Ajker Patrika

চাঁদা না পেয়ে একজনকে কুপিয়ে খুন, আহত ৪

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
এই দোকানে হামলা ও মারপিটের শিকার হন একই পরিবারের পাঁচজন। ইনসেটে নিহত মিন্টু হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
এই দোকানে হামলা ও মারপিটের শিকার হন একই পরিবারের পাঁচজন। ইনসেটে নিহত মিন্টু হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের মনিরামপুরে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে একই পরিবারের পাঁচজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পরে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিন্টু হোসেন (৪০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মনিরামপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত মিন্টু হাকোবা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। হামলার শিকার মিন্টুর দুই ভাই সেন্টু ও পিকুল এবং তাদের মা-বাবা চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে সেন্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

হামলার শিকার পিকুল হোসেন বলেন, ‘হাকোবা এলাকার সাব্বির হোসেন নামে এক ব্যক্তি আমার ভাই সেন্টুর চায়ের দোকানে এসে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় সাব্বির আমার ভাই সেন্টুর চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দিতে যায়। এ সময় আমরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে সাব্বির চলে যায়। পরে দলবল নিয়ে এসে আমাদের তিন ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। হামলাকারীদের বাড়িও হাকোবা গ্রামে।

এদিকে এ ঘটনায় নিহত মিন্টুর মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফারুক ও ছোট সাব্বির নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মূল হোতা বড় সাব্বির পলাতক রয়েছেন।

নিহত মিন্টুর বাবা আব্দুল আজিজ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘দুই বছর আগে আমার মেজ ছেলে সেন্টুর ভ্যান চুরি হয়। তখন হাকোবা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজিম নতুন ভ্যান কেনার জন্য আমাদের পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা দেন। এরপর আজিম আর টাকা ফেরত চাননি। আজিম কাউন্সিলরের দেওয়া সেই টাকা এক মাস ধরে আমাদের কাছে দাবি করছে হাকোবা এলাকার সাব্বির নামে এক ব্যক্তি। আমরা বলেছিলাম, আজিমকে সঙ্গে আনলে টাকা দিয়ে দেব। কিন্তু সাব্বির কাউন্সিলর আজিমকে এক দিনও সঙ্গে আনতে পারেনি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার এক ছেলের চায়ের দোকানে এসে সাব্বির ফের টাকা চায়। টাকা না পেয়ে নানা হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। এ সময় আমরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে সাব্বির চলে যায়। পরে পাঁচ-ছয়জন সঙ্গী নিয়ে এসে সাব্বির আমার তিন ছেলে ও আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ওপর হামলা করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে সবাইকে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ আসার পর ওরা পালিয়ে যায়। এরপর আমাদের পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

আব্দুল আজিজ আরও বলেন, ‘আমার বড় ছেলে মিন্টুকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার মেজ ছেলেকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাতে বড় ছেলে মারা গেছে। মেজ ছেলের অবস্থাও ভালো না। সেজ ছেলে পিকুলের মাথায় ব্যান্ডেজ।’

এদিকে যুবলীগ নেতা ও হাকোবা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজিমের কাছে বিষয়টি জানতে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সেন্টুর বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা সাব্বিরের বিষয়ে আজিম কাউন্সিলরকে জানালে তিনি বলেছেন, আমি সাব্বিরকে টাকা নিতে বলিনি।’

এসব বিষয়ে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি।

মারপিটের ঘটনায় মনিরামপুর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অরূপ ঘোষ বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সাব্বির ও ফারুক নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রধান আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রিজন ভ্যান থামিয়ে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা, ১১ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই, সুবিধা কী

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যাচ্ছেন না মোদি, কী বার্তা দিচ্ছে দিল্লি

মাজার ভেঙে লাশ পোড়ানোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক নেই: ইসলামী আন্দোলন

নুরাল পাগলার দাফনকে কেন্দ্র করে যেভাবে সহিংসতা ঘটল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত