Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব: যশোরে ফসলের খেতে পানি, ফলন নিয়ে শঙ্কা

যশোর প্রতিনিধি
Thumbnail image

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব পড়েছে যশোরেও। আজ বুধবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কখনো ভারী বৃষ্টির সঙ্গে বইতে থাকে দমকা হাওয়া। দিনভর মেঘাচ্ছন্ন ও বৃষ্টিতে বাইরে বের হওয়া সাধারণ মানুষ পড়ে বিপাকে। তারা বিভিন্ন স্থানে আটকে যায়। ফলে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটে। কেউ বা ছাতা নিয়ে জরুরি কাজে বাইরে বের হয়েছেন।

এদিকে বৃষ্টি ও বাতাসে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকেরা। বাতাসে আমন ধানের গাছ হেলে পড়েছে। আর বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজি খেতে জমেছে পানি। তাতে সবজি খেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, আজ বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বৃষ্টি ও বাতাসে ক্ষতির মুখে পড়েছেন যশোরের কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে সবজি চাষ নিয়ে চাষিদের চিন্তার শেষ নেই। আবাদ করতে গিয়ে শুধু খরচ আর খরচ। বারবার চারা রোপণ করতে গিয়ে একদিকে যেমন খরচ বাড়ছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে শীতের সবজির চারা রোপনের মৌসুম শেষের দিকে। এবার যোগ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। এর প্রভাবে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির কারণে সবজির জোন যশোরে মাঠের সবজি ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। মাঠের পর মাঠে ধানের গাছ হেলে পড়েছে। চাষিরা জানিয়েছে, যেসব ধানের শিষ বের হয়নি ও দানা নরম, সেই ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সদরের চুড়ামণকাঠি ইউনিয়নের আব্দুলপুরের কৃষক শফিকুল বলেন, ‘এবার সবজি চাষিদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তিন মাস ধরে চাষিরা সবজি চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছে। শীতকালীন সবজির চারা রোপণ করলেই কিছুদিন পর পর বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাতে সবজি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

যশোর-২ঝিকরগাছা উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক সুমন কবির বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে অতিবৃষ্টিতে অনেক নিচু অঞ্চলের জমিতে ধানের চারা ডুবে গিয়ে পচে যায়। উঁচু জমিতে ধান ভালো হলেও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ধানগাছগুলো হেলে পড়েছে। আমার দেড় বিঘার ধান হেলে পড়েছে। ধানের শিষে যে দানা রয়েছে, তা এখনো শক্ত হয়নি। অনেক ধান চিটা হয়ে যাবে। আর যে ফলন হওয়ার কথা ছিল তাও কমে যাবে। বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ ফলন হয়। কিন্তু হেলে পড়ায় পাঁচ মণ কমে যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবার অতিবৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সবজি চাষিদের ক্ষতি বেশি হলেও এত দিন ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি। শুনেছি ঝড়ে কিছু জায়গায় ধানগাছ হেলে পড়েছে। ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট দমকা হাওয়ায় পড়ে যাওয়া যেসব ধানের দানা শক্ত হয়ে গেছে, সে ধানের ক্ষতি হবে না। তবে যেসব ধানের শিষ বের হচ্ছে এবং দানা এখনো শক্ত হয়নি, সেই ধানের একটু ক্ষতি হয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত