Ajker Patrika

ভুল রক্ত দেওয়া সেই বৃদ্ধার অবস্থার অবনতি, উন্নত চিকিৎসার সামর্থ্য নেই পরিবারের

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ২০: ২৫
ভুল রক্ত দেওয়া সেই বৃদ্ধার অবস্থার অবনতি, উন্নত চিকিৎসার সামর্থ্য নেই পরিবারের

যশোর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর শরীরে তিন ব্যাগ ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়া ওই বৃদ্ধার শরীরে নতুন করে নানা রোগ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ৭৭ বছর বয়সী বৃদ্ধা সালেহা বেগম। বৃদ্ধার স্বজনেরা জানান, সালেহার স্বাস্থ্যের দিন দিন অবনতি হচ্ছে। পুরোনো রোগের সঙ্গে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে বোনম্যারো, কিডনি ও হার্টের। এমন অবস্থায় উৎকণ্ঠায় শয্যাশায়ী ওই বৃদ্ধার স্বজনেরা। 

এদিকে এ ঘটনায় ৬ জুন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক গৌতম কুমার আচার্যকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল প্রশাসন। কমিটিকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বর্তমানে ওই রোগী জেনারেল হাসপাতালের মহিলা পেয়িং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তিনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের খড়িঞ্চা হেলাঞ্চি গ্রামের মৃত শামসুর রহমানের স্ত্রী। 

ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনেরা জানান, বার্ধক্যজনিত রোগে গত ২০ মে যশোর মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসকের পরামর্শে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সালেহা বেগমকে। সালেহার শরীরে রক্তশূন্যতার কারণে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রক্ত দেওয়ার জন্য হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে গিয়ে সালেহার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেন স্বজনেরা। সেখানে সালেহার রক্তের গ্রুপ আসে বি পজিটিভ। 

এরপর ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সালেহার স্বজনদের ‘বি’ পজিটিভ রক্তদাতাকে খুঁজে আনতে বলেন। বি পজিটিভ গ্রুপের রক্তদাতাকে এনে সালেহার শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। ২০, ২২ ও ২৪ মে তিন দিন তিন ব্যাগ বি পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়। যদিও ওই বৃদ্ধার রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ। 

তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়ার দুই দিন পর সালেহার পরিবার তাঁকে গ্রামে নিয়ে যান। গ্রামে গিয়ে সালেহার শরীর জ্বালাপোড়া, বমিসহ খিঁচুনি শুরু হয়। এসব উপসর্গের কারণে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২ জুন (সোমবার) বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে আবারও যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক সালেহাকে আবারও রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন। 

চিকিৎসকের পরামর্শে ৩ জুন (মঙ্গলবার) সকালে বি পজিটিভ রক্তদাতাকে নিয়ে সালেহাকে রক্ত দিতে গেলে সেই ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাই বলেন, সালেহার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ না। তাঁর রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। এরপর রোগীকে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে রোগীর স্বজনেরা হট্টগোল শুরু করেন। পরবর্তীকালে হাসপাতালের কর্মকর্তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিন যশোর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা পেয়িং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ভুক্তভোগী রোগী হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী। কোনো কথা বলতে পারছেন না। মানুষের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছেন। স্বজনের ভাষ্য, মৃত্যু পথযাত্রী সালেহা বেগমকে দেখতে আসছে স্বজনেরা। অনেকেই বেডে বৃদ্ধাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছেন। হাসপাতালের নার্সের সঙ্গে নিয়মিত দেখাশোনা করছেন তাঁর তিন মেয়ে।

বৃদ্ধার মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মায়ের দিন দিন স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। কিছু খেতে পারছে না। শরীর একদম রুগ্‌ণ হয়ে গেছে। হাসপাতালে যখন মাকে নিয়ে আসি, তখন আমাদের হাত ধরে হেঁটে হাসপাতালের চারতলায় উঠেছিল। এখন মাকে তিন–চারজন কোলে তুলে টয়লেটে নিয়ে যাওয়াসহ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করতে হচ্ছে।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকের পরামর্শে মাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম সুস্থ করতে, অথচ আমার মা এখন মৃত্যু পথযাত্রী। চিকিৎসকের পরামর্শে মায়ের বিভিন্ন পরীক্ষা করেছি। সেখানে মায়ের বোনম্যারোর সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভুল রক্ত দেওয়া আগে মায়ের কিডনির ক্রিয়েটিনিন লেভেল ছিল ১ দশমিক ৫০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার। এখন সেটি বেড়ে ২ দশমিক ২২ হয়েছে। প্রস্রাবের নালিতে সংক্রমণসহ দেখা দিয়েছে হার্টের সমস্যা। এখানকার চিকিৎসকেরা মাকে বিভিন্ন চিকিৎসা দিচ্ছে—এটা সত্য। তবে তাঁরা বলছেন মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে নিয়ে যেতে। তবে পরিবারের অসামর্থ্যের কারণে সেখানে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’ 

ভুক্তভোগী ওই রোগীর আরেক মেয়ে শিরিনা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের ভুলের কারণে আমার মা এখন জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি এখন খুব অসুস্থ। তাঁর শরীরের অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। সুস্থ করার জন্য আমার মাকে হাসপাতালে এনেছি, এখন তাঁর অবস্থা খারাপ। এ ঘটনার বিচার চাই।’ 

এদিকে এ ঘটনায় ৬ জুন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগরে চিকিৎসক গৌতম কুমার আচার্যকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি করেছে হাসপাতাল প্রশাসন। 

এ বিষয়ে গৌতম কুমার আচার্য বলেন, ‘রোগী শঙ্কামুক্ত নয়। রোগীর নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা তদন্তের কাজ শুরু করেছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।’ 

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন আর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। ঘটনা ঘটার পরে ভুক্তভোগী রোগীদের স্বজনদের অভিযোগে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাদেরকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে রক্তের কিছু উপাদানও কম রয়েছে। যার কারণে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে বেগ পেতে হয়েছে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন কর্মীদের। যার ফলে এমন সমস্যা হতে পারে। তারপরও তদন্ত করা হচ্ছে। কারও কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে অপহৃত স্কুলছাত্র উদ্ধার

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
টেকনাফে অপহৃত স্কুলছাত্র উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অপহৃত এক স্কুলছাত্রকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ কাউছার সিকদার।

তিনি জানান, ২১ অক্টোবর দুপুরে রিয়াজ উদ্দিন শখের বশে তার বাবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে অজ্ঞাতপরিচয় একদল অপহরণকারী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন গহিন পাহাড়ে একদল সশস্ত্র ডাকাতের অবস্থানের খবর পায় পুলিশ। এপিবিএন ও জেলা পুলিশের যৌথ একটি দল সেখানে অভিযান চালালে অপহরণকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভিকটিমকে ফেলে পালিয়ে যায়।

অভিযান শেষে নিরাপদে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। পরে তাকে নয়াপাড়া এপিবিএন ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয় এবং পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তার ব্যবহৃত অটোরিকশাটিও উদ্ধার করা হয়।

১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ কাউছার সিকদার বলেন, ‘অপহরণের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে এপিবিএন সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এসপি-ওসির বিরুদ্ধে এসআইয়ের স্ত্রীর মামলা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) এসপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ আটকের অভিযোগে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমলি আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলায় নামীয় তিনজন ও অজ্ঞাতনামা দু-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে গাইবান্ধা সদর আমলি আদালতে ভুক্তভোগী এসআই মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলী খাতুন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আসামিরা হলেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার (এসপি) নিশাত এ্যঞ্জেলা, গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার ও লালমনিরহাট জেলার তারেকুজ্জামান তুহিন (২৩) নামের এক ব্যক্তি। তারেকুজ্জামান পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারি-ইসলামপুর এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ও ভুক্তভোগী এসআই মনিরুজ্জামানের বোনের সাবেক স্বামীর মামাতো ভাই।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদীর স্বামী এসআই মনিরুজ্জামান তখন গাইবান্ধা সদর থানায় কর্মরত ছিলেন। মনিরুজ্জামানের আত্মীয় আসামি তারেকুজ্জামান তুহিন পারিবারিক পূর্বশক্রতার জেরে ফেসবুকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে ছবি প্রকাশ করাকে কেন্দ্র করে এসআই মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা এসপি কার্যালয়ে একটি মৌখিক অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগে চলতি বছরের ২৫ মার্চ পুলিশ সুপার ও ওসি এসআই মনিরুজ্জামানকে এসপি কার্যালয়ে ডেকে নেন। মনিরুজ্জামান এসপি কার্যালয়ে প্রবেশ করা মাত্রই গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোপ মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে তাঁর মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ১৩ হাজার টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নেন। পরে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ যাচাই-বাছাই শেষে ডিভাইসগুলো সদর থানার ওসির কাছে আটক রাখেন। এ সময় বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করলে চাকরির ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখানো হয় মনিরুজ্জামানকে। একপর্যায়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মনিরুজ্জামানকে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর তালুকদার বলেন, ‘সদর থানার এসআই মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলী খাতুন তারেকুজ্জামান তুহিন নামের এক আত্মীয়ের নামে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ান। গাইবান্ধা এসপি অফিসে এসে তুহিন বিষয়টি জানালে মনিরুজ্জামানের মোবাইল ও ল্যাপটপটি চেক করা হয়। পরে তাঁকে ফেরত দেওয়া হয়। মামলা করার বিষয়টি শুনেছি।’

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার (এসপি) নিশাত এ্যঞ্জেলার সরকারি ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভরণপোষণ না দেওয়ায় ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে বাবার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর পবায় ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন এক বাবা। আদালতের আদেশ পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার মামলাটি পবা থানায় রেকর্ড হয়।

মামলার বাদী আমির হোসেন সরকারের (৭০) বাড়ি পবা উপজেলার নওহাটা কলেজ মোড় এলাকায়। মামলায় ছেলে বোরহান উদ্দিন (৪৫) এবং পুত্রবধূ আয়েশা বেগম আশাকে (৩৬) আসামি করেছেন তিনি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আমির হোসেন সরকার ছেলে বোরহান উদ্দিনের নামে বাড়িসহ ছয় শতক জমি কিনেছিলেন। ২০০০ সালে বোরহান সৌদি আরবে চলে যান। বিদেশে থাকা অবস্থায় বোরহান জমিটি তাঁর বাবাকে আমমোক্তার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) নিযুক্ত করেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার করছেন বোরহান। এখন মা-বাবাকে ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে নতুন করে বাড়ি করার চেষ্টা করছেন।

আমির হোসেন খানের অভিযোগ, ছেলে তাঁর দেখভাল করেন না। কোনো টাকাপয়সাও দেন না। সম্প্রতি রাজশাহীর পবা থানার আমলি আদালতে গিয়ে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১৩ অনুযায়ী মামলার আবেদন করেন আমির হোসেন। ৫ অক্টোবর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান সরকার অভিযোগটি সাত দিনের মধ্যে মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ পেয়ে আজ এ মামলা রেকর্ড হয়।

আমির হোসেন সরকার বলেন, ‘সহায়-সম্বল বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। বাড়িটাও কিনেছিলাম ছেলের নামে। সে সৌদি আরবে ২৫ বছর থেকে অনেক টাকাপয়সা রোজগার করেছে। এই বয়সে নানা অসুস্থতা আর অভাব-অনটনে জীবন যাপন করলেও ছেলে খোঁজ নেয়নি। ছেলের বউ আমাদের কোনো টাকাপয়সা দিতে দেয় না। ছেলে দেশে ফিরে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে নতুন করে বাড়ি করার পরিকল্পনা করে। এ বাড়িতে আমার দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকি। সে আমাদের বের করে এখানে বাড়ি করতে চায়। এতে রাজি না হলে সে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে। গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা আমাদের উদ্ধার করে।’

অভিযোগের বিষয়ে বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিদেশ কাজ করেছি ২৫ বছর। আশপাশে ইনকোয়ারি করলে আসল বিষয়টা বুঝতে পারবেন। আমার ভাইবোন—সবার পেছনে খাটতে খাটতে শেষ। দেশে আসার পরে আমি দেড় বছর ধরে বেকার। ভরণপোষণ দেব কোথা থেকে?’ মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আরও দুইটা ভাই আছে। সব দায়দায়িত্ব কি আমার একার, না অন্যদেরও আছে?’

পবা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মামলাটি তদন্ত করছি। আমার জানামতে, পবা থানায় এ ধরনের মামলা এবারই প্রথম হলো। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহমখদুম জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বৃদ্ধ পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের অবহেলা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। ২০১৩ সালে সরকার “পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন” প্রণয়ন করে। এই আইনে প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনো সন্তান এই দায়িত্ব পালন না করলে এক লাখ টাকা জরিমানা বা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান আছে। অনেক বৃদ্ধ পিতা-মাতা পারিবারিক চাপে পড়ে নীরবে কষ্ট সহ্য করেন। মামলা করতে সাহস পান না। এই মামলা হয়তো অন্যদেরও সচেতন করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পিরোজপুরের নেছারাবাদের সেই বিতর্কিত ইউপি সদস্য মো. সোহাগ মৃধাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একটি মারামারির মামলায় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বলদিয়া ইউনিয়নের রাজবাড়ী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহাগ মৃধা বলদিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (২২ অক্টোবর) স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সোহাগ মৃধা বলেছিলেন, ‘আমি বিএনপি করে শ ম রেজাউলের আমলে মামলায় জেল খেটেছি। এমনকি আমাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী থেকে আমি কাজ করে যাচ্ছি।’

আগের সংবাদ:

সোহাগ মৃধাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বনি আমিন জানান, একটি মারামারির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা একসময় বিএনপি পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। পরে আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশংসামূলক বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন। এরপর আওয়ামী লীগ পরিচয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। সম্প্রতি আবার বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে নতুন করে আলোচনা আসেন।

সোহাগের চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘সোহাগ মৃধা খুবই খারাপ মানুষ। সম্পত্তির ওয়ারিশ বঞ্চিত করতে আমাকে ও তার ছোট ভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করছে। এমনকি মামলা থেকে রেহাই পেতে ৫০ হাজার টাকা দিলেও নিস্তার পাইনি।’

ওসি বলেন, সোহাগ মৃধার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে মারামারির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত