Ajker Patrika

শান্ত নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে ক্ষুব্ধ ভোটার

নাজমুল হাসান সাগর ও মো. আসাদুজ্জামান, গাজীপুর থেকে 
আপডেট : ২৬ মে ২০২৩, ১৫: ২৯
শান্ত নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে ক্ষুব্ধ ভোটার

গাজীপুরের ধীরাশ্রম আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টায় ভোট দিতে এসেছিলেন মাইমুনা ইসলাম। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরও তিনি ভোট দিতে পারছিলেন না। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, পাঁচজন করে ভোটারকে ভোটকক্ষে ঢোকানো হচ্ছে। তাঁদের ভোট দেওয়া শেষ হতে প্রায় আধা ঘণ্টা লাগছে। তিনি এখনো ভোটকক্ষে যেতে পারেননি।

গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রেই দেখা গেছে ভোটে ধীরগতি। ভোটকক্ষের বাইরে লাইনে শতাধিক মানুষ থাকলেও এগোচ্ছিল ধীরে। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা যায়। কেউ কেউ দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। কর্মকর্তারা বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সম্পর্কে অনেকে না জানায় ভোট নিতে দেরি হচ্ছে।

গাজীপুরে এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট হলো। নতুন এই পদ্ধতি ভোটারদের ভোট দিতে জটিলতায় ফেলতে পারে এমন সংশয় ছিল অনেকের। গতকাল প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে কোনো না কোনো কারণে আলোচনায় এসেছে ইভিএম।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হয়। তবে কিছু কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি থাকায় ৪টার পরও ভোট নেওয়া হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যবেক্ষক ও বেশির ভাগ মানুষও সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তবে যা কিছু সমস্যা, এর কেন্দ্রে ছিল ইভিএম। নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৬ জন। ৪৮০টি কেন্দ্রের জন্য ইভিএম ছিল ৫ হাজার ২৪৬টি। কেন্দ্র ঘুরে জানা গেছে, বয়স্ক ও নারী ভোটাররা ইভিএমে ভোট দিতে সমস্যায় পড়েন। কয়েকবার ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া বোঝানোর পরও অনেকে উল্টাপাল্টা বাটন চেপেছেন। এ কারণে কোথাও কোথাও ইভিএম নষ্ট হয়েছে। একজনকে বোঝাতে কয়েক মিনিট লেগে যাওয়ায় ভোট গ্রহণ ধীর হয়ে গেছে।

টঙ্গীর মরকুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ড. মসউদ ইকবাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর কেন্দ্রে ৮টি বুথ ও ১২টি ইভিএম রয়েছে। ভোট গ্রহণ শুরুর পর একটি ইভিএম নষ্ট হয়েছিল। পরে সেটি ঠিক করা হয়। সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্র ঘুরে দেখার সময় আরেকটি ইভিএম নষ্ট পাওয়া যায়। সেটিও ঠিক করা হয়। তিনি জানান, বয়স্ক মানুষ অনেকে না বুঝে উল্টাপাল্টা চাপ দেওয়ায় ইভিএম নষ্ট হয়েছে। এতে ভোট গ্রহণ সাময়িক বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। একজনের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যজনের ভোট নেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সমস্যা আরও বেশি হয়। 

পোলিং এজেন্ট একজনের
টঙ্গীর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের পোলিং এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট পাওয়া যায়নি। নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেন, তাঁদের কাছে যে নাম জমা দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সেগুলোই দেখছেন। এর বাইরে যাঁরা আসেননি, তাঁদের খবর জানেন না।

৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেনেসা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেবল নৌকার এজেন্ট দেখে জানতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাঁর কাছে যেসব পোলিং এজেন্টের নাম জমা পড়েছে, তাঁরা সবাই নৌকার। অন্য কোনো প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট তিনি পাননি।

স্থানীয় অনেকে বলেন, টঙ্গীতে আজমতের প্রভাব বেশি থাকায় নৌকার এজেন্ট বেশি। অন্যদিকে গাজীপুর শহরের আশপাশে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের প্রভাব বেশি থাকায় সেখানে তাঁর মা জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট আছেন।

গাজীপুরের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন শহিদুল ইসলাম নামের এক ভোটার। তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই কেন্দ্রে ইভিএমের ব্যালট ইউনিট পরিবর্তন করা হয়।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে জানান, কোনো কেন্দ্রে ভোটার ভোট না দিয়ে ফেরত গেছেন এ রকম ঘটনা নেই। সকালে কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বেড়েছে।

নারীদের সরব উপস্থিতি
প্রতিটি কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। সকাল থেকেই ছিল নারী ভোটারদের লাইন। টঙ্গীর ১৫টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, পুরুষ কেন্দ্রের চেয়ে নারীদের কেন্দ্রে লাইন দীর্ঘ। তবে ইভিএম সম্পর্কে ধারণা না থাকায় নারীদের ভোট গ্রহণে একটু সমস্যায় পড়তে হয়েছে কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ কেউ করেননি। গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, বেশ শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় হাতকড়াসহ পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার রেজ্জাকুল ইসলাম রাজু। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার রেজ্জাকুল ইসলাম রাজু। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়াসহ পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলাম রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া র‍্যাব। বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানার নবীনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব-১২ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ফিরোজ আহম্মেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার রাজু শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। তাঁর নামে একাধিক মামলা রয়েছে।

জানা গেছে, ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার চক ভোলাখাঁ গ্রামে তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজু। এই খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করে হাতকড়া পড়ায়। এ সময় রাজুর চিৎকার শুনে এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা করে রাজুকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজুকে প্রধান আসামি করে দুই শতাধিক নারী-পুরুষের বিরুদ্ধে মামলা করে।

পুলিশ রাজুকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ওই গ্রামের ১১ নারী এবং ১০ জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করে। রাজু দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাজুকে শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নান্দাইলে শত বছর ধরে চলছে হাইত উৎসব: বলদা বিলে মাছশিকারিদের ঢল

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
নান্দাইলের বলদা বিলে আজ সকালে মাছ ধরছেন শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নান্দাইলের বলদা বিলে আজ সকালে মাছ ধরছেন শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে যেন প্রাণ ফিরে পেল ময়মনসিংহের নান্দাইল। পলো, জাল আর মাছ ধরার সরঞ্জাম হাতে নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোরে হাজারো মানুষ জড়ো হলেন সদর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বলদা বিলের ধারে।

নান্দাইলের বলদা বিলে আজ সকালে মাছ ধরছেন শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নান্দাইলের বলদা বিলে আজ সকালে মাছ ধরছেন শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গ্রামীণ জীবনের শত বছরের আনন্দ-ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রতিবছরের মতো এবারও বলদা বিলে শুরু হলো ‘হাইত উৎসব’—শৌখিন মৎস্যশিকারিদের এই মিলনমেলা পরিণত হলো এক গণ-উৎসবে।

প্রতিবছর আশ্বিনের শেষে বা কার্তিক মাসের মধ্যে যখন বলদা বিলের খালবিল ও জলাশয়গুলোর পানি কমে হাঁটু বা কোমরসমান হয়, তখনই এলাকার মানুষ দিনক্ষণ ঠিক করে এই হাইত উৎসবের আয়োজন করে থাকে। উৎসবের দিনক্ষণ এক সপ্তাহ আগে থেকে এলাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়।

আয়োজনের খবর পেয়ে মাছশিকারিরা বুধবার রাতেই বলদা বিলের আশপাশের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর থেকে হাজার হাজার শৌখিন মাছশিকারি তাঁদের পলো, ঠেলা জাল, খড়াজাল, ডুবা ফাঁদ, চাঁইসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে মাছ ধরার এই আনন্দ আয়োজনে অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাছশিকারিরা হইহুল্লোড় করতে করতে বিলে নেমে পড়েছেন। বিলের দুই পাশে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী-পুরুষের ভিড়। আশপাশের উপজেলা, যেমন ঈশ্বরগঞ্জ, তাড়াইল, হোসেনপুর, কেন্দুয়া থেকেও মাছশিকারিরা এতে অংশ নেন। তবে এ বছর আগেই নিষিদ্ধ কারেন্ট ও নেট জাল দিয়ে মাছ নিধন করায় মাছশিকারিরা বেশি মাছ শিকার করতে পারেননি।

তাই মাছশিকারিদের মধ্যে কিছুটা আক্ষেপ লক্ষ করা গেছে। পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রাকিবুল হাসান শুভ বলেন, ‘হাইত উৎসবে মাছ শিকার করতে এসে তেমন মাছ পাইনি। তবে সবার সঙ্গে বিলে এসে মাছ ধরার আনন্দ উপভোগ করেছি।’

মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. বিল্লাল মিয়া বলেন, আগের মতো হাইত উৎসবের সেই জৌলুশ নেই। বর্তমানে কিছু কিছু অঞ্চলে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রামের মুরব্বিরা এই আয়োজন করেন, কিন্তু মাছশিকারিরা তেমন মাছ শিকার করতে পারেননি।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘প্রায় ১০০ বছর ধরে আমাদের বাপ-দাদারা বলদা বিলে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে হাইত উৎসবের আয়োজন করে আসছে। তবে এ বছর নিষিদ্ধ কারেন্ট ও নেট জাল দিয়ে মাছ নিধন করায় মাছশিকারিরা প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ শিকার করতে পারেননি।’

বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে এই মাছ শিকারের আয়োজন। মাছ কম মিললেও শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মিলনমেলা গ্রামীণ মানুষের জীবনে অন্যরকম আনন্দ এনে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মহিলা মাদ্রাসার ৭ শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যাওয়া কাপড় আনতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে একটি মহিলা মাদ্রাসার সাত শিক্ষার্থী ও একজন আয়া। জানালা দিয়ে বিদ্যুতের লাইনে স্পর্শ লেগে তারা আহত হয়। আহত আটজনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ভাদুঘর এলাকায় দারুন নাজাত মহিলা মাদ্রাসায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার চারতলার ছাদ থেকে একটি কাপড় বাইরে থাকা বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে গিয়েছিল। কাপড়টি আনার জন্য মাদ্রাসার আয়ার দায়িত্বে থাকা আলেয়া (৩০) জানালা দিয়ে একটি স্টিলের লম্বা পাইপ ব্যবহার করেন। পাইপটি বিদ্যুতের তারে লাগার সঙ্গে সঙ্গেই শক লেগে আলেয়ার শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়। বিদ্যুতের তার থেকে সৃষ্ট আগুন বাষ্পীয় হয়ে দ্রুত রুমের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং কাছাকাছি থাকা ছাত্রীদের শরীরে লাগে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলো নবীনগর উপজেলার তালগাটি গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে নুসরাত (১০), সিরাজগঞ্জ জেলার আবু সাইদের মেয়ে সাদিয়া খাতুন (৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের মজনু মিয়ার মেয়ে রওজা আক্তার (১২), ভাদুঘর গ্রামের কবির হোসেনের মেয়ে নুসরাত (১০), একই এলাকার কাবির মিয়ার মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া (৮), কসবা উপজেলার শিমরাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে উম্মে তাইসান (০৫) এবং মাদ্রাসার আয়ার দায়িত্বে থাকা ভাদুঘর এলাকার তুফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী আলেয়া (৩০)।

দারুন নাজাত মহিলা মাদ্রাসার কারি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আহত শিক্ষার্থীদের সদর হাসপাতালের নিয়ে এসেছি। ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠাচ্ছি। বাকি দুজনকেও ঢাকা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স হাসিম খান বলেন, ‘মাদ্রাসার আট ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। তারা সবাই বার্নের পেশেন্ট। এর মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর দুজন সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘খবর নিচ্ছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ বিএনপি নেতার ভাই-ভাতিজা আটক

গাজীপুর প্রতিনিধি
বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আটক বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত
বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আটক বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন নাওজোর এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ বাবা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। আটক মো. তসলিম সিরাজ (৫৪) নাওজোর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। অপরজন তাঁর ছেলে মো. মুশফিক তসলিম (২৭)। তাঁরা দুজনই গাজীপুর মহানগর বিএনপির বাসন থানার সভাপতি তানভীর সিরাজের ভাই ও ভাতিজা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সেনাক্যাম্প (১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি) থেকে পাঠানো এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

সূত্র জানায়, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৫টা পর্যন্ত গাজীপুর সেনাক্যাম্পের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী বাসন থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাওজোর এলাকায় মো. তসলিম সিরাজের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ মো. তসলিম সিরাজ (৫৪) ও তাঁর ছেলে মো. মুশফিক তসলিমকে (২৭) আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৮টি বড় ছোরা, ১৯টি ছোট ছোরা, ৫টি বড় চাপাতি, ৫টি ছোট চাপাতি, ২টি হাঁসুয়া, ৫টি রামদা, ১টি সোজা রামদা এবং ২৭টি নকল ডায়মন্ড (অস্ত্র ধার করার উপকরণ)। এ ছাড়াও প্রায় ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।

অভিযান শেষে যৌথ বাহিনী আটক দুজনকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় হস্তান্তর করে।

জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, গাঁজাসহ বাবা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত