Ajker Patrika

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুলিশ-বিচারক সবাইকে সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
আলোচনা সভায় অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিবছরই আইনি সহায়তাপ্রত্যাশী নারীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এখনো অনেক নারী সহিংসতার শিকার হলেও মামলা করছেন না। সার্বিক পরিস্থিতির বিচারে সহিংসতার শিকার নারীদের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ও বিচারকসহ সবার সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মোহাম্মদ আল মামুন একথা বলেন।

মিরপুরের রূপনগরে আয়োজিত আলোচনা সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমজেএফের কর্মসূচি সমন্বয়ক রুমা সুলতানা।

সম্প্রতি এমজেএফ পরিচালিত একটি গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি জানান, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০১০ অনুযায়ী নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতার জন্য যথেষ্ট শাস্তির বিধান না থাকায় আইনজীবীরা এ-সংক্রান্ত মামলা নিতে খুব একটা আগ্রহ দেখান না। এই আইনে পারিবারিক সহিংসতা কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়। এর ফলে সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা আইনটির যথেষ্ট সুফল পাচ্ছেন না।

ধর্ষণের ঘটনায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে এমন কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরেন উই ক্যান নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক জিনাত আরা হক। আইনি, আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিকসহ নানা জটিলতায় কীভাবে নারীরা বিচার থেকে বঞ্চিত হন, তা তাঁর আলোচনায় উঠে আসে।

জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী তাঁর স্বামী বা সঙ্গীর হাতে খুন হচ্ছেন। বাংলাদেশে নারী নির্যাতন-সংক্রান্ত অনেক আইন ও নীতিমালা থাকলেও সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কারণ আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যে দায়বদ্ধতা ও ব্যক্তির আর্থিকসহ বিভিন্ন সক্ষমতা দরকার, তা নেই। অগ্রগতি হচ্ছে; কিন্তু তার গতি খুবই ধীর।

সমস্যা মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন নাগরিকতা-সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের ডেপুটি টিম লিডার ক্যাথারিনা কোনিগ। কানাডীয় হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি স্টেফানি সেইন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের নতুন হাইকমিশনার মনে করেন, শুধু পেশাগত জায়গা থেকে নয়; বরং ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকেও জেন্ডার সমতা নিয়ে কাজ করতে হবে। তৃণমূল থেকে নীতিনির্ধারক পর্যায় পর্যন্ত কাজ করলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’

সভাপ্রধানের বক্তব্যে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। কিন্তু কিছু ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও প্রথাগত কারণে এ ক্ষমতায়ন, অগ্রগতি একটি জায়গায় এসে থমকে গেছে। আইনের বাস্তবায়নে বড় ব্যর্থতা রয়ে গেছে। তৃণমূল পর্যায়ে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহির অভাবে এই উপমহাদেশে বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দুঃখজনক। আলোচিত বিষয় জলবায়ুর পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলার পরিকল্পনায়ও নারীদের কথা মনে রাখার তাগিদ দেন এমজেএফ প্রধান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত