Ajker Patrika

ইউটিউব দেখে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনে আগ্রহী হন শিক্ষার্থী তারেক

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর)
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১: ১৬
ইউটিউব দেখে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনে আগ্রহী হন শিক্ষার্থী তারেক

ছোটবেলা থেকেই অধ্যবসায়ী এবং পরিশ্রমী। কৃষক বাবার কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিখছেন, চাষাবাদে সহযোগিতা করছেন তাঁকে। ইউটিউবে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। এখন নিজেই মাটি ছাড়া সবজির চারা উৎপাদন শুরু করেছেন। গল্পটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মো. জিল্লুর রহমানের ছেলে এস এম তারেকের। 

চলতি বছর এইচএসসি পাস করেছেন তারেক, আছেন স্নাতকে ভর্তির অপেক্ষায়। দেড় বিঘা জমিতে লাগিয়েছেন এই চারা। স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা হওয়ার। 

এস এম তারেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাটি ছাড়াই উন্নত জাতের সবজির চারা উৎপাদন করছি। আধুনিক এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে মাটির পরিবর্তে কোকোপিট (নারকেলের ছোবড়া) ও প্লাস্টিকের সিডলিং ট্রে ব্যবহার করা হয়। বাড়ির ছাদে পরীক্ষামূলকভাবে ছোট নার্সারি করে মাটি ছাড়াই মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা উৎপাদন করেছি। প্রথম অবস্থায় উৎপাদিত চারা নিজের জমিতে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া বড় পরিসরে নার্সারি বানিয়ে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করার ইচ্ছা আছে। 

তিনি আরও বলেন, ইউটিউবে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হই। ‘এগ্রো ওয়ান’ নামের একটি কৃষিবিষয়ক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ চাই। সেখানে প্রশিক্ষণ নিই। তারাই উন্নত জাতের বীজ ও চারা উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে দেন। পরে ছোট পরিসরে বাড়ির ছাদে চারা উৎপাদন শুরু করি। মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের জন্য নারিকেলের ছোবড়া ও ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে তৈরি করা হয় কোকোপিট। পরিমাণমতো সেগুলো গুঁড়ো করে প্লাস্টিকের সিডলিং ট্রেতে বীজ বপন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের বীজের মধ্যে অধিকাংশ চার দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়। ২৫ থেকে ৩০ দিনে চারা রোপণের উপযোগী হয়। 

স্থানীয়রা জানান, আধুনিক এই ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন তাঁরা আগে দেখেননি। 

তারেকের বাবা মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করছি। তবে এর আগে আমরা কখনো এভাবে চারা উৎপাদন করতে দেখিনি। ছেলেকে মাটি ছাড়াই চারা উৎপাদন করতে দেখে শঙ্কিত ছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি এই পদ্ধতি অনেক ভালো।’ 

হাড়াভাঙ্গা গ্রামের আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাটি ছাড়াই চারা উৎপাদন করা হচ্ছে, যা সত্যিই অভাবনীয়। এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে ঝুঁকি কম। তাই আমাদেরও ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করার ইচ্ছা আছে।’ 

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এই শিক্ষার্থী একটি ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যে বিষয়গুলো তাঁর অজানা রয়েছে, আমাদের কাছে এলে তাঁকে সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে। তা ছাড়া কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতাও করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত