Ajker Patrika

শহীদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে ফেনীতে জামায়াত-বিএনপি নেতা-কর্মীদের হট্টগোল

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ২২
ফেনীর কাশিমপুর গ্রামে শহীদ শিহাবের কবরে দোয়া-মোনাজাতকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে হট্টগোল হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফেনীর কাশিমপুর গ্রামে শহীদ শিহাবের কবরে দোয়া-মোনাজাতকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে হট্টগোল হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনীতে শহীদ ওয়াকিল উদ্দিন শিহাবের কবরে দোয়া-মোনাজাতকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোল হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাশিমপুর গ্রামে ফেনীর জেলা প্রশাসক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনের অনুরোধে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ শিহাবের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, দোয়া পরিচালনার জন্য স্থানীয় মসজিদের ইমামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান উপস্থিত হলে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলম তাঁকে দোয়ার জন্য আহ্বান জানান। এতে আপত্তি তোলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরনবী মেম্বার।

নুরনবী মেম্বার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহীদ শিহাব আমার আত্মীয়। আমি ওই এলাকার পাঁচবারের নির্বাচিত মেম্বার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে দোয়া পরিচালনার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। আমি স্থানীয় মসজিদের ইমামকে বলে রেখেছিলাম। পূর্বনির্ধারিত ইমামকে বাদ দিয়ে হঠাৎ ইউনিয়ন জামায়াত আমির জেলা জামায়াতের আমিরকে দিয়ে দোয়া করানোয় আমি আপত্তি জানাই। এতে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে প্রশাসনের অনুরোধে আমরা সরে আসি।’

নুরনবী মেম্বার আরও বলেন, ‘জামায়াতের আমির আমার জেল পার্টনার। আমি তাঁকে সম্মান করি। কিন্তু ইউনিয়ন জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে জামায়াতের আমিরকে দিয়ে দোয়া পরিচালনা করিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করেছেন।’

তবে ফেনী জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান বলেন, ‘ওখানে কিছু হয়নি, কোনো সমস্যা হয়নি। দোয়া-মোনাজাত আমি করেছি। বিএনপির এক নেতা একটু (সিনক্রিয়েট) বাড়াবাড়ি করছিলেন, আমি থামিয়ে দিয়েছি। মূলত ইউনিয়ন আমির বলেছিলেন, “জেলা আমির দোয়া করবেন। এটাকে তিনি দলীয়করণের বিষয় মনে করেছিলেন।” পরে আমি বুঝিয়ে বলেছি এবং দোয়াও করেছি। স্থানীয় ইমাম সাহেব আমাকে দোয়ার জন্য বলেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফেনীতে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরাও ভালো আছি, তাঁরাও ভালো আছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪২ ফুট খুঁড়েও পাওয়া যায়নি শিশু সাজিদকে, উদ্ধার অভিযান চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৫
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোরে সরু গর্ত দিয়ে মাটির গভীরে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে ৪২ ফুট খুঁড়েও পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

গতকাল বুধবার তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের জন্য খনন করা ৮ ফুট ব্যাসার্ধের সরু গর্ত দিয়ে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। এর পর থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। সরু গর্তটির পাশে বড় আকারের গর্ত খনন করা হয় এক্সক্যাভেটর দিয়ে। এটি সরু গর্তের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়। তবু সাজিদকে পাওয়া যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ২০ মিনিটে গর্ত থেকে উঠে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

পুরো প্রক্রিয়ার বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তাঁরা ৪২ ফুট পর্যন্ত খনন করেও শিশুটিকে পাননি। এখন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন।

উদ্ধার অভিযান চলবে কি না—জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘হ্যাঁ, অভিযান চলবে। যদি মাটির ১০০ ফুট নিচেও থাকে, এভাবেই খনন করতে হবে।’

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতেই থাকব। আমাদের ক্যাপাসিটি কত, সেটি বিষয় না।’

উল্লেখ্য, শিশুটি ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গর্তের ভেতর আছে। এলাকাটি উচ্চ খরাপ্রবণ। মাটির অনেক গভীরেও পানি পাওয়া যায় না। গভীর নলকূপ স্থাপনের আগে বিভিন্ন স্থান বোরিং করে পানির অস্তিত্ব দেখা হয়। এই গর্তও সে রকম। এখানে পানি না পাওয়ায় গভীর নলকূপ না বসিয়ে গর্তটি ফেলে রাখা হয়। সাধারণত এ ধরনের গর্তের গভীরতা ১০০ থেকে ১৫০ ফুট পর্যন্ত হয়।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একই বংশের দুই নেতা দুই দল থেকে এমপি প্রার্থী

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আবুল বশার দাড়িয়া বাসু ও মো. আরিফুল দাড়িয়া। ছবি: সংগৃহীত
আবুল বশার দাড়িয়া বাসু ও মো. আরিফুল দাড়িয়া। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে কোটালীপাড়া উপজেলায় একই গ্রামের একই বংশের দুই নেতা দুটি রাজনৈতিক দল থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দল দুটি তাঁদের দুজনকে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে এলাকায় নির্বাচনী আলোচনা বেশ জমে উঠেছে।

প্রার্থী দুজনই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মাঝবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে একজন মৃত দলিল উদ্দিন দাড়িয়ার ছেলে আবুল বশার দাড়িয়া বাসু। তিনি গণঅধিকার পরিষদ কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক। অন্যজন মো. সিদ্দিক দাড়িয়ার ছেলে ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আরিফুল দাড়িয়া।

জানা যায়, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি আবুল বশার দাড়িয়া বাসুকে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে। ঘোষণার পর থেকেই তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অপর দিকে গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি একই আসনে প্রার্থী হিসেবে মো. আরিফুল দাড়িয়ার নাম ঘোষণা করে। এরপরই বিষয়টি উপজেলাজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।

মাঝবাড়ি গ্রামের সমাজসেবক রেয়াজুল দাড়িয়া বলেন, ‘একই বংশের দুইজন এমপি প্রার্থী—এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আমার জানামতে, দাড়িয়া বংশ থেকে এই প্রথম কেউ এমপি পদে দাঁড়াল। তবে একজন হলে ভালো হতো।’

গ্রামের বাসিন্দা নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমাগো গ্রাম থাইকা দুইজন নাকি নির্বাচন করবে। আমরা যারে ভালো ও যোগ্য মনে করমু, তারেই ভোট দিমু।’

গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী আবুল বশার দাড়িয়া বাসু বলেন, ‘যেকোনো দলের প্রার্থী হয়ে যে কেউ নির্বাচন করতে পারে—এটা নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। একই গ্রাম থেকে দুজন নয়, পাঁচজনও প্রার্থী হতে পারে। আমার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগ করছি। আশা করি, ভালো ফল হবে।’

এনসিপির প্রার্থী মো. আরিফুল দাড়িয়া বলেন, ‘দল আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আমি এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছি। একই গ্রামের আরেকজন প্রার্থী থাকায় আমার নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রভাব পড়বে না।’

উল্লেখ্য: গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া -টুঙ্গিপাড়া) আসনে এই দুই প্রার্থী ছাড়াও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও গোপালগঞ্জ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির এম এম রেজাউল করিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মারুফ শেখকে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক মাসের কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা জরিমানা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় আতোয়ার রহমান (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ দণ্ডাদেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আতোয়ার ওই গ্রামের আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আতোয়ার রহমান নামের ওই ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে আসছিলেন। খবর পেয়ে গতকাল রাতে দাড়িয়াপুর গ্রামে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় তাঁকে আটক করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আতোয়ারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় একটি মাটি খননযন্ত্রও জব্দ করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা আজকের পত্রিকাকে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী এক ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড ও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

 দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শাকিল খান (৪ মাস) নামের এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মারা যাওয়া শিশুর বাবা-মা দুজনই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু শাকিল ওই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি টংঘরের বারান্দায় শিশু শাকিলের মরদেহ রাখা আছে। তার পাশেই তার মা কাঁদছেন। আর মানুষেরা তাকে ঘিরে রেখেছে। এ সময় কথা হয় মৃত শাকিলের মা শাকিলা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাচ্চা কীভাবে মইরা গেল বলতে পারব না। রাতে আমার আর ওর বাবার মাঝখানে শাকিল ঘুমিয়েছিল। রাত ৪টার দিকে দেখি শাকিলের কোনো সাড়াশব্দ নেই। শাকিল মারা গেছে।’

এদিকে শাকিলের বাবা শুকুর আলী দেন ভিন্ন তথ্য। শুকুর আলী বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না। রাত ৩টার দিকে দেখি ছেলের লিকেশ (নিশ্বাস) বন্ধ হয়ে গেছে। হাত-পা ঠান্ডা।’

স্থানীয় প্রতিবেশী কয়েকজন নারী-পুরুষ জানালেন, ভোররাতে শাকিল মারা যাওয়ার পর শাকিলের মা তার বাবাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ সময় শাকিলের বাবা উল্টো তার মাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ নিয়ে ওই রাতে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা বাধে। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। এলাকায় এ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়।

ওই মহল্লার বাসিন্দা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুজনেরই (বাবা-মা) বুদ্ধিসুদ্ধি কম। পাড়ার সবাই তাদের পাগল বলে ডাকে। কখন কী বলে ঠিক নাই। খুবই দরিদ্র তারা। এলাকার সাহায্য-সহযোগিতায় খেয়ে-পরে বাঁচে। একটি টংঘরে থাকে। চার মাসের বাচ্চার যাতে ময়নাতদন্ত না হয়, এ বিষয়ে পরিবার ও আমরা এলাকাবাসী আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, মৃত শিশুটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। কীভাবে মারা গেছে, এ বিষয়ে তাঁদের কোনো ধারণা নেই। পরিবার বা এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ নেই। কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত