Ajker Patrika

খুলেছে সুন্দরবনের দুয়ার, বনজীবীদের মাঝে স্বস্তি

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলেছে সুন্দরবনের দুয়ার, বনজীবীদের মাঝে স্বস্তি

দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি। এরই মধ্যে উপকূলজুড়ে  সুন্দরবনকেন্দ্রিক কর্মজীবীদের মাঝে বেড়েছে সব ধরনের কর্মচঞ্চলতা। ফলে সুন্দরবনের উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বনজীবী জেলেরা।

গতকাল সকাল ১০টায় বন বিভাগ থেকে জেলেদের মধ্যে মাছ ধরার অনুমতির ‘পাস পারমিট’ বিতরণ করলে আনন্দ প্রকাশ করেন জেলেরা। দীর্ঘ ৯২ দিন অলস সময় কাটানোর পর বিনা বাধায় মাছ ধরতে সুন্দরবনের পথে রওনা দিয়েছেন কয়রা উপজেলার সহস্রাধিক জেলে। মাছ ধরা যেন তাদের কাছে উৎসবে পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে নৌকা-ট্রলারের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অভাব-অনটনে পড়ে থাকা বনজীবীরা কষ্ট ভুলে আবারও নতুন উদ্যমে রুজির সন্ধানে ফিরছেন সুন্দরবনে।

বনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। অনেকেই ব্যস্ত সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র নেওয়ার জন্য। সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট অফিসে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র গ্রহণে জেলে ও ট্রলার মালিকদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

কয়রার গোবরা গ্রামের বনজীবী ইউনুস বলেন, ‘দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ থাকার কারণে খেয়ে না খেয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে গেছি। সুন্দরবন খুলে দিয়েছে। এখন অভাব অনটন কিছুটা হলেও কমবে।’

 বনজীবী খানজাহান আলী বলেন, ‘সবার আগে পাস নিতে এসেছি। দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ ছিল। অনুমতি নিয়ে আগে যেতে পারলে বেশি মাছ পাব। এ জন্য আগে এসেছি।’

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক জানান, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৩ হাজার ৫২৬ জন। তবে সবাই বনজীবী জেলে নয়। এ ছাড়াও নতুন জেলেদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কয়রার সুন্দরবন থেকে আহরিত মৎস্য স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হয় বিদেশেও।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়রা উপজেলার বানিয়াখালী, কাশিয়াবাদ ও কোবাদক স্টেশনসহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকার বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। আজ কয়রার তিনটি স্টেশন থেকে ৭০০ পারমিটধারী নৌকা বনে প্রবেশ করেছে। আগামী  সোমবারের মধ্যে পারমিটধারী বাকি নৌকাও বনে প্রবেশ করবে।

কয়রা কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ৯২ দিন পর আবারও সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে করে আবার কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। জেলেদের সমস্যা দূর হবে। বৃহস্পতিবার কয়রা উপজেলার তিনটি স্টেশন থেকে ৭০০ পারমিটধারী নৌকায় ১ হাজার ৪০০ জেলে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন বলে তিনি ধারণা করছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত