Ajker Patrika

মিনহাজ নদীমুখে পলি জমে পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ, খননের দাবি

বাবুল আক্তার, পাইকগাছা (খুলনা) 
মিনহাজ নদীমুখে পলি জমে পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ, খননের দাবি

পাইকগাছায় মিনহাজ নদীর মুখে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে পলি জমে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ শুষ্ক মৌসুমে খনন না করলে বর্ষা মৌসুমে দু'উপজেলার শতাধিক গ্রাম পানিবন্দী হয়ে হয়ে যেতে পারে। নদীটির মুখ খননের জন্য জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীরা পাইকগাছা-কয়রা সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। 
 
জানা গেছে, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মিনহাজ নদী। যা লস্কর ইউনিয়নের মিনহাজ বাজার থেকে কপোতাক্ষ নদের মাঠাম গেট পর্যন্ত ২৫১ একরের জলমহল ও প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা। এ নদী দিয়ে লস্কর, চাঁদখালী, গড়ইখালী ও কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম ও ২২টি মৌজার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। 

মিনহাজ চক গ্রামের শিক্ষক দিপক চন্দ্র মণ্ডল বলেন, মিনহাজ নদীর মুখে পলি পড়ে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে এক-দুই দিন বৃষ্টি হলেই এলাকা তলিয়ে যায়। এ বছর টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে পানি নামতে না পারায় অনেক ধান গাছ ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। পাকা রাস্তাও তলিয়ে যায়। ক্ষতি হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ির, মারা গেছে গাছপালা। যদি নদীর মুখ ছাড়া থাকত তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না। 

গোয়ালবাড়িয়া চকের বিজন মণ্ডল বলেন, সরকার এ নদীটি যাদের ইজারা দিয়েছে তাঁরা অপরিকল্পিতভাবে পানি ঢোকানোর ফলে পলি জমে ভরাট হয়েছে। 

গড়ইখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম কেরু বলেন, নদীর মুখ উঁচু হয়ে যাওয়ার ফলে পানি সরতে পারে না। সে কারণে এলাকা প্লাবিত হয়ে ফসল, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। 

চাঁদখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাজাদা আবু ইলিয়াস বলেন, আমার ইউনিয়নের ৬টি মৌজার ৩০টি গ্রামের পানি মিনহাজ নদী দিয়ে নিষ্কাশন হয়। নদীটির মুখ ভরাট হওয়ায় আমার এলাকায় অতিবর্ষণে পানি সরতে না পেরে ধান ও এলাকা ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

লস্কর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, মিনহাজ নদী লস্কর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার শাখা নদী গড়ইখালী, চাঁদখালী ও কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ। এ নদীটিতে প্রায় সাড়ে ৭ শত বিঘা জমি রয়েছে। লম্বায় রয়েছে প্রায় ১৫ কিলোমিটার। আমি নদীটি খননের জন্য ২০১১ সাল থেকে চেষ্টা করে আসছি। নদীটি ইজারা দেওয়ার ফলে অপরিকল্পিতভাবে পানি ঢোকানোই পলি পড়ে মুখ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমি বহুবার আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি তুলেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। 

বন্ধন সমবায় সমিতির ইজারাদার বিধান রায় বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে জলমহল কিনেছি। মাছ চাষ করতে হলে নদীতে পানিতো তুলতে হবে। তা না হলে আমরা কীভাবে টাকা বাঁচাব। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, নদীটির আয়তন ২৫২ একর। সে কারণে এটি খুলনা জেলা প্রশাসক স্যার ইজরা অনুমোদন দেন। আর ২০ একর পর্যন্ত আমরা ইজারা দিয়ে থাকি। নদীটির মুখ খননের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। যাতে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই খনন করা হয়। 

নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, নদীটি খনন করে দু'উপজেলার দুই লাখ মানুষের জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচাতে পাইকগাছা-কয়রা এমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত