Ajker Patrika

শাহীন চাকলাদারের ত্রাসের রাজত্ব

জাহিদ হাসান, যশোর
শাহীন চাকলাদারের ত্রাসের রাজত্ব

যশোর শহরের কাজিপাড়ার কাঁঠালতলা মোড়। এখানে দাঁড়িয়ে উত্তর দিকে তাকালেই দেখা যাবে ভাঙা আর আগুনে পোড়া তিনতলা বাড়ি। তালাবদ্ধ এ বাড়িটির মালিক যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। বাড়ির গা ঘেঁষেই সাদা রঙের একতলা ভবন। ভেতরে ভাঙচুর ও আগুনের ক্ষতচিহ্ন। এ ভবনটির মালিকও শাহীন। এটি তিনি ব্যক্তিগত, দলীয়, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন।

গত বুধবার বিকেলে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি ভাঙা ও পোড়া বাড়িটি দেখছিলেন। তাঁর কাছে যেতেই বলে উঠলেন, ‘কয়েক দিন আগেও এখানে কত ক্ষমতা, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ হতো। চাকলাদারের কথায় কতজনের মায়ের কোল খালি হয়েছে! আর এখন বাড়িতে কেউ নেই। হাহাকার করছে। সবই সৃষ্টিকর্তার খেল!’

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট শাহীনের ওই বাড়ি ও পাশের অফিসে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আগেই তিনি পরিবার নিয়ে সটকে পড়েন। সরকার পতনের পর থেকে তাঁকে আর যশোরে দেখা যায়নি। শাহীন চাকলাদার গা ঢাকা দিলেও যশোরবাসীর কাছে তিনি আতঙ্কের নাম। তাঁর অপকর্মের বিষয়ে এখনো কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।

দুর্নীতি দমন কমিশন তাঁর সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে। ইতিমধ্যে শাহীন চাকলাদার এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগে হঠাৎ আগন্তুক শাহীন 
দলীয় নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকেও শাহীন চাকলাদার নিয়মিত পারিবারিক ওষুধের দোকানে বসতেন। হঠাৎ ২০০১ সালে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হন তিনি। ২০০৪ সালে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন শাহীন চাকলাদার। এর পাঁচ বছরের মাথায় তিনি আওয়ামী লীগ থেকে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন ২০১৪ সালে। এরপর ২০২০ সালে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে উপনির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। কেশবপুরে দলীয় নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন, নিয়োগ-বাণিজ্যের কারণে তিনি হারেন বলে মন্তব্য করেন নেতারা।

এই পরাজয়ের আগে যশোরের সবকিছুতে একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন শাহীন। জেলায় ২০০৯ থেকেই শুরু শাহীন চাকলাদারের একক আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি। তাঁর এই পথে যাঁরা বাধা হয়েছিলেন তাঁদের সরাতে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে শাহীন চাকলাদার নিজেই সন্ত্রাসীদের গডফাদারে পরিণত হন। তিনি নিজেও সব সময় সন্ত্রাসী-আতঙ্কে থাকতেন। তাঁর বাড়ি ও অফিসে বসানো সিসি ক্যামেরা এবং চলাফেরার ধরন দেখেই এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়। নিরাপত্তার জন্য সরকার অনুমোদিত গানম্যান ছিল তাঁর। এর বাইরেও তিনি যখন চলাফেরা করতেন, তাঁর আগে-পিছে গোটাদশেক মোটরসাইকেলের বহর দেখা যেত।

‘অবৈধ’ সম্পদের পাহাড় 
২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে শাহীন চাকলাদার অবৈধভাবে অঢেল বিত্তবৈভবের মালিক হন। সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, শাহীন শহরের কাজিপাড়ায় পৈতৃক বাড়ির বাইরেও বহু স্থানে বানিয়েছেন বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শহরের চিত্রা মোড়ে ১৭ তলাবিশিষ্ট পাঁচতারকা হোটেল, কাঁঠালতলায় অত্যাধুনিক তিনতলা বাড়ি ও বড় বাজারে দোতলা বাড়ি। কিনেছেন যশোরের ঐতিহ্যবাহী পারভীনা হোটেল। আরবপুর মোড়ে রয়েছে পাঁচতলা বাড়ি, বিমান অফিসের পাশে রয়েছে বাড়িসহ জমি, মাইকপট্টিতে তাঁরই সহযোগী সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন ওরফে হাজী সুমনের সঙ্গে যৌথ নামে জমি, পেট্রলপাম্প, ধর্মতলায় জমি, ঢাকার কলাবাগান ও মহাখালীর ডিওএইচএসে ফ্ল্যাট।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, আত্মীয়স্বজনের নামেও দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন শাহীন। সম্পত্তি গড়া ও আধিপত্য বিস্তারে অন্যকে দমন করে রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে একক আধিপত্য বিস্তারে তিনি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতেন। জেলার রাজনীতি, টেন্ডার ব্যবসা, চাঁদাবাজি, চোরাচালান, দখলবাজিসহ সব ক্ষেত্রে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে তিনি গড়েন পৃথক বাহিনী। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম, শাহীন চাকলাদারের চাচাতো ভাই সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু ওরফে ফন্টু চাকলাদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল এসব বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তাঁরা সবাই গা ঢাকা দেন।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, আনোয়ারা বেগম নামের এক স্কুলশিক্ষিকা শহরের চিত্রা মোড়ে তাঁর জমি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে সহযোগিতার জন্য গিয়েছিলেন শাহীন চাকলাদারের কাছে। একপর্যায়ে কোটি টাকা মূল্যের ওই জমি থেকে আগের দখলদারের পাশাপাশি ওই শিক্ষিকাকেও উচ্ছেদ করে নিজেই দখল করে নেন শাহীন চাকলাদার। সেই জমিতে তিনি গড়ে তোলেন ১৭ তলাবিশিষ্ট ফাইভ স্টার হোটেল ‘জাবির ইন্টারন্যাশনাল’; যা জুয়া ও বড় বড় অনৈতিক কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ৫ আগস্ট ওই হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে এক বিদেশিসহ ২৪ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অভিযোগ রয়েছে, হোটেলের পাশে গাজী ইলেকট্রিকের দোতলা মার্কেটের একটি বড় অংশও তিনি দখল করে নেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ২০০ বিঘার এড়োলের বিল, মাহিদিয়ায় ১০০ বিঘার বিলের জমি, জগহাটির একটি বিল, শহরের মাইকপট্টির সেলিম নামের এক ব্যক্তির মার্কেটের একাংশ, কাঁঠালতলা এলাকার ঈদগাহের একটি অংশ, শহরের ঘোষপাড়া এলাকার সাধন নামের এক ব্যক্তির ১৫ বিঘা জমি, বকচরে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, যশোর-নড়াইল রোডের বীজ গোডাউনের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে শাহীন চাকলাদার ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নিলামে চাকলাদারের লোকজন ছাড়া কাউকে ভিড়তে দেওয়া হতো না। যশোরের ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রি অফিস, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস, বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকেরা শাহীনের লোকজনকে নিয়মিত চাঁদা দিতে বাধ্য হতেন। এমনকি কোচিং সেন্টারও তাঁদের চাঁদাবাজির বাইরে ছিল না। শহরের বিভিন্ন প্রবেশমুখ মুড়লি, চাঁচড়া চেকপোস্ট, পালবাড়ী, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড ও মণিহারসহ মূল শহরের মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতেন চাকলাদারের ক্যাডাররা। এমনকি ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যানচালকেরাও চাঁদা দিতে বাধ্য হতেন।

যশোরের সব সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রিত হতো শাহীন চাকলাদারের বাড়ি কাঁঠালতলা থেকে। চাকলাদারের প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাই সাবেক পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, কাউন্সিলর হাজী সুমন, মোস্তফা, সন্তোষ দত্ত, জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন, চূড়ামনকাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না, মশিয়ার রহমান সাগর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম ও বিহারি ক্যাম্প এলাকার রবি নিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

চাকলাদারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর বাহিনী খুনোখুনিতেও ছিল বেপরোয়া। তাঁদের বিরুদ্ধে বহু হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।তাঁর বাহিনীর অনেকেই হত্যা মামলার চার্জশিটের (অভিযোগপত্র) আসামি। শাহীন চাকলাদার ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন সমাবেশে বিরোধী রাজনৈতিক মত-পথের লোকজনকে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাৎ-কর্মীরা বরাবরই তাঁর কাছে ছিলেন উপেক্ষিত।

যশোর সরকারি এমএম কলেজের দুটি ছাত্রাবাস ছিল শাহীন চাকলাদারের ক্যাডার বাহিনীর দখলে। এখান থেকে শহরের সব মেস নিয়ন্ত্রণ করা হতো। শিক্ষার্থীদের শাহীন চাকলাদারের মিছিলে যেতে বাধ্য করা হতো। ছাত্রলীগের নামধারীরা নিয়ন্ত্রণ করত সব ক্যাম্পাস।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনও চলতে বাধ্য হতো তাঁদের ইশারায়। কলেজের ৪টি পুকুর চাকলাদারের অনুসারী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী ও সাবেক সাধারণ আনোয়ার হোসেন বিপুল দখল করে বিনা ইজারায় মাছ চাষের ব্যবসা করেছেন। 

কেশবপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-বাণিজ্য 
যশোর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে শাহীন চাকলাদারের ছিল দা-কুমড়া সম্পর্ক। সদরে দলীয় মনোনয়ন নিয়েই মূলত দুজনের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ছিল। যশোর-৬ আসনের (কেশবপুর) সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর সেখানে উপনির্বাচনে দলীয় হাইকমান্ড শাহীন চাকলাদারকে প্রার্থী করে। ২০২০ সালের উপনির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।

অভিযোগ রয়েছে, তিন বছরের মেয়াদে কেশবপুরের তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেছেন তিনি। উপজেলার হিজলডাঙ্গা গ্রামে শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মশিয়ুর রহমান ১৯ জনের নিয়োগ দেওয়ার জন্য ৬৪ লাখ টাকা দিতে অঙ্গীকারনামা দেন।

সেই অঙ্গীকারনামায় তিনি লিখেছেন, ‘কলেজের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরিতে নজরুল ইসলামকে এমপিওভুক্ত করাতে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনের ব্যক্তিগত সহকারী আলমগীর সিদ্দিকীর কাছে দিয়েছেন তিনি।’ এটি গত তিন বছরের নিয়োগ-বাণিজ্যের একটি প্রমাণ। এ ব্যাপারে শাহীন চাকলাদারের ব্যক্তিগত সহকারী আলমগীর সিদ্দিকী বলেন, তিনি কোনো টাকা মশিয়ুর রহমানের কাছ থেকে নেননি। মশিয়ুর রহমান সরাসরি শাহীন চাকলাদারের কাছে টাকা দিয়েছেন।

শাহীন কেশবপুরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে কখনো বসেননি। তিনি পৌরসভার মেয়রের কক্ষে বসতেন। এ বিষয়ে তখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, শেষ তিন বছরে দলের সঙ্গে শাহীন চাকলাদারের সম্পর্ক ছিল অনেকটা প্রভু-ভৃত্যের মতো। তাঁর কথাই ছিল শেষকথা।

এ ছাড়া সরকারি কাবিখা, কাবিটাসহ সব প্রকল্প সম্পন্ন করতেন মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। ক্ষমতার দাপটে তিনি একের পর এক দখল করতে থাকেন সেখানকার সব মাছের ঘের। তাঁর অপকর্মে স্থানীয় রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তাঁরই ফলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী বয়সে তরুণ আজিজুল ইসলাম ওরফে খন্দকার আজিজের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন শাহীন।

শাহীন চাকলাদার দেশে না বিদেশে, এ নিয়ে দুই ধরনের তথ্য মিলছে। কেউ বলছেন, তাঁর ফাইভ স্টার হোটেলের ম্যানেজার কলকাতার বাসিন্দা হওয়ায় তাঁর মাধ্যমে তিনি পুটখালী সীমান্ত হয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। কেউবা বলছেন, জনগণ ও প্রশাসনের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে ভারতে যাওয়ার কথা প্রচার করে যশোরেই আত্মগোপনে আছেন তিনি। এ শহরে বসেই এখনো সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন শাহীন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলার জন্য বহুবার চেষ্টা করেও শাহীন চাকলাদারের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটস অ্যাপেও তাঁর সংযোগ পাওয়া যায়নি।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, শাহীন দানবীয় রাজনীতি করেছেন, যশোরবাসীর আতঙ্কের নাম ছিল শাহীন চাকলাদার। যশোর সন্ত্রাসীর জনপদে রূপ নেয় তাঁর হাত ধরে। তাঁর বলপ্রয়োগের রাজনীতিতে ২০-৩০ জন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। শহরের দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ হয়েছে তাঁর হাত ধরে। দল ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি হয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। তাঁর এই সম্পত্তি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়নি। তিনি এখন এ শহরে না থাকায় মানুষ স্বস্তিতে রয়েছেন।

যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, যশোরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। বিগত সময়ে নির্যাতিনের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবু বাকেরকে লক্ষ্য করে ককটেল হামলার অভিযোগ, এনসিপির বিক্ষোভ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবু বাকের মজুমদার। ফাইল ছবি
আবু বাকের মজুমদার। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস—রূপান্তরিত জাতীয় ছাত্রশক্তি) আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার তাঁর মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৮টার পর রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।

রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আবু বাকের মজুমদার লিখেছেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ৮টা ২৩-২৪ মিনিটের সময় ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আমার বাইকের সামনে ককটেল মারা হয়েছে। রূপায়ণ টাওয়ারে সাংগঠনিক মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। রাজনৈতিক কারণে এক্সটার্নাল এবং ইন্টারনাল অনেকের শত্রু হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, এখনো সুস্থ আছি, দোয়া করবেন।’

হামলার প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলতে পারবে না: বিআরটিএ চেয়ারম্যান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলতে পারবে না। এ বিষয়ে পুলিশ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ যৌথ আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি আমরা মহাসড়কে চলতে দেব না। এ জন্য বিআরটিএ, প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর একসঙ্গে কাজ করছে। সরকারি গাড়িগুলোও ছাড় পাবে না, এমনকি আমি নিজেই বিআরটিএর গাড়ি ডাম্প করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরে রান্নাঘরে পুঁতে রাখা পিস্তল উদ্ধার

­যশোর প্রতিনিধি
উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: সংগৃহীত

যশোর সদরে অভিযান চালিয়ে রান্নাঘরে পুঁতে রাখা বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায়উপজেলার দৌলতদিহির হুমায়ুন কবিরের বাড়ি থেকে পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ পিস্তলটি উদ্ধার করে। এ সময় অস্ত্রের মালিক শাকিল হোসেন পালিয়ে যান। শাকিল হুমায়ুন কবিরের ছেলে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে পিস্তলটি উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আবারও পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে সজিব (১৯) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ পাওয়া গেছে। তিনি এবার বংশালে আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলের দিকে বংশালের আগামসিহ লেনের ৯৩/১ নম্বর বাসায় ঘটনাটি ঘটে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে ওই বাসার চারতলার সিঁড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর গলায় জিআই তার পেঁচানো ছিল।

বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দুলাল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিকেলে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ওই বাসার চারতলার সিঁড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসেবে এবং পরে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হয়। এ সময় সে গলায় জিআই তার পেঁচানো অবস্থায় উপুড় হয়ে সিঁড়িতে পড়ে ছিল। তবে ওই বাসার চারতলায় শুধু একটি পরিবার থাকত বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ওই বাসা পুরোটাই গোডাউন। চারতলার ওই বাসা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।’

এসআই আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষার্থীকে গলায় জিআই তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

হাসপাতালে নিহত সজিবের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম বলেন, ‘সজিবদের বাসা বংশাল আগামসিহ লেনে। সজিব এবার আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে সে অকৃতকার্য হয়। কয়েক দিন আগে তাবলিগের সঙ্গে দোহার গিয়েছিল। গতকাল বাসায় আসে। আজ বেলা ৩টার দিকে ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হয়। এরপর বিকেলে জানতে পারি, একটি বাসার সিঁড়িতে সজিবের মরদেহ পাওয়া গেছে।’

সজিব আরও বলেন, ‘যে বাসায় সজিবের মরদেহ পাওয়া গেছে, ওই বাসার চারতলায় সজিবের প্রেমিকা খাদিজাদের বাসা। খাদিজার বাবা বেঁচে নেই। তবে ঘটনার পর থেকে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ৬ বছর ধরে খাদিজার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সজিবের। মাঝে একবার মনোমালিন্য হয়েছিল। তবে খাদিজার মামারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না।’

পরিবারের অভিযোগ, খাদিজার দুই মামা ইকবাল ও কামাল মিলে সজিবকে হত্যা করেছে।

এর আগে, ১৯ অক্টোবর রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলা এলাকার একটি বাসার সিঁড়িতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ওই বাসায় জুবায়েদ টিউশনি করাতেন। পরে ডিএমপি এই হত্যাকাণ্ডকে ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ ফল বলে জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত