Ajker Patrika

বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি 

ঢাবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পাকিস্তান বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের চালানো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে আমরা একাত্তর নামে একটি সংগঠন। আজ শনিবার বেলা ১১টায় সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথম দিনে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। আমরা একাত্তরের—চেয়ারপারসন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। 

সমাবেশে বক্তব্য আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নারীনেত্রী দিল আফরোজ দিলু, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা সমীরণ সরকার, আমরা একাত্তরের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এনামুল আজিজ রুমি, প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাশ, সাংবাদিক মাহফুজা জেসমিন ও সাংবাদিক রাকিবুল আলম রুশো, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কানিজ গোফরানি কোরায়শি, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মঞ্জুয়ারা রশীদ, ব্যবসায়ী ডানা নাজলি—প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে বাংলাদেশের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র ও সাধারণ নিরীহ মানুষসহ নারী ও শিশুদের ওপর যে বর্বর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ আজও এটিকে জেনোসাইড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশে-বিদেশে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী বলেন, ‘বাংলাদেশ জেনোসাইডের জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে সারা বিশ্বে জনমত গড়ে তুলতে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে একত্র হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে জেনোসাইডের জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার রাজনীতিক, জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা সমাবেশ, প্রদর্শনী, সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন করছে। জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ আন্দোলন থেকে আমাদের কখনো পিছপা হওয়া যাবে না। স্বীকৃতি আমাদের কোনো চাওয়া নয়, এটা আমাদের অধিকার।’ 

ময়মনসিংহ, যশোর, দিনাজপুর, নেত্রকোনা ও কুমিল্লা জেলায় সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী সাত দিন দেশের অন্যান্য জেলায় এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে—বলে জানান সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

জেনোসাইড নিয়ে গবেষণা করে বিশ্ব স্বীকৃত এমন চারটি সংগঠন ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে পরিচালিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনকে ‘জেনোসাইড’ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংগঠনগুলো হলো লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন, জেনোসাইড ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসাইন্স ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স। 

বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে ২৫ মার্চকে জাতীয় জেনোসাইড দিবস ঘোষণা করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বছর ১৯ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেনেভায় বাংলাদেশ জেনোসাইডের ওপর একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

এ ছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৪তম অধিবেশন জেনেভায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই অধিবেশনের পাশাপাশি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংগঠিত জেনোসাইডের স্বীকৃতির দাবিতে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন আলোচনা, সমাবেশ ও সেমিনার আয়োজন করছে। এরই অংশ হিসেবে আমরা একাত্তর দেশে-বিদেশে এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত