Ajker Patrika

এক বছর ধরে একাই স্কুল চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

রাবিক হাসান, (জামালপুর) মেলান্দহ
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ২৭
এক বছর ধরে একাই স্কুল চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

বিদ্যালয়টিতে ছয়টি শ্রেণির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৯। সহকারী শিক্ষকের চার পদই শূন্য। সবশেষ সহকারী শিক্ষক বদলি হওয়ায় এক বছর ধরে একাই রয়েছেন প্রধান শিক্ষক। সেই থেকে বিদ্যালয়ের সব কাজ একাই সামলাচ্ছেন তিনি। 

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নয়ানগর ইউনিয়নে ৫ নম্বর চর উওর উস্তম আলী মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই প্রধান শিক্ষক শাহ জামাল ও আরেকজন সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সহকারী শিক্ষক বদলি হয়ে চলে যান। তারপর বিদ্যালয়ে আর কোনো সহকারী শিক্ষক আসেননি। 

বর্তমানে চারজন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। বিদ্যালয়ে খাতা-কলমে ছয়টি শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৬৯। এদের মধ্যে প্রাক্‌-প্রাথমিকে ১০ জন শিক্ষার্থী, প্রথম শ্রেণিতে ১০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২, তৃতীয় শ্রেণিতে ১২, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৩ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। 

গত বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, নীরব-নিস্তব্ধ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ ও দুটি শ্রেণির কক্ষ তালাবদ্ধ, তবে একটি শ্রেণিকক্ষ খোলা রয়েছে। শ্রেণিকক্ষের ভেতর ঢুকতেই দেখা যায় ১০ জন শিক্ষার্থী ও প্রধান শিক্ষককে। 

শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় শ্রেণির চারজন, চতুর্থ শ্রেণির দুজন শিক্ষার্থী ও পঞ্চম শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পাঠদান দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক শাহ জামাল। এ তিন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এক শ্রেণিকক্ষে পাশাপাশি বসে ক্লাস করছে। 

স্থানীয়রা জানান, এক বছর ধরে প্রধান শিক্ষক শাহ জামাল ছাড়া কেউ নেই। প্রধান শিক্ষক একাই স্কুলের সব কাজ করেন। এই স্কুলটি চর এলাকায়। স্কুলে আসার রাস্তাঘাট একদমই খারাপ। একে তো এখানে কাঁচা রাস্তা, অন্যদিকে বর্ষার সময় হেঁটেও চলাচল করা যায় না। তাই কোনো শিক্ষকও এই স্কুলে চাকরি করতে চান না। 

ক্লাস নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক শাহ জামাল। ছবি: আজকের পত্রিকা পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাপলা আক্তার বলে, ‘আমাদের স্যার একজন আছে, আর স্যার কেউ নাই। একাই আমাদের সব ক্লাস নেন। আগে ছাত্রছাত্রী বেশি ছিল, স্যার নাই দেইখা অন্য স্কুলে চলে গেছে।’ 

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. বোরহান বলে, ‘আমাদের ক্লাসে আমরা দুজন ছাত্রছাত্রী আজ স্কুল আইছি। ক্লাস থ্রি, ফোর, ফাইভ—সবার একসঙ্গে ক্লাস নেন স্যারে।’ 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার আগে শিক্ষকেরা আগেই এসে স্কুল দেখেন, পরে আসতে চান না। কারণ, স্কুলে আসার রাস্তাঘাট খারাপ এবং চরাঞ্চলে হওয়ায় কোনো শিক্ষক এই স্কুলে আসতে চান না।’ 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ জামাল বলেন, ‘খুব কষ্টে রয়েছি, বিদ্যালয়ে আমি ছাড়া আর কেউ নাই। আমার একাই সব কাজ করতে হয়। ২০১৭ সালের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকে দুজন শিক্ষক ছিলাম। ২০২২ সালের শেষের দিকে একজন শিক্ষক বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে যান। তার পর থেকে আমি একাই রয়েছি। প্রতিদিন আমার একাই ক্লাস নিতে হয়। এদিকে শিক্ষক না থাকাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে গেছে।’ 

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘শিক্ষকেরা স্কুলে আসতে চান না মূল কারণ হচ্ছে, বিদ্যালয়ে আসার রাস্তাঘাট খুবই খারাপ, এ বিদ্যালয়টি চরাঞ্চল এলাকায়। বর্ষার সময় দুই কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে আসতে হয়। এ সময় মোটরসাইকেল দিয়ে কোনো রকম আসা যায়। এ ছাড়া কোনো গাড়ি-ঘোড়া চলে না। বর্তমানে রাস্তার দুপাশেই ভুট্টাখেত দিয়ে একা আসাও ভীতিকর পরিবেশ।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী চকদার বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি, পরে বিষয়টি জেনেছি। দু-এক দিনের মধ্যেই ডেপুটেশনে শিক্ষক আমরা দিয়ে দিব ওই বিদ্যালয়ে।’

জামালপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই বিষয় নিয়ে আমি না জেনে কিছু বলতে পারব না। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে জানতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

রাবি প্রতিনিধি  
রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুল থেকে সায়মা হোসাইন নামের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ অক্টোবর) রাতে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁরা ‘তুমি কে? আমি কে? সায়মা, সায়মা’, ‘বিচার চাই, বিচার চাই সায়মা হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবেদন লেখা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান ছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সহসভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা সায়মা হত্যার বিচার না নিয়ে এখান থেকে যাব না। শুধু সায়মা নয়, এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। প্রশাসন চায় আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি, তারপর তারা কথা বলবে। তারা এখনই আমাদের সামনে আসুক এবং নিশ্চিত করুক দ্রুত বিচার।’

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। কেন ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়া তাকে সাঁতার কাটতে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্নের জবাব চাই। প্রশাসনের অবহেলায় আমরা বারবার আমাদের ভাইবোনদের হারাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছে ১৪ দিন সময় চেয়েছি।’

এর আগে আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে যান সায়মা হোসাইন। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাসা কুষ্টিয়ায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জে কুমির আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় কুমির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের শ্যামুবাড়ি গ্রামে কয়েক দিন ধরে এ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের দাবি, রাতে ও ভোরে পদ্মা নদী থেকে কুমির উঠে আসছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দা।

শ্যামুবাড়ি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে অন্তত দুটি কুমির দেখা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কৌতূহলী হয়ে পুকুর পাড়ে ভিড় করছে স্কুলশিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকার মানুষ।

মো. হায়াত হোসেন ও মো. রানা ওরফে মধু নামের দুই যুবক জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে পথচারীরা পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় গোয়ালঘরে কাছে একটি কুমির দেখতে পান। আতঙ্কিত হয়ে তাঁরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে টর্চলাইটের আলোতে কুমিরটির ছবি তোলার চেষ্টা করলে কুমিরটি ধীরে ধীরে পুকুর পাড় থেকে নদীর দিকে চলে যায়।

গৃহবধূ সালিনা বেগম বলেন, ‘রাতে গোয়ালঘরে পাশে কুমির দেখতে পাই। ছবি তুলতে গেলে সেটা পুকুর পাড় থেকে সরে যায়।’ এ ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁরা দ্রুত কুমিরগুলোকে উদ্ধার এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, বিষয়টি বন বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালের মালিকানা কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই। শুধু লাইসেন্সিং হিসেবে অপারেটর নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব। আজ রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বন্দরের চিফ পারসোনাল অফিসার মো. নাসির উদ্দিনের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্তৃক ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ আনা হয়।

এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সব টার্মিনাল, জেটি, ইয়ার্ড ও অন্য সব স্থাপনার একক মালিকানা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের। বন্দরের কোনো টার্মিনালের মালিকানা ইতিপূর্বে কখনোই কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা বন্দর কর্তৃপক্ষ বা সরকারের ছিল না বা এখনো নেই।

বাংলাদেশের প্রচলিত বিধিবিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে শুধু লাইসেন্সিং হিসেবে অপারেটর নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালগুলো পরিচালনার ব্যাপারে কতিপয় সংবাদমাধ্যম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করছে। এসব অসত্য, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সাধারণ জনগণ ও বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কোনো বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত না হয়ে মনগড়া, ধারণাভিত্তিক বা অনির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদ পরিবেশন করা হলে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরসম্পর্কিত মনগড়া, অবাস্তব সংবাদ বন্দরের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দর এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় অন্তরায়।

বন্দরের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখা এবং ক্রমবর্ধমান উন্নতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখাসহ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য—বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), বে-টার্মিনাল ও লালদিয়ার চর পরিচালনার জন্য তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যে এ-সংক্রান্ত চুক্তি হওয়ার কথা ইতিমধ্যে সরকারের নীতিনির্ধারকদের ভাষ্যে এসেছে।

এরই মধ্যে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৩০ দিন চট্টগ্রাম বন্দরসংলগ্ন বারেক বিল্ডিং মোড়, নিমতলা মোড়, ৩ নম্বর জেটি গেট, কাস্টমস মোড়, সল্টগোলা ক্রসিংসহ বন্দর এলাকায় যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক, শ্রমিক বা সামাজিক সংগঠনের মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পথসভা নিষিদ্ধ করা হয়।

তবে শুরু থেকেই বন্দরের স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন ঢাকা-চট্টগ্রামে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে। ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), স্কপসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনও রাজপথে নামে। আগামী ১ নভেম্বর স্কপ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে বিজিবির পৃথক অভিযানে উদ্ধার ১৪ জন, তিন মানব পাচারকারী আটক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
বিজিবির অভিযানে আটক তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির অভিযানে আটক তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফে একই রাতে পৃথক অভিযানে ১৪ জনকে উদ্ধার এবং মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।

আটক মানব পাচারকারীরা হলেন চক্রের মূল সদস্য আবু তাহের (৬৯), তাঁর স্ত্রী দিলদার বেগম (৩৮) ও মোহাম্মদ শফি (৩২)। এ ছাড়া ফাইসেল, সাইফুল, নুরুল মোস্তফা, মো. উল্লাহ, সাইদ, হারুন ও মো. ফিরোজসহ আরও কয়েকজন পাচারকারী পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবির কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রথম টেকনাফের নোয়াখালীপাড়ার আবু তাহেরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটজনকে উদ্ধার করা হয়। সাগরপথে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে তাঁদের ওই বাড়িতে রাখা হয়েছিল। এ সময় দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়। একই রাতে দ্বিতীয় অভিযানে লম্বরী এলাকার মোহাম্মদ শফির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদেরও সাগরপথে বিদেশে পাচারের ওই বাড়িতে রাখা হয়। এ সময় সেখান থেকে এক মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়।

বিজিবি জানায়, উদ্ধার করা ১৪ ভুক্তভোগীকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধে বিজিবির অভিযান ও কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত