Ajker Patrika

ফরিদপুরের বোয়ালমারী: এক মামলায় স্থবির ৫ ইউপি

  • গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
  • উপজেলার ১০ ইউপির মধ্যে ৫টির চেয়ারম্যান আসামি।
হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ফরিদপুর
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে। মামলা করার পর থেকেই এসব ইউপির স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে নাগরিক সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপির একাধিক সদস্য (মেম্বার) জানিয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা সদরে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরদিন শনিবার রাতে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা করে দুই পক্ষ। দুই মামলায় ২২৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৮৭৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুটি মামলার মধ্যে একটি করেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ফরিদপুর-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থক মজিবুর রহমান বাবু। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর করা মামলায় অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে ১ নম্বর আসামিসহ ১৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০-২৫০ জনকে।

মজিবুর রহমান বাবুর করা মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি ইউপির মধ্যে ৫টির চেয়ারম্যানকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৬ নম্বরে গুনবহা ইউপির চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম (৫৭), ২২ নম্বরে শেখর ইউপির চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ (৪৮), ১১২ নম্বরে সাতৈর ইউপির চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু (৪৮), ১১৩ নম্বরে দাদপুরের মোশারফ হোসেন মুশা (৪৭) ও ১৫০ নম্বরে রূপাপাতের মিজানুর রহমান সোনা মিয়া (৪৪)।

সংশ্লিষ্ট ইউপির একাধিক সদস্য ও সচিবদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব ইউপির চেয়ারম্যানদের আসামি করায় স্বাভাবিক কার্যক্রমে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। কেউ কেউ পরিষদে এলেও কিছু সময় থেকেই চলে যান।

শেখর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম সরদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান ঠিকমতো পরিষদে আসছেন না, কোনো একসময় আসেন আবার চলে যান। তাঁকে আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ছাড়া যাঁরা জন্মনিবন্ধনসহ অন্য সেবা নিতে আসছেন, সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, নাগরিক সেবায় যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া এমন অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে মামলার বাদী মজিবুর রহমান বাবু বলেন, ‘এই পাঁচ চেয়ারম্যান খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। এই পাঁচজনের মধ্যে শুধু সিরাজুল ইসলাম বিএনপির এবং বাকিরা আওয়ামী লীগের লোক। গত ৫ আগস্টের পর খন্দকার নাসির সাহেবের আশ্রয়ে যায় এবং তাঁকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিপুল পরিমাণ টাকা ও লোকজন দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। শুক্রবারের ঘটনায় তাঁরাই বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম ঘটিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান।’

তবে এ সংঘর্ষ ও মামলা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না দাবি করে দাদপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতিই করি না এবং সম্পৃক্তও নই।’ তিনি বলেন, ‘আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইউনিয়নের প্রতিপক্ষের ইন্ধনে আসামি করা হয়েছে।’

এদিকে সাতৈর ইউপির চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি চিকিৎসক দেখাতে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান। বাকি তিনজনের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলে নম্বরে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

শুক্রবারের ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি গুনবহা ইউপির চেয়ারম্যান ও অন্য মামলার আসামি

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সি’ গ্রেডের গভর্নর খেতাব পেলেন ড. আহসান মনসুর

বাসে আগুন দেওয়ার সময় ‘বিশেষ জেলার’ একজন গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

গুলশান থেকে উদ্ধার রক্তাক্ত লাশটি পটুয়াখালীর ছাত্রদল নেতার

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির সুযোগ নেই, প্রজ্ঞাপন হতে পারে: সালাহউদ্দিন

সংবিধান মতেই সব হলে নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে: হামিদুর রহমান আযাদ

এলাকার খবর
Loading...