Ajker Patrika

সবুজ ঘাস-খড়ে পালিত পাহাড়ি গরু, তবু দুশ্চিন্তা...

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) 
উপজেলার একসত্যাপাড়ায় মো. আনোয়ার হোসেনের খামারে সবুজ ঘাস-খড়ে মোটাতাজা হচ্ছে লাল ষাঁড় ও বলদ। গত শুক্রবার সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার একসত্যাপাড়ায় মো. আনোয়ার হোসেনের খামারে সবুজ ঘাস-খড়ে মোটাতাজা হচ্ছে লাল ষাঁড় ও বলদ। গত শুক্রবার সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সবুজ ঘাস ও খড় খাইয়ে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে কোরবানির উপযোগী লাল ষাঁড় ও বলদ মোটাতাজা করছেন খামারিরা। এসব গরুর মাংসে চর্বি কম, স্বাদ বেশি হওয়ায় সমতলের কোরবানিদাতাদের কাছে পাহাড়ি পশুর কদর বেশি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং সড়কপথে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় এবার বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা।

উপজেলার ১৫-১৬টি বড়, ৩০-৩২টি মাঝারি ও ছোট খামার এবং ১৫০-১৭০টি পরিবারে গড়ে ২৮০০-৩০০০ গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব পশুর খাদ্যতালিকায় ৭০ শতাংশ সবুজ ঘাস ও খড় এবং ৩০ শতাংশ খৈল, ভুসি। এতে গরুর শরীর হয় তেলতেলে, মাংস হয় সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর।

সরেজমিনে একসত্যাপাড়া, মুসলিমপাড়া, ডাইনছড়ি ও তিনটহরী এলাকায় দেখা গেছে, গৃহস্থ ও খামারিরা পশুদের শেষ পর্যায়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত।

একসত্যাপাড়ার খামারি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৭০ শতাংশ প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস ও খড়ে আমি দুটি দেশি বলদ ও একটি শাইওয়াল ষাঁড় মোটাতাজা করছি। বিগত কয়েক বছর ধরে ভেজাল খাদ্য পরিহার এবং চিকিৎসকের পরামর্শে সবুজ ঘাস চাষে গরু লালন-পালনে পরিচিত লাভ করেছি। ফলে কোরবানির গরু বাজারে তুলতে হয় না। আগেভাগে বাড়িতে এসে সমতলের কোরবানিদাতারা নিয়ে যান। এবার একটি ষাঁড় (শাইওয়াল), দুটি দেশি লাল বলদ আছে। ওজন গড়ে বলদ (৫৮০ ও ৬৫০ কেজি) এবং ষাঁড় (৬২০) কেজি লাইফওয়েট। সরাসরি বাড়িতে এসে লালন-পালনের দৃশ্য স্বচোখে দেখে গরু কেনার সুযোগ রয়েছে।’

একই গ্রামের মো. কামাল হোসেন ও মো. আবুল কালাম বলেন, ‘কোরবানির গরু লালন-পালনে আমরা বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হওয়ায় যত গরুই মোটাতাজা করি, হাটে নিতে হয় না। এবারও দুই পরিবারে ২০-২২টি দেশি ও শাইওয়াল ষাঁড় ও কয়েকটি দেশি বলদ বিক্রির যোগ্য হয়েছে।’

মুসলিমপাড়ার মো. হুমায়ন কবির দীর্ঘদিন ধরে গরু মোটাতাজা ও গরুর ব্যবসায় জড়িত। তিনি এবার ৯টি শাইওয়াল ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন। লাইফওয়েটে প্রায় প্রতিটি ৮০০-৯০০ কেজি।

আনু মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাহাড়ে সবুজ ঘাস, খড়ের সুবিধা থাকায় গরু মোটাতাজায় কিছুটা স্বস্তিদায়ক। বাজার থেকে ৩০ শতাংশ খৈল, ভুসির পাশাপাশি ৭০ শতাংশ সবুজ ঘাস ও খড়ে গরু কোরবানির উপযোগী করা হয়। বাজারের চাহিদা মাথায় রেখে আমি দেশি গরু লালন-পালন করি বেশি।’

তবে বিক্রি নিয়ে খামারিদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মো. আমির হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং সড়কে হাইজেকারের লুটপাটের ভয়ে শহরের ব্যবসায়ী বা কোরবানদাতারা এবার দূরবর্তী জায়গায় গরু কিনতে আসছে না! ফলে এবার কোরবানির গরু নিয়ে খামারিদের ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।’

কোরবানির বাজার ইজারাদার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে উপজেলার তিনটহরী ও মানিকছড়ি গরুর বাজার শুরু হলেও এখনো বাজার জমে ওঠেনি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ এলাকাছাড়া হওয়ায় বড় গরু নিয়ে এবার খামারিদের ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে! এ ছাড়া শহরের পাইকার বা কোরবানিদাতারা রাস্তাঘাটে ছিনতাইয়ের ভয়ে জনপদে আসতে চান না। শনি, রবি এবং পরবর্তী শনি ও রোববার বেচাকেনার ধুম পড়বে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাহাড়ের নির্ভেজাল সবুজ ঘাস ও খড়ে গরু লালন-পালন অনেকটা সহজ। ৭০ শতাংশ সবুজ ঘাস, খড় ও ৩০ শতাংশ খৈল, ভুসি খাওয়া গরুর শরীর তেলতেলে হয়। মাংসও তুলনামূলক স্বাদ বেশি, চর্বি কম থাকে। এবার উপজেলার অর্ধশত খামারে কোরবানির উপযোগী গরু ১ হাজার ৮০০, ছাগল ৪৬০। এ ছাড়া ১৫০-১৭০ পরিবারে গড়ে দুই-চারটা হারে বিক্রিযোগ্য গরু মোটাতাজা করা হয়েছে । আমরা (প্রাণিসম্পদ দপ্তর) নিয়মিত খামার ও গৃহস্থে নজরদারিসহ অনলাইন, অফলাইনে খামারি ও গৃহস্থকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। এ ছাড়া চলমান কোরবানির বাজারে নিয়মিত মেডিকেল টিম উপস্থিত থেকে রোগবালাইমুক্ত গরু-ছাগল বিক্রিতে আমাদের সহায়তা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তাল বুয়েট: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

‎বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় এই মামলা করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা করেছে। গতকাল রাতেই আটক থাকা ওই শিক্ষার্থীকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‎এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এতে রাতেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, যৌথ বাহিনীর হাতে আটক ৭

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
যৌথ বাহিনীর হাতে আটক ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌথ বাহিনীর হাতে আটক ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জ শহরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে হোসেনপুর ও লালসাবাড়ি এলাকার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদরের পৌর এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়।

পরে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করে সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের তরুণদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে মঙ্গলবার রাতে দুই পক্ষের প্রায় ২ হাজার মানুষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন বুধবার সকালে বলেন, মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনী সাতজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। তবে তিনি আটক ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদা না পেয়ে মেশিন লুট নেতা-কর্মীর

  • গত মাসে বালু বিক্রয় কেন্দ্রে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
  • অভিযুক্তদের মধ্যে বিএনপির একজন নেতাও রয়েছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।

মোজাহের হোসেন মিঞা নামের ওই ব্যবসায়ী নিজেকে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দাবি করেস। অভিযোগে তিনি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন। অভিযোগে সুনির্দিষ্টভাবে চারজনের নাম উল্লেখ করেন। তাঁরা হলেন এস এম ফারুক, শাখাওয়াত হোসেন মিশু, গাজী ফোরকান ও মো. জাহাঙ্গীর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের মধ্যে এস এম ফারুকের প্রকৃত নাম হচ্ছে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। যিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ ছাড়া শাখাওয়াত হোসেন মিশু কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রদলের একজন আহ্বায়ক পদপ্রার্থী। বাকি দুজন আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির লোক।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জামাল উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকালই (সোমবার) মাত্র অভিযোগটা হাতে পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগে ওই ব্যবসায়ী উল্লেখ করেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কয়েকজন ব্যক্তি কর্ণফুলী থানার কৈয়গ্রাম সেতু রোডে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তাঁকে ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাঁদের কথামতো সময়মতো চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বালু বিক্রয় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ ও সিসি ক্যামেরার লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন চাঁদা দাবিকারীরা। ২০ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এ কথা জানতে পেরে ওই ব্যক্তিরা ২৬ সেপ্টেম্বর আবার বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের ২৫ লাখ টাকার মূল্যের ১টি এক্সকাভেটর ও ড্রেজার মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ ৩৫ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

মোজাহের হোসেন অভিযোগ করেন, গত শনিবার রাতে আবার ৫০-৬০ জন লোক এসে কর্ণফুলী কৈয়গ্রামের খালে রাখা খননযন্ত্রে স্টাফদের মারধর করে, পরে সেখানে থাকা খননযন্ত্রটি লুট করে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করলে থানার সহায়তায় খননযন্ত্র পাশের উপজেলা আনোয়ারার উপকূলে পাওয়া যায়। সেখানে পুলিশ পরে স্থানীয় ও নগর পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য আলমগীর নামের একজনের জিম্মায় যন্ত্রটি রাখা হয়। কিন্তু এখনো প্রতিষ্ঠান খননযন্ত্র বুঝে পায়নি।

ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খননযন্ত্র আনোয়ারা উপকূলে উদ্ধারের খবরে রোববার তা নিতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাধা দেন। এ সময় তাঁরা হত্যার হুমকি দেন। পরে ভয়ে খননযন্ত্র না নিয়ে আমরা চলে আসি। ঘটনার বিষয় থানা-পুলিশের পাশাপাশি নৌ পুলিশকে অবহিত করি, তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠানের লুট হওয়া মালপত্র আমরা ফেরত পাইনি।’

অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, ‘যেদিন খননযন্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন আমি নিজেই পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছিলাম। আমি কেন খননযন্ত্র লুটের সঙ্গে জড়াব।’ এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখানে মূলত মালিকানা নিয়ে সমস্যা। সেখানে আমি একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে আসছি। উল্টো আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। আর যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আমি চিনি না।’

বিএনপির নেতার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা বলেন, ‘ওনারা যখন ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আমরা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি। পরে তাঁরা চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেওয়ার দাবি করেন। এভাবে কারও প্রতিষ্ঠানের কি মালিকানা দাবি করা যায়। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ব সব নথিপত্র তো আমার কাছেই আছে।’

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, এ বিষয়টি বর্তমানে সহকারী কমিশনার কার্যালয় তদন্ত করছে। তাঁদের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য মো. আলমগীর বলেন, ‘খননযন্ত্র এখন আমার জিম্মায় আছে। যখন মালিকের জিম্মায় দিতে যাই, তখন সেখানে কয়েকজন আমাদের বাধা দেওয়ায় চলে আসি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অরক্ষিত পাম্পঘর: ওয়াসার তার চুরির হিড়িক

  • পানি সরবরাহ বন্ধে দুর্ভোগ গ্রাহকদের।
  • পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
অরক্ষিত পাম্পঘর: ওয়াসার তার চুরির হিড়িক

রাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন পাম্পঘরে চুরির ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়াসার ১২৩টি পাম্পঘর রয়েছে। কিন্তু বৈদ্যুতিক তার চুরি যাওয়ায় পাম্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এলাকাবাসী। গত কয়েক মাসে শারীরিক শিক্ষা কলেজ, বিসিক, বুধপাড়া বাইপাস, দায়রাপাক মোড় ও খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরে তার চুরি হয়েছে।

রাজশাহী ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘রাতে পাম্প চলে না। এ জন্য অপারেটররা সেখানে থাকেন না। আর আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। ফলে রাতে চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিচ্ছি।’

গতকাল মঙ্গলবার ওয়াসা কার্যালয়ে এসেছিলেন খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরের চালক মো. চাঁদ। তিনি জানান, গত রোববার রাতে তাঁর পাম্পঘর থেকে তার চুরি হয়। নতুন তার না লাগানো পর্যন্ত পাম্প বন্ধ ছিল।

ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, এমনিতেই তাদের জনবল সংকট। ফলে রাতে পাম্পঘরে চালক থাকেন না। এ সুযোগে চুরি হচ্ছে। গতকাল দুপুরে খোজাপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাতে তার চুরির পর থেকেই পাম্প বন্ধ। পাম্পও চালু হয়নি। এলাকায় পানি সরবরাহ নেই। এটা পুরো এলাকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ।’

আরএমপির মুখপত্র গাজিউর রহমান বলেন, ‘পাম্পগুলো অরক্ষিত থাকে। এই সম্পদ ওয়াসার। তাই এটি রক্ষার পরিকল্পনাও তাদের থাকা দরকার। তবে আমরা চুরির যেসব অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলোর তদন্ত চলছে। চোর চক্রকে ধরার চেষ্টা চলছে। ওয়াসা যে ঠিকানাসহ তালিকা দিয়েছে, সেসব এলাকায় ইতিমধ্যে পুলিশের রাত্রীকালীন টহল বাড়ানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত