিয়ে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের চাইলেও কিছু করার নেই।
অন্যদিকে, শিল্প গ্রুপের ক্রয় করা জমিতে বালু ভরাটের জন্য দেদার ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। যার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘১৫ বছরে এই উপজেলায় কিছু আবাদযোগ্য জমি কমেছে। তবে উৎপাদন যাতে না কমে, এ জন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের ধান চাষ এবং একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চাষের জমি কমলেও উৎপাদন কমেনি বলে দাবি এই কর্মকর্তার।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপপরিচালক আসাদুর রহমান বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে হলে দুই ধরনের ছাড়পত্র নিতে হয়। একটি শুরুতে অবস্থানগত ছাড়পত্র, আরেকটি পরিবেশগত ছাড়পত্র। রামপালে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হচ্ছে, তারা যদি পরিবেশের ছাড়পত্র না নেয়, অথবা পরিবেশের ক্ষতি করে, সে ক্ষেত্রে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌসী বলেন, ‘সম্প্রতি আমি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। বেশির ভাগ জমি আমি যোগদানের আগে হস্তান্তর ও বালু ভরাট হয়েছে। কৃষিজমি রক্ষার যে নীতিমালা রয়েছে, সেখানে উপজেলা প্রশাসনের যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, তা আমরা পালন করব।’ এ ক্ষেত্রে জমির মালিক এবং স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। কৃষিজমির সংকটে কাজের সন্ধানে অনেক কৃষক পাড়ি জমিয়েছেন বড় শহরে। এভাবে শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণ চলতে থাকলে শহরে আসার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে রামপালে সরকারি উন্নয়নকাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের হার বেশি। গেল তিন দশকে এই উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য ৬৩০ একর, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের জন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া রামপাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সন্ন্যাসী এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে নৌ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
এর বাইরে পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে ও পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার ফয়লা বিমানবন্দর থেকে গোনাইব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে ৩৫০ একর জমি ক্রয় করে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে শিল্পগোষ্ঠী ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া ফারুক জুটস মিলস লি., বে-ইস্টার্ন করপোরেশন, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা এলপিজি, পেট্রোম্যাক্স অফিসার্স রেসিডেন্স, ৫টি তেলপাম্প, কয়েকটি মাছ ক্রয়-বিক্রয় আড়ত গড়া হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিজমিতে বাড়ি ও ছোট ছোট দোকান নির্মাণ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ছাড়া পশুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে গেল তিন দশকে এই উপজেলার অন্তত ৫০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
তবে রামপাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গেল ১৫ বছরে এই উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৫০০ একর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রামপাল উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৬৬৩ একর। ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৬৫ একরে। তবে বাস্তবিক অর্থে এই পরিমাণ আরও বেশি। এভাবে দিনের পর দিন জমি কমার কারণে কৃষিকাজ ও ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল অনেকে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বড় শহরে।
উপজেলার রাজনগর এলাকার গুরুদাস মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় একসময় অনেক ধান উৎপাদন হতো, আবার মাছও পাওয়া যেত। কিন্তু ধানি জমি কমতে কমতে এখন অনেকের শুধু বাড়িটুকু আছে। কয়েক বছর আগে আমার প্রতিবেশী তারক দাস পরিবার নিয়ে কাজের আশায় ঢাকা চলে গেছে। মাত্র তিন কাঠা জমি আছে তার বাড়িতে, এতে কি আর সংসার চলে। শুনেছি, ঢাকায় নিজে রিকশা চালায়, বউ মানুষের বাসায় কাজ করে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে।’ শুধু তারক নন, আশপাশের অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়েছে বলে জানান এই বৃদ্ধ।
গৌরম্ভা এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রামে গেছেন দিনমজুর হুমায়ুন কবির। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মানুষের ধানখেত ও বাড়িতে আমি কাজ করতাম। কিন্তু বছর দশেক হলো, এলাকায় কাজ খুব কম। কারণ, আগের মতো ধানি জমি নেই। যার কারণে চট্টগ্রামে চলে আসছি। রাজমিস্ত্রির জোগান দিই, ৩০ দিনই কাজ করা যায়। বেতনও ভালো।’
ওরিয়ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে জমি বিক্রেতা অমৃত লাল সরকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘১০ লাখ টাকায় প্রতি বিঘা জমি বিক্রি করেছি। ওই জমিতে অন্তত ৩০০ জন কৃষক ধান চাষ করতেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ছিল বর্গাচাষি, আবার কেউ কেউ ধানচাষিদের দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তাঁরা মূলত সমস্যায় পড়েছেন।’
কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। খুলনা পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আইনজীবী কুদরাত-ই-খুদা বলেন, ভূমি উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী কৃষিজমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না। রামপালে যেভাবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার কৃষিজীবীরা জীবিকা সংকটে পড়বেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদ, নগর-পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সরকারকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বনায়ন, মাছ চাষ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য আলাদা স্থান নির্বাচনের অনুরোধ করে আসছে। তারপরও সরকারের চোখের সামনে কৃষিজমিতে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে ফসলি জমি ক্রয় করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কিছু করার নেই বলে জানান জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, শিল্প গ্রুপগুলো সরাসরি তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করে না। তারা প্রথমে স্থানীয় জমির দালালদের মাধ্যমে জমি ক্রয় চুক্তি করেন, পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালকদের বিশ্বস্ত কারও নামে জমিটি দলিল করেন। পরে ওই জমিতে বালু ভরাট ও সাইনবোর্ড দিয়ে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের চাইলেও কিছু করার নেই।
অন্যদিকে, শিল্প গ্রুপের ক্রয় করা জমিতে বালু ভরাটের জন্য দেদার ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। যার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘১৫ বছরে এই উপজেলায় কিছু আবাদযোগ্য জমি কমেছে। তবে উৎপাদন যাতে না কমে, এ জন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের ধান চাষ এবং একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চাষের জমি কমলেও উৎপাদন কমেনি বলে দাবি এই কর্মকর্তার।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপপরিচালক আসাদুর রহমান বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে হলে দুই ধরনের ছাড়পত্র নিতে হয়। একটি শুরুতে অবস্থানগত ছাড়পত্র, আরেকটি পরিবেশগত ছাড়পত্র। রামপালে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হচ্ছে, তারা যদি পরিবেশের ছাড়পত্র না নেয়, অথবা পরিবেশের ক্ষতি করে, সে ক্ষেত্রে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌসী বলেন, ‘সম্প্রতি আমি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। বেশির ভাগ জমি আমি যোগদানের আগে হস্তান্তর ও বালু ভরাট হয়েছে। কৃষিজমি রক্ষার যে নীতিমালা রয়েছে, সেখানে উপজেলা প্রশাসনের যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, তা আমরা পালন করব।’ এ ক্ষেত্রে জমির মালিক এবং স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ’ওরিয়েন্টেশনের দিন স্যাররা যাওয়ার পর সিনিয়ররা দরজা বন্ধ করে আমাদের পরিচয় পর্বের নামে মানসিক নির্যাতন করেন। গালাগালি করেন। একজন প্রতিবাদ করলে তাকে মার্ক করে রাখেন। ওকে আগেরদিনই ইন্ডিকেট করে রেখেছিল, সিনিয়র ভাইয়েরা রুমে এসে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে...
১৫ মিনিট আগেপবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু করেছেন শিয়া মুসলিমেরা। আজ রোববার সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে মিছিলটি বের হয়।
৩৪ মিনিট আগেরোববার ভোরে খিলক্ষেতের ‘লা মেরিডিয়ান’ হোটেলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, প্রতিদিনের মতো তাঁরা রাস্তা পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা একটি দ্রুতগামী কাভার্ডভ্যান তাঁদের চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেজীবনে অনেক কষ্ট করে সংসার টেনেছেন বারিক প্রামাণিক। বাবা আজিম প্রামাণিকের মৃত্যুর পর সব ভার এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। এখন বয়স হয়েছে, তবু বিশ্রামের সুযোগ হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে