Ajker Patrika

প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উপাদান: মডারেটর বিস্মিত, ফোন বন্ধ প্রশ্নকর্তার

যশোর ও ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ২১: ৫৫
প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উপাদান: মডারেটর বিস্মিত, ফোন বন্ধ প্রশ্নকর্তার

উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষার একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের উপাদান কীভাবে থাকল তা বুঝতে পারছেন না ওই প্রশ্নপত্রের চার পরিশোধনকারীর (মডারেটর) একজন।

যিনি এই প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্বে ছিলেন, ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। তবে তাঁর সহকর্মী ও এলাকাবাসী বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তাঁর হাত দিয়ে এমন কাজ হতে পারে!

ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এই ঘটনায় ‘জড়িত বলে চিহ্নিত’ যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে প্রশ্ন পরিশোধনকারীর (মডারেটর) তালিকার এক নম্বরে আছেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন।

ওই প্রশ্নপত্রের বিষয়ে ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রশ্ন থাকলে তা সংশোধন করে দেওয়া হয়; অথবা কেটে নতুন প্রশ্ন সংযোজন করা হয়। কিন্তু কীভাবে, এই প্রশ্নটি রয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না।’

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা প্রথম পত্রের ‘কাসালাং’ প্রশ্নপত্র।এই প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্বে ছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

প্রশান্ত কুমারের ভাই কালীপদ পাল জানান, প্রশ্নপত্রের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না তিনি। তাঁর ভাই প্রশান্ত কুমার পালের স্ত্রী ও দুই সন্তান ভারতে বসবাস করেন। মাঝে মধ্যে বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন।

প্রশান্ত কুমার কলেজের কাছাকাছি এলাকাতেই থাকেন। এলাকায় সবাই তাঁকে চেনেন কবি হিসেবে। কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছেও তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
 
ওই এলাকার বাসিন্দা আজাদ হোসেন বলেন, ‘এলাকার সবাই তাকে ভালো মানুষ হিসেবে চেনেন। এই ঘটনা সবাইকে হতবাক করেছে।’
 
ওই কলেজের অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে এই কলেজে যোগদান করেন। কখনো তাঁর (প্রশান্ত) মধ্যে খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। তিনি সাহিত্যমনা মানুষ। তাঁর সাতটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। এলাকায় যারা সাহিত্য চর্চা করেন তাঁদের সঙ্গেই ঘোরাফেরা করেন।

প্রশান্ত কুমার পাল প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার কলেজেও উপস্থিত হয়েছিলেন, তবে বেশিক্ষণ অবস্থান করেননি বলে জানান অধ্যক্ষ।

বলাই চন্দ্র বলেন, ‘প্রশান্ত কুমার পাল একজন ভালো শিক্ষক। তাঁর হাত দিয়ে এমন প্রশ্ন কীভাবে হলো তা বুঝতে পারছি না!’

এ বিষয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে এমন প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও কীভাবে এ প্রশ্ন করা হলো, সেটি তদন্তের জন্য দ্রুত একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারী পাঁচ শিক্ষকই যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

গত রোববার অনুষ্ঠিত হয় ওই পরীক্ষা। প্রশ্নপত্রের একটি সেট ‘কাসালাং’–এ সিরাজউদ্দৌলা নাটক অংশের ১১ নম্বর প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের উপাদান রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আমরণ অনশনে বসেছেন দুই শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন তাঁরা। এর আগে দুদিন প্রতীকী অনশন করেন তাঁরা।

আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন নাট্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাদেক রহমান এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও দর্শন বিভাগের ফুয়াদ রাতুল।

ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের কল রেকর্ড প্রকাশ হওয়ার পরও প্রশাসন বিষয়টি এআই নির্মিত বলে ধামাচাপা দেয়। লিখিত পরীক্ষায়ও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা আমরণ অনশনে বসেছি।’

অন্য অনশনরত শিক্ষার্থী সাদেক রহমান বলেন, ‘শখ করে কেউ আমরণ অনশনে বসে না। যখন সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তখনই মানুষ এ পথ বেছে নেয়। আমরা মব সৃষ্টি করিনি, নিয়মের পথেই লড়াই করছি। দাবি পূরণ না হলে প্রশাসনকে আমাদের লাশের ওপর দিয়েই সিন্ডিকেট সভায় বসতে হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪ ঘণ্টা এবং শুক্রবার ৮ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন করেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে গতকাল উপস্থিত হয়েছিলেন নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক কাজী সুস্মিন আফসানা।

অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া বলেন, ‘অভিযোগ ওঠার পরও বিভাগের সভাপতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেননি। আমি প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।’ এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মীর মেহবুবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার। জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে যেসব সংবাদ ও ফোনালাপের অডিও প্রকাশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম আসাদুল হককে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্যসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেয়ের বাড়িতে যাওয়া হলো না মায়ের

মাদারীপুর প্রতিনিধি
দুর্ঘটনাকবলিত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনাকবলিত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় এক নারী পথচারী মারা গেছেন। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের উকিলবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারী পথচারী হলেন ফাতেমা বেগম (৫৫)। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপারা মোল্লাকান্দি এলাকার জব্বার মোল্লার স্ত্রী।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ফাতেমা বেগম তাঁর নিজ বাড়ি থেকে একই উপজেলার উকিলবাড়ি এলাকায় মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। আজ দুপুরে মেয়ের বাড়িতে তাঁর কাজির ভাত খাওয়ার দাওয়াত ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উকিলবাড়ি এলাকায় একটি লোকাল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়ার সময় পথচারী ফাতেমা বেগমকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। আমাদের দুটি ইউনিট গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে এক পথচারী নারী মারা গেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রাহকদের বকেয়া না দিয়ে পালানোর চেষ্টায় কর্মকর্তারা, অবরোধ-বিক্ষোভ

শিপুল ইসলাম, রংপুর
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের রংপুর জোনাল অফিসে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকার বিমা পরিশোধ না করে অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন কর্মকর্তারা—এমন খবর পেয়ে গ্রাহকেরা দ্রুত অফিসে গিয়ে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার মধ্যরাতে অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আসবাব ও দামি সরঞ্জাম বিক্রি করে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করলে সন্দেহ হয় স্থানীয় গ্রাহকদের। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে অফিসে গিয়ে মালপত্র আটক করেন এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহির জন্য অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকে অফিসের সামনে গ্রাহকের ভিড় করতে শুরু করে দুপুর গড়তেই জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোডে জামাল মার্কেটের সামনে অফিসের নিচে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জাহাজ কোম্পানি-স্টেশন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গ্রাহকেরা। এ সময় অফিসের লকার, চেয়ার-টেবিল, আসবাবসহ একটি ট্রাক দেখা যায়। অফিস কক্ষে চারজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রংপুর বিভাগের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকারও বেশি বিমা দাবি এখনো পরিশোধ করেনি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা টাকা না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।

রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের আট জেলায় ২৯ হাজার ৫৯৬ জন গ্রাহকের বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে, যার বিপরীতে ১২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকারও বেশি পরিশোধ বকেয়া রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ধরে শুধু আশ্বাসই পাচ্ছেন।

রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থান নেওয়া গ্রাহক নগরীর ভগিবালা এলাকার বৃদ্ধা আকলিমা বেগমের দুই বছর আগে বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা দীর্ঘদিন ঘুরেও পাননি। আক্ষেপ করে আকলিমা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, অনেক কষ্ট করে টাকা জমাইছি। সেই টাকা না দিয়ে অফিস নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বিমা কোম্পানি লোকজন। আমার কষ্টের টাকা আমি ফেরত চাই। খবর পেয়ে সবার সঙ্গে এখানে অবস্থান নিচ্ছি।’

আরেক গ্রাহক নগরের আদর্শপাড়া গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যতে ভালোর আশায় রিকশা চালিয়ে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না-খেয়ে ১২ বছর ধরে টাকা জমিয়েছি। সেই টাকা না দিয়ে ফারইস্ট কোম্পানি অফিসের মালপত্র বিক্রি করে পালিয়ে যাচ্ছে। এই টাকা না পেলে পথে বসে যাব। আমার রক্ত-মাংস পানি করা টাকা আমি ফেরত চাই। এ জন্য আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।’

রাস্তায় বসে বিমার কাগজপত্র নাড়াচাড়া করছিলেন আর চোখ দিয়ে জল পড়ছিল হারাগাছ এলাকার সায়েম বাদশা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে যেন ভালোভাবে চলতে পারি, সেই আশায় বিমা করেছিলাম। না খেয়ে কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা করে জমিয়েছিলাম। মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে, কিন্তু এখনো টাকা পাইনি। সরকার কাছে দাবি আমাদের আসল টাকাটা যেন ফেরত নিয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে অস্ত্র-গুলিসহ ৪ নারী গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার হওয়া গুলি ও অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাসে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ চার নারীকে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার ভোর পর্যন্ত উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিতাস-অস্ত্র২
তিতাস-অস্ত্র২

গ্রেপ্তার নারীরা হলেন শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা (২৯), জসিমের স্ত্রী আমিনা (৩৭), জহিরের স্ত্রী জুবেদা (৩৩) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী শান্তি বেগম (৬০)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিতাস থানা-পুলিশের একাধিক টিম শাহপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে ১টি বিদেশি রিভলবার, ৬টি গুলি, ১টি এলজি বন্দুক, ২টি পাইপগান উদ্ধারসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একই রাতে একই এলাকার আব্দুল কাদিরের বাড়িতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০টি সিসা কার্তুজ ও ৫টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত