Ajker Patrika

ফরিদপুর বিভাগ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গণসমাবেশ ও পদযাত্রা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুর বিভাগ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে শহরে গণসমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। আন্দোলনকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দ্রুত ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানান।

কর্মসূচি থেকে বক্তারা শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে বিভাগ বাস্তবায়নবিরোধী আন্দোলনকে ‘আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন’ এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দেন।

‘ফরিদপুরের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে আজ সকাল ১০টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে গণসমাবেশ শুরু হয়। পরে বেলা ১১টায় পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জনতা ব্যাংকের মোড় ও হাসিবুল হাসান লাবলু সড়ক হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডে উল্লেখ করা হয়, ‘ফরিদপুর বিভাগ নিয়ে টালবাহানা মানব না’, ‘ফরিদপুরের সাথে বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘ফরিদপুর বিভাগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে’।

এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ১৯৮৫ সালে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসা সাংবাদিক ও লেখক মফিজ ইমাম মিলন। তিনি বলেন, একসময় ফরিদপুরের অন্তর্ভুক্ত ছিল বরিশাল জেলা। ১৮৯৩ সালে বরিশালকে আলাদা করা হয়। সেই বরিশাল আজ বিভাগীয় শহর, ময়মনসিংহকে বিভাগ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক ফরিদপুরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা দল-মতনির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে আন্দোলন করে যাব। যত দিন বিভাগ বাস্তবায়ন না হবে, তত দিন মাঠ ছাড়ব না।

ফরিদপুর উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘ফরিদপুর বিভাগ ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন উন্নয়ন কমিটির নামে আমাদের যাত্রা শুরু ১৯৮৫ সাল থেকে। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে এসেছি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এই সরকারের আমলে ফরিদপুর বিভাগের কার্যক্রম শুরু হবে। তাহলে ঐতিহাসিক ফরিদপুরের পুনঃমর্যাদা অধিষ্ঠিত হবে।’

আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুরকে বিগত সময়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বঞ্চিত করেছিল। ফরিদপুরের বড় রিজিওনাল অফিসগুলো গোপালগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বিভাগবিরোধী আন্দোলন করছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে আন্দোলন করছে। এই সরকার তাদের ফাঁদে পড়ে বিভাগ বাস্তবায়ন না করলে কঠোর আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম বাবুল। তিনি এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ‘এ দাবি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দাবি নয়, এটা ফরিদপুরের ২৫ লাখ মানুষের দাবি। বাংলাদেশের ১০টি পুরোনো জেলার মধ্যে ফরিদপুর একটি। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু ফরিদপুর অবহেলায় রয়ে যায়। এই পুরোনো জেলা রাজনীতিতে, কৃষ্টিতে, সংস্কৃতিতে, জনসংখ্যা ও ভৌগোলিকভাবে পদ্মার এপারে ঢাকার সঙ্গে থাকার কোনো যুক্তি নেই।’

শহিদুল ইসলাম দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে এই সরকারের আমলে ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ভাঙ্গা-ফরিদপুর সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ, দৌলতদিয়া-আরিচায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ জন্য তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য দেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল প্রতিনিধি, তরুণ সংগঠক ও শিক্ষার্থী নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত—ট্রাম্পের দাবির জবাবে যা বলল নয়াদিল্লি

ভাইকে ১১১ কোটি টাকার বাংলো তাহলে এ কারণেই দিয়েছেন কোহলি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত