Ajker Patrika

বিনোদনের ছুটি নিয়ে জেল খাটছেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী, জানে না কর্তৃপক্ষ

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
বিনোদনের ছুটি নিয়ে জেল খাটছেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী, জানে না কর্তৃপক্ষ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী মেডিকেল অফিসার বিনোদনের জন্য কর্মস্থল থেকে ছুটি নেন। কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বললেও তাঁরা দুজনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবদুল বারী তাঁদের কারাগারে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তাঁদের একজন গত ৩০ জুলাই থেকে বিচারিক আদালতের সাজা মাথায় নিয়ে আত্মসমর্পণ করে জেলা কারাগারে জেল খাটছেন। আরেকজন ২৭ জুলাই থেকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের দুজনের কারাগারে থাকার বিষয়টি গোপন করে দুজনকে রক্ষায় নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন কর্মস্থলের সহযোগীরা। চাকরির ঝুঁকি এড়াতে সহকর্মী দুজনের অনুপস্থিতির বিষয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে গোপনে জামিন নিয়ে কর্মস্থলে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গত ২৩ জুলাই ঢাকার মিরপুর থেকে দুই সহযোগীসহ ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের হাতে আটক হন শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আরিফ বিল্লাহ। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ থাকা আরিফকে নিয়োগ বাণিজ্য ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আটক করা হয়।

এ সময় অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা আরিফ ও তাঁর দুই সহযোগীর মোবাইল ফোনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কয়েকটি দপ্তরের প্রশ্নপত্রসহ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের প্রমাণ পায়। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে আটক তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তিন দিন ডিবি হেফাজতে থাকার পর গত ২৭ জুলাই আরিফকে আদালতে হাজির করার পর তাঁকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

তা ছাড়া ৩০ জুলাই সাতক্ষীরার একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে কারাগারে পাঠানো হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী মেডিকেল অফিসার রাশেদুল ইসলাম খানকে। অর্থসংক্রান্ত মামলায় সাতক্ষীরা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত তাঁর কারাদণ্ডাদেশ ও আর্থিক জরিমানার রায় বহাল রাখলে তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এর আগে গত ৮ জুলাই শ্রান্তি বিনোদনের জন্য ১৫ দিনের ছুটির আবেদন জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন রাশেদুল ইসলাম। পরে সহকর্মীকে দিয়ে ২৪ জুলাই ছুটি বর্ধিত করার আরও একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়ে পাঁচ দিন পর তিনি কারাগারে যান।

এসব বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রান্তি বিনোদনের ছুটি নিয়ে তাঁরা কোথায় আছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে চাকরিবিধি বিরোধী কিছু করে থাকলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছুটির আবেদন দিয়ে তাঁরা কর্মস্থলের বাইরে রয়েছেন। কারাগারে থেকে থাকলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভাগীয় নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‘আমার একটাই ছেলে। আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল কারা! আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এভাবেই আহাজারি করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস। ছেলে আমির হামজার নিহতের খবর শুনে শোকে পাগলপ্রায় তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশ।

সে চান্দড়া তা’লিমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গত রোববার আসরের নামাজের পর থেকে ওই মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নিখোঁজ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বস্তার মধ্যে কিছু ইটও পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমির হামজার বাবা ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।

পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিল।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাবন্দী মরদেহটি উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ঘটনা উদ্‌ঘাটন করতে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ী-পাবনা সীমান্তবর্তী পাংশা উপজেলার হাবাসপুর খেয়াঘাট এলাকার অদূরে পদ্মার চর থেকে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাতনামা এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, পদ্মায় মাছ ধরার সময় দুপুরে জেলেরা চরে মরদেহটি দেখতে পান। পরে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। মরদেহটি পাবনা জেলার সীমানায় পাওয়ায় পাবনা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দু-এক দিন আগে হত্যার পর লাশ চরে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করা যুবক পালাল পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় গণধোলাইয়ে আহত ছিনতাইকারী এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশকে ছুরিকাঘাত করেছে। তবে ঘটনার পর পুলিশের একাধিক দলের সাঁড়াশি অভিযানে ছুরিকাঘাতকারী ওই যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে পাহারায় নিয়োজিত এক কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ইমাম হোসেন আকাশ (৩০) নামের ওই যুবক। তিনি আনোয়ারার দিঘীরপাড় বরুমছড়া এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং বন্দর এলাকার আজাদ কলোনির বাসিন্দা। পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তাঁর দুই সহযোগীর নাম এখনো জানা যায়নি।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলায়মান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারী ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানায়, চমেক হাসপাতালে পুলিশের পাহারায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিযুক্ত ছিনতাইকারী ইমাম হোসেন আকাশ। ওই দিন রাতে ইমামের সঙ্গে দুজন নারীসহ তিনজন দেখা করতে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইমাম হোসেন রাজু সেখানে দায়িত্বরত একজন কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ওই দিন রাতেই নগর পুলিশের একাধিক টিম ওই ছিনতাইকারীকে ধরতে মাঠে নামে। পরে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকা থেকে তাঁকে দুই সহযোগীসহ আটক করা হয়।

গত মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর সিপিআর ৫ নম্বর গেট-সংলগ্ন ব্রিজের সামনে এক চীনা নাগরিক ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। দুই-তিনজন ছিনতাইকারী ওই চীনা নাগরিককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাঁর সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট, ভিসা, নগদ অর্থ ও নথিপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত জনতা ধাওয়া দিয়ে দুই ছিনতাইকারীদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

বন্দর থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক দুই ছিনতাইকারীদের মধ্যে ইমাম হোসেন আকাশ গুরুতর আহত থাকায় তাঁকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। শাহাদাত হোসেন (২৫) নামের আরেক ছিনতাইকারীকে হাজতে রাখা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত