Ajker Patrika

বেহাল ৩ মহাসড়কে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা

  • তিন মহাসড়কের ৩৭ কিলোমিটার বেহাল
  • ভালো মানুষও চলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, ভাষ্য স্থানীয়দের
  • বিভিন্ন সময় মেরামত হলেও টেকসই হচ্ছে না, দাবি বাসিন্দাদের
  • জরুরি সংস্কারে চাহিদা পাঠানো হয়েছে: কর্মকর্তা
­যশোর প্রতিনিধি
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের এই অংশ খানাখন্দে ভরা। বাড়ছে ঝুঁকি, ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি যশোর সদরের পুলেরহাট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের এই অংশ খানাখন্দে ভরা। বাড়ছে ঝুঁকি, ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি যশোর সদরের পুলেরহাট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সড়কের উপরিভাগের কোথাও ছোট-বড় গর্ত, আবার কোথাও উঠে গেছে পিচ। কোথাও পিচ জড়ো হয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু ঢিবি। অসহনীয় ধুলার যন্ত্রণার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন ও যাত্রী-সাধারণ। এ চিত্র যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের খয়েরতলা এলাকার। শুধু এ স্থানই নয়; এই সড়কের যশোর অংশের ১০ কিলোমিটারই বেহাল। শহরের অন্য প্রান্তে যশোর-খুলনা মহাসড়ক। সড়কটি ভিন্ন হলেও যশোর-ঝিনাইদহের মতো একই দৃশ্য সেখানেও। কোথাও পিচ উঠে গেছে। উঁচুনিচু ঢিবি। অনেক স্থান ভেঙে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একই চিত্র যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কেরও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ছোট যানবাহনগুলো দুর্ঘটনায় পড়ছে বেশি। অনেক বাস ও ট্রাক সড়কের গর্তের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যাচ্ছে। এতে মৃত্যুসহ অনেকে পঙ্গু হচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসছে না। মান খারাপ ও অতিবৃষ্টিতে সড়কগুলো আবারও আগের অবস্থায় ফিরেছে।

সওজের তথ্য অনুযায়ী, যশোর-খুলনা মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার, যশোর- সাতক্ষীরা মহাসড়কের নাভারণ থেকে বাগআঁচড়া পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার, যশোর- ঝিনাইদহ মহাসড়কের কালীগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া যশোর-ঢাকা মহাসড়কের মণিহার অংশে ১ কিলোমিটার সড়ক বেহাল। তবে ভাঙাচোরা সড়কের বিস্তার আরও বেশি। এসবের মধ্যে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে।

শহরের খয়েরতলা এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জেল বলেন, ‘তিন বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের যশোর-ঝিনাইদহ অংশের মহাসড়ক বেহাল। এখানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। বিভিন্ন সময় খোয়া দিয়ে মেরামত করে গেলেও তা টেকসই হয়নি। সর্বশেষ কিছুদিন আগে এ সড়কের চূড়ামনকাটি বাজারের পুরো অংশের সড়কটিতে ইটের সলিং করে রেখে চলে গেছে। এখন প্রতিনিয়ত এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

এ সড়কে নিয়মিত থ্রি-হুইলার চালান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে খানাখন্দ আর ভাঙা ইটের টুকরার কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। এতে গাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি যাত্রীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সড়কে ভাঙা ইটের অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহনগুলো বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়।’

মুড়লি মোড়ের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু এ সড়কই নয়, আমাকে যশোর-সাতক্ষীরা, যশোর-নড়াইল- ঢাকা সড়কসহ জেলার বিভিন্ন মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও তা মেরামত ও স্থায়ী সংস্কার করতে সড়ক বিভাগ বারবার ব্যর্থ হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানান, রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, ২০ মিনিটের পথ যেতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত থাকায় গাড়ি উল্টে যাচ্ছে, টায়ার ফেটে যাচ্ছে। সড়কের এই অংশে

চলাচল করা খুব মুশকিল। ভালো মানুষও অনেক সময় এ পথে চলাচল করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত রাস্তাটি ঠিক করার দাবি জানান তাঁরা।

সওজের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘চলতি বছর অতিবৃষ্টিতে যশোরের বিভিন্ন মহাসড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে যশোর-খুলনা, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেশ কিছু অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো আমরা জরুরি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে থাকি। এ বছর যশোর-খুলনা মহাসড়কে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার ঢালাই কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া বিভিন্ন মহাসড়ক জরুরি সংস্কারের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে ৭ কোটি টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

এলাকার খবর
Loading...