Ajker Patrika

ডেমরায় ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাসার ৪ ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরি

শ্যামপুর-কদমতলী প্রতিনিধি
ডেমরায় ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাসার ৪ ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরি

রাজধানীর ডেমরায় একই ভবনের ৪টি ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. ওয়াহিদুজ্জামান সবার পক্ষে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ডেমরা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৯ এপ্রিল ডেমরার সাইনবোর্ড সংলগ্ন নিউটাউন আবাসিক এলাকায় (মাহমুদ নগর) একটি ভবনে সকাল ৯টা থেকে ১৫ এপ্রিল রাত ১১টার মধ্যে যেকোনো সময়ে বাসা খালি পেয়ে এ দুর্ধর্ষ চুরি করেছে চোরেরা। কোনো ফ্ল্যাটের জানলার গ্রিল ও কোনো ফ্ল্যাটের বারান্দার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে ৪টি ফ্ল্যাটে চুরি করা হয়। এ সময় ওয়াহিদুজ্জামানের ফ্ল্যাট থেকে ৩৫ হাজার টাকা, সোলাইমানের ফ্ল্যাট থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সামছুর রহমানের ফ্ল্যাট থেকে ৬ লাখ টাকা ও বোরহান উদ্দিনের ফ্ল্যাট থেকে ৫৫ হাজার টাকাসহ প্রতিটি ফ্ল্যাটে থাকা ৫ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় মালামাল চুরি গেছে। এ ভবন থেকে মোট নগদ ১১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং ৫ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় চোরেরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ৯ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে সপরিবারের ঈদের টানা ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যান ভুক্তভোগী মো. সোলাইমান, সামছুর রহমান, বোরহানউদ্দিন ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান। পরবর্তীতে গত ১৫ এপ্রিল রাত ১১টায় বাসায় এসে তাঁরা দেখেন সবার বাসায় পরিকল্পিতভাবে চুরি হয়েছে। এ ছাড়া ১০ এপ্রিল ঘরে তালা দিয়ে সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান মো. ইউসুফ নামে একজন। গত ১২ এপ্রিল বিকেলে তাঁরা বাড়িতে এসে দেখেন ঘরে চুরি হয়েছে।

পরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ১১ এপ্রিল দিবাগত গভীর রাতে ঘর খালি পেয়ে ইউসুফের শ্বশুর, শ্যালক ও তাঁদের এক সহযোগী মিলে ইউসুফের ঘরে চুরি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। এ সময় তাঁরা ওই ঘরে থাকা নগদ ৯ লক্ষ টাকা, সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল ফোন, ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি ট্যাব, বাড়ির দলিলপত্র, মামলার কাগজপত্র ও ব্যাংকের চেক বই চুরি করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. ইউসুফ সরকার গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে ডেমরা থানায় অভিযুক্ত ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন—ডেমরার ডগাইর নিউ টাউন এলাকার মৃত লাল মিয়া আমিনের ছেলে ও বাদীর শ্বশুর মুখলিছুর রহমান কাসেমী (৬০), তার ছেলে মো. আসাদ (১৪) ও সহযোগী চাঁদপুর সদর থানার মধ্যে চর গ্রামের মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (২৪)।

এদিকে ডেমরার পশ্চিম হাজীনগর, হাজিনগর, বক্সনগর, ডগাইর, বড়ভাঙ্গা ব্যাংক কলোনি এসব এলাকায় ছিঁচকে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছ। এরা রাতের আঁধারে সুবিধাজনক স্থান থেকে বিভিন্ন ভবনের বিদ্যুতের সার্ভিস লাইনের তার কেটে নিয়ে যায়। এভাবে গত ২ মাসে প্রায় ৩০টি ভবনের তার চুরি হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে ২ মাসে চুরির ঘটনা ঘটেছে মোট ৩৫টি। 

এ বিষয়ে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার রোজার সময়েই আমরা মাইকিং ও জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে সবাইকে সজাগ থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। কারণ ঈদের লম্বা ছুটিতে অসাধু চক্র সুযোগ নিতে পারে। তারপরও কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা এসব চোরদের ব্যাপারে সিরিয়াস। দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত