Ajker Patrika

স্বামীকে আটকে নারীকে ধর্ষণ: মামুনের ইয়াবা বিক্রির হটজোন জাবি ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৩৬
Thumbnail image

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মামুনুর রশিদ মামুন। ওই দম্পতির পূর্বপরিচিত মামুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করত। তার ইয়াবা বিক্রির হটজোন জাবি ক্যাম্পাসের বটতলা। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গতকাল রাতে যৌথ অভিযানে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনকে (৪৪) রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে ও নওগাঁ সদর এলাকা থেকে মো. মুরাদকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি বলেন, গত ৬-৭ বছর ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত মামুন কক্সাবাজারের টেকনাফ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৭-৮ হাজার ইয়াবা আনতো। এসব মাদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকাসহ মাদকসেবি শিক্ষার্থীকে সরবরাহ করত। মাদক বিক্রির সুবাদে মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয় মামুনের। মাঝেমধ্যে হলে মাদক বিক্রি ও ছাত্রদের সঙ্গে মাদক সেবন করত। 

ভুক্তভোগীর সঙ্গে মামুনের পরিচয়ের বিষয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, একই এলাকায় বসবাসের কারণে গত ৩-৪ বছর আগে মামুনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর স্বামীর পরিচয় হয়। মাদক কারবারের কারণে কিছুদিন আগে মামুনের থাকার জায়গার সমস্যা সৃষ্টি হয়। তখন ভুক্তভোগীর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে তাদের ভাড়া বাসায় সাবলেট হিসেবে প্রায় ৩-৪ মাস অবস্থান করে। 

খন্দকার মঈন বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে মামুন ভুক্তভোগীর স্বামীকে ফোন দিয়ে জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই হলে তার থাকার ব্যবস্থা করেছে। তাই সে এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকবে। মোস্তাফিজের সঙ্গে ভুক্তভোগীর স্বামীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বললে সন্ধ্যায় মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে দেখা করে ভুক্তভোগীর স্বামী। পরে মামুন তার সহযোগী মোস্তাফিজ, মুরাদ, সাব্বির, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামানের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেয়। 

তিনি বলেন, মামুন ভুক্তভোগীর স্বামীর বাসায় থাকাকালে তার (মামুন) ব্যবহৃত কাপড় আনতে ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে ফোন দিতে ভুক্তভোগীর স্বামীকে বলে। রাত ৯টার দিকে কাপড়সমূহ একটি ব্যাগে করে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে আসে ভুক্তভোগীর স্ত্রী। এ সময় কাপড়ের ব্যাগসহ ভুক্তভোগীর স্বামীকে হলের ৩১৭ নম্বর রুমে নিয়ে যান মুরাদ। 

তারা হলের রুমে অবস্থান করেন। আর মামুন ও মোস্তাফিজ ভুক্তভোগীকে হলের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুজনকেই বাসায় চলে যেতে বলে। স্ত্রী গণধর্ষণের শিকার জেনে থানায় গিয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী। ঘটনা জানাজানি হলে মামুন ও মুরাদ আত্মগোপন করে। 

র‍্যাব জানায়, মামুন প্রায় ২০ বছর আগে ঢাকার জুরাইন এলাকায় এসে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে চাকরি করে। গার্মেন্টসের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ২০১৭ সাল থেকে পুরোপুরি মাদক ব্যবসায় জড়ায়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মাদক সংক্রান্তে ৮টি মামলা রয়েছে এবং এর আগে এ সকল মামলায় একাধিক বার কারাভোগ করেছে। আর মুরাদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তার বিরুদ্ধে নওগাঁ থানায় মারামারি সংক্রান্তে ১টি জিডি রয়েছে। ৩১৭ নম্বর কক্ষ তার নামে বরাদ্দ হলেও থাকতো অন্য রুমে। 

মামুন ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রি ছাড়াও নারীদের হেনস্তায় জড়িত ছিল। তবে ভুক্তভোগী অনেক নারী ভয়ভীতির কারণে বিষয়টি প্রকাশ করেনি।

আরো পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত