Ajker Patrika

‘এক গ্লাস পানি পেতে নলকূপে ১০ বার চাপ দিতে লাগে’

মাগুরা প্রতিনিধি
‘এক গ্লাস পানি পেতে নলকূপে ১০ বার চাপ দিতে লাগে’

বাড়ির টিউবওয়েলে গত ১০ দিন পানি উঠছে না। তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেশি থাকায় টিউবওয়েলে পানি সংকট দেখা দিয়েছে তাঁর বাড়িতে। ফলে পাশের মসজিদে গিয়ে ট্যাপের পানি নিয়ে আসেন। 

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার মদনপুরে এমন পরিস্থিতি প্রায় সব বাড়িতে। প্রতি বছর জানুয়ারির পর থেকে মূলত টিউবওয়েলে পানি কম উঠতে থাকে। মার্চ ও এপ্রিলে সেখানকার মানুষ নিজেদের ব্যক্তিগত টিউবওয়েল থেকে চাহিদারে মতো পানি পান না। 

মদনপুর শুধু নয়। উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের অনেক জায়গাতে টিউবওয়েলে ঠিকমতো পানি উঠছে না। 

স্থানীয় জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ে যোগাযোগ করে ভুক্তভোগীরা জানতে পেরেছেন, এ সময় উপজেলার পানির স্তর প্রায় ১৫-২০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। 

একইভাবে ভোগান্তিতে রয়েছে মাগুরা সদরের কিছু জায়গা। মাগুরা পৌরসভার মধ্যে ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আবালপুর, ছোট আবালপুর, ডেফুলিয়া, রাঘবদাইর, ইছাখাদা, মির্জাপুর, কছুন্দি থেকে অন্তত শতাধিক গ্রামে এমন পরিস্থিতির মধ্যে মানুষ দিন কাটাচ্ছেন। 

ইছাখাদার ব্যবসায়ী নুরুল হক জানান, নলকূপে চাপ দিলে পানি পড়ে না। বাইরে থেকে পানি ঢাললে তারপর বহু কষ্টে পানি বের হয় নলকূপ দিয়ে। এই গরমে এক গ্লাস পানি খেতে অন্তত ১০ বার চাপ দিতে লাগে। যা শরীরকে ক্লান্ত করে দিচ্ছে। 

মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুকনা মৌসুমে মাগুরা সদরসহ শ্রীপুর উপজেলার বেশকিছু জায়গাতে অগভীর ও গভীর নলকূপের পানির স্তর নিচে নেমে যায়। বিশেষ করে শ্রীপুরে এই ঘটনা বেশি ঘটছে। যত্রতত্র নলকূপ স্থাপনাও অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। 

মাগুরা শ্রীপুরের ৮টি ইউনিয়নের অগভীর পানির টিউবওয়েলে গড় গভীরতা ৬০–৭০ ফুট। যা শুকনা মৌসুমে পানির স্তর ২০ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। একইভাবে শালিখা উপজেলাতেও টিউবওয়েলে পানির গড় স্থিতিশীলতা থেকে ৫ মিটার নিচে নেমে গেছে বলে জানা গেছে। 

ভূগর্ভস্থ পানির স্থিতিশীলতা এপ্রিলের এক তথ্য থেকে জানা গেছে, চলতি মাসে মাগুরা সদরের ১৩ ইউনিয়নের অগভীর হস্তচালিত টিউবওয়েলের পানি গড়ে ১০-১৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। তবে সব জায়গাতে একরকম পাওয়া যায়নি। কম বেশি হলেও গড়ে টিউবওয়েল গুলোতে পরিমাণ মতো পানি পাওয়া যাচ্ছে না। 

এ বিষয়ে মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পানি কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না এমনটা আমরা শুনিনি। তবে পানি পরিমাণ মতো উঠছে না এটি সঠিক। নিচের লেয়ার কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি প্রতি বছর এই অঞ্চলে লক্ষ্য করা যায়। এজন্য পরিমাণ মতো নলকূপ ব্যবহার করতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘অনুমতিহীন নলকূপ ও গভীর নলকূপের কারণে প্রতি বছর পানি লেয়ার নিচে নেমে যায়। এ বিষয়ে আমার বিভিন্ন সময় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পৌরসভাকে বলেছি। তাদের অনুমতি ব্যতীত যেন নতুন করে যেখানে–সেখানে নলকূপ বসানো না হয়। এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে অযাচিত পানি ব্যবহারে পানির লেয়ার আরও নিচে নেমে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

ইরান-ইসরায়েলের সম্ভাব্য মুখোমুখি সংঘর্ষের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত