Ajker Patrika

বেনাপোল বন্দরে পড়ে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিকে আগুন-আতঙ্ক

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
বেনাপোল বন্দরে পড়ে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিকে আগুন-আতঙ্ক

বেনাপোল বন্দরের বিভিন্ন শেড ও ইয়ার্ডে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে ১২ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন আমদানি করা নিলাম তালিকার পণ্য। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য। এসব দ্রুত অপসারণ না হলে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য সরাতে কাস্টমসকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয় এর বড় একটি অংশ রয়েছে তরল অ্যাসিড, পাউডার জাতীয় কেমিক্যাল ও রাসায়নিক দ্রব্য। নিয়ম রয়েছে, আমদানির পর ৩০ দিনের মধ্যে এসব পণ্য বন্দর থেকে খালাস করতে হবে। কেউ সময়মতো খালাসে অপারগতা প্রকাশ করলে কাস্টমস ওই পণ্য চালান নিলাম তালিকায় তোলে।

বেনাপোল বন্দরের বিভিন্ন পণ্যাগারে বর্তমানে নিলাম তালিকার পণ্যের পরিমাণ ১২ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য। দীর্ঘদিন ধরে এসব পণ্য বন্দরে পড়ে থাকায় একদিকে যেমন জায়গা সংকটের সৃষ্টি করছে, তেমনি অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে।

তবে এসব পণ্য অপসারণে বন্দর বারবার কাস্টমসকে অবহিত করলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমদানিকারকেরা অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্কে ভুগছেন। এদিকে গত ১২ বছরে বেনাপোল বন্দরে ছোট-বড় সাতটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ব্যবসায়ীরা কয়েক শ কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা রাসায়নিক পণ্য। ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে আমদানিকারক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্দরের বিভিন্ন শেডে মেয়াদোত্তীর্ণ এসব রাসায়নিক পণ্যের কারণে সব সময় আগুন-আতঙ্কে থাকতে হয়। জায়গা সংকটও সৃষ্টি হচ্ছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বেনাপোল বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এখানে সব সময় পণ্য থাকে দেড় লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি। এমনিতেই জায়গা সংকট, এর মধ্যে এসব ধ্বংসযোগ্য পণ্য দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় আরও জায়গা সংকটের সৃষ্টি করছে। সচেতন না হওয়ায় প্রতি বছর বন্দরে আগুনের ঘটনায় অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। অনেকে পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চান আমদানিকারকেরা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘নিরাপদ বাণিজ্যে এসব ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক পণ্য দ্রুত সরিয়ে নেওয়া দরকার। আশা রাখছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

বেনাপোল ফায়ার স্টেশন ইন্সপেক্টর রতন কুমার সরকার বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রুত না সরালে যেকোনো সময় বড় ধরনের আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার সচেতন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের গুরুত্ব কম।

বন্দরে বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে আছে বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য। ছবি: আজকের পত্রিকাবেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ধ্বংসযোগ্য এসব ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক পণ্য সরাতে কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বন্দর সূত্রমতে, ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল ৩১ নম্বর ইয়ার্ডে আগুনে পাঁচটি ভারতীয় ট্রাক ও মেশিনারিজ পণ্য পুড়ে যায়; ২০২১ সালের ৭ জুন সন্ধ্যায় বন্দরের ৩৫ নম্বর পণ্যাগারের সামনে মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে অগ্নিকাণ্ডে মালামালসহ একটি ট্রাক পুড়ে যায়; ১৯৯৬ সালে বন্দরের ১০ নম্বরসহ ১০টি পণ্যাগারে আগুনে পুড়ে ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়; ২০০১ সালে ২৬ নম্বর পণ্যাগারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ৩০ কোটি টাকার; ২০০৫ সালে ১০ ও ৩৫ নম্বর পণ্যাগারে আগুনের ঘটনায় ক্ষতি হয় ৭০ কোটি টাকা; ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারিতে ৩৫ নম্বর পণ্যাগারে আগুনে ক্ষতি হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা; একই বছরের ২২ জুন ২৭ নম্বর পণ্যাগারে আগুনে ক্ষতি হয় ১৫০ কোটি; ২০১৬ সালে ২ অক্টোবরে ২৩ নম্বর পণ্যাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা; ২০১৮ সালের ৬ জুন বন্দরের ২৫ নম্বর শেডে আগুন ধরে এক ট্রাক পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে এ ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকার পণ্য পুড়ে যায়; ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট বন্দরের ৩৫ নম্বর শেডে অগ্নিকাণ্ড প্রায় ৫০ কোটি টাকার পণ্য পুড়ে যায় এবং সর্বশেষ গত ৭ জুন বেনাপোল বন্দরের ৩৫ নম্বর পণ্যাগারের সামনে মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ভারতীয় ব্লিচিং পাউডারবাহী ট্রাকে আগুন লেগে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এ ছাড়া এ সময়ে ছোটখাটো আরও পাঁচ-ছয়টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টের সামনে মধ্যরাতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন হাইকোর্টের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় (৩০) এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুল ইসলাম জানান, রাতে ট্রিপল নাইনের মাধ্যমে খবর আসে হাইকোর্টের সামনে কোনো যানবাহনের ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই নারী ভবঘুরে প্রকৃতির। হাইকোর্ট এলাকায় থাকতেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোকা দমনে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতিতে সুফল পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের আমনচাষিরা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের কৃষকেরা আমন ধানের ক্ষতিকারক পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জেলার হাওর এলাকা এবং সমতল ভূমিতে বাঁশ বা গাছের খুঁটি ব্যবহার করে এই ‘ডেথ পাচিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষকেরা উল্লেখযোগ্য সুফল পাচ্ছেন। কৃষিবিদেরা মনে করছেন, কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়ালে এই পদ্ধতির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব।

এই পদ্ধতিতে ধানখেতে বাঁশের খুঁটি বা ডাল পুঁতে দেওয়া হয়, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির শিকারি পাখি এসে বসে। এই পাখিগুলো ধানগাছের ক্ষতিকর পোকামাকড়, বিশেষ করে মাজরা পোকা খেয়ে ফেলে। ফলে ফসলে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কমে যায়, কীটনাশকের ব্যবহার ও খরচ হ্রাস পায় এবং পরিবেশ সুরক্ষিত থাকে। পাখিদের মল থেকে জৈব সার তৈরি হওয়ায় জমির উর্বরতা শক্তিও বাড়ে।

সরেজমিনে জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা বিচ্ছিন্নভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। প্রায় ১০০ শতক জমিতে ২৫-৩০টি ডেথ পাচিং দেওয়া হয়েছে। বাঁশের খুঁটি বা গাছের ডালের মাথায় খড় বেঁধে পাখির বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশির ভাগ কৃষক পরিবেশবান্ধব এই ডেথ পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কৃষকেরা জানান, জেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধান চাষ হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এই পোকা ধানের ডিগ পাতা কেটে দেওয়ায় অনেক সময় পচন রোগের সৃষ্টি হয়। এই আক্রমণ মোকাবিলায় কীটনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি তাঁরা পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আমার ধানখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এই পদ্ধতির কারণে পোকামাকড় কম আসে। আমরা ধানের চারা রোপণের কয়েক সপ্তাহ পর থেকে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিছুদিন আগে জমির প্রায় পুরোটা মাজরা পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছে। পোকা দমনে কীটনাশক ছিটানোর পাশাপাশি পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি।’

কৃষকদের মতে, বিশেষ করে শালিক ও ফিঙে—এই দুই ধরনের পাখি পাচিংয়ে বসে পোকা নিধনে প্রধান ভূমিকা রাখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করেছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, পাচিং পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকেরা সুফল পাচ্ছেন। যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তাঁদের খরচ কম হয় এবং সুফল বেশি হয়। এটি পরিবেশ বান্ধব। কম খরচে বাঁশের খুঁটি দ্বারা সহজে এটি করা যায়। বিশেষ করে মাজরা পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগর প্রতিনিধি
গুলিবিদ্ধ বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। ছবি: সংগৃহীত
গুলিবিদ্ধ বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার আদালতপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। আহত মফিজুর রহমান ওরফে মুকুল (৫২) উপজেলার পৌর এলাকার পদ্মপাড়ার বাসিন্দা। তিনি নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, মফিজুর রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দিনভর উপজেলার বিটঘর বাজারে দলীয় প্রচারপত্র বিতরণ করেন। সন্ধ্যায় উপজেলায় ফিরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে যান। এরপর তিনি উপজেলার পৌর এলাকার পদ্মপাড়ার নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৮টা ১০ মিনিটে পৌর এলাকার আদালতপাড়া অতিক্রম করার পরপরই দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে তাঁকে উদ্দেশ করে পরপর তিনটি গুলি করে। দুটি গুলি তাঁর পিঠে এবং একটি কোমরের নিচে লাগে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

দুর্বৃত্তরা কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে মফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, মফিজুর রহমানের পিঠে দুটি এবং কোমরের নিচে একটি গুলি লেগেছে। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে কোনো লাইট ছিল না। অন্ধকার থাকায় অপরাধীরা ওত পেতে বসে ছিল। আমরা তদন্ত করছি।’

এই ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এই হামলার সঙ্গে কারা জড়িত, তা এখনো জানা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পতিত জমিতে মাল্টা চাষে সফল দুর্গাপুরের তিন মামা-ভাগনে

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
বিক্রি করার জন্য গাছ থেকে মাল্টা তুলছেন রনি মিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্রি করার জন্য গাছ থেকে মাল্টা তুলছেন রনি মিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুরের পাহাড়, নদী ও সবুজ প্রকৃতির মধ্যেও বহু জমি দীর্ঘদিন ধরে পতিত থাকত। সেই পতিত জমিতে এক অনন্য সাফল্যের গল্প তৈরি করেছেন তিন মামা-ভাগনে রনি মিত্র, নিকঞ্জ মণ্ডল ও সুমন মল্লিক।

২০২২ সালে তাঁরা সীমান্তঘেঁষা বিজয়পুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেন। প্রথমে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে ৩০০ চারা নিয়ে শুরু করলেও পরে আরও ২০০ চারা রোপণ করেন। বর্তমানে ৫০০ চারার বাগানে টসটসে মাল্টা ঝুলছে।

বাগান গড়তে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান রনি মিত্র। তবে এ বছরের ফলন থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন তাঁরা। আগামী মৌসুমে ফলন বাড়লে লাভের পরিমাণ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে তাঁদের প্রত্যাশা।

তিন মামা-ভাগনে বলেন, স্থানীয় চাহিদা মেটানোই তাদের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে দুর্গাপুরের হাটবাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা শহর এবং ময়মনসিংহ পর্যন্ত এই বাগানের মাল্টা বাজারজাত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাগানের অর্ধেকের বেশি মাল্টা বিক্রি হয়েছে।

বর্তমানে বাগানে রয়েছে ৫০০ চারা। সবগুলো গাছে কমবেশি ঝুলছে টসটসে মাল্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বর্তমানে বাগানে রয়েছে ৫০০ চারা। সবগুলো গাছে কমবেশি ঝুলছে টসটসে মাল্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাইকারি ক্রেতারা জানান, গাছ থেকে সরাসরি বাজারে আসা এই ফরমালিনমুক্ত মাল্টার চাহিদা অনেক বেশি। তাঁরা এখান থেকে পাইকারি কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করে ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ কর বলেন, ‘ফরমালিনমুক্ত মাল্টা পেয়ে আমরা খুব খুশি। এতে সহজে পূরণ হচ্ছে ভিটামিন সি-এর চাহিদা।’

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. রায়হানুল হক বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি মাল্টা বাজারজাতের উপযুক্ত সময়। তিনি জানান, এই তিন মামা-ভাগনে যথাসময়ে ফল বাজারজাত করায় ভোক্তারা মাল্টার আসল স্বাদ পাচ্ছেন।

পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে মাত্র তিন বছরে এই তিন মামা-ভাগনে যে সফলতার গল্প তৈরি করেছেন, তা এখন দুর্গাপুরের অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত