Ajker Patrika

খুন করে ফোনে স্বজনকে জানানো হয় লাশ কোথায় পাওয়া যাবে

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০: ০০
খুন করে ফোনে স্বজনকে জানানো হয় লাশ কোথায় পাওয়া যাবে

‘রবিউল মারা গেছে, তাঁর লাশ হেমায়েতপুর রাখা হবে। সেখান থেকে লাশ নিয়ে নিয়েন।’ একদিন মধ্যরাতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের শাশুড়িকে ফোন করে এতটুকু কথা বলে ফোন রেখে দেন। অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোনে এমন কথা শুনে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা রেখা বেগম জ্ঞান হারান। পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম।

সেই রাতেই রবিউলকে খুঁজতে বের হন স্বজনেরা। কিন্তু রবিউলের ফোন বন্ধ পান তাঁরা। কোথাও তাঁর সন্ধান মেলে না। পর দিন রবিউলকে তাঁর স্বজনেরা খুঁজে পান রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মধ্য রাতে রেখা বেগমকে এমন ফোন দিয়ে তাঁর মেয়ের জামাই লস্কার রবিউল ইসলামকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল খুনি। খুনির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের মরদেহ পরের দিন আমিন বাজারের ঢাকা–আরিচা মহাসড়কের যমুনা ন্যাচারাল পার্কের সামনে ঝোপের ভেতর থেকে উদ্ধার করে সাভার থানা-পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সাভার থানা। খবর পেয়ে মর্গে গিয়ে রবিউল ইসলামের মরদেহ শনাক্ত করেন রবিউল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা বেগম এবং তার ভাই ইরান লস্কার।

রবিউল ইসলাম মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পল্লির ১ নম্বর গেটের সামনে ‘শাহ হোটেল’ নামে একটি খাবারের দোকান করতেন। পরিবার নিয়ে দোকানের পাশেই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ৫ / ৪৭–ক বাসায় থাকতেন। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে তিনি আশুলিয়ার জামগড়ায় তার ভাগনেদের সঙ্গে দেখা করার জন্য নিজের হোটেল থেকে বের হন। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি তাঁর ভাগনে নাজমুল ইসলাম জুয়েল ও হাসিব বিশ্বাসের সঙ্গে সেখানেই দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা শেষ করে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুলিয়া ইপিজেড ইসলামিয়া হোটেলের মালিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য রওনা হন।

ভাগনে নাজমুল ইসলাম জুয়েল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামা রিকশায় করে আশুলিয়া ইপিজেডের দিকে যান। সেখানে ইসলামিয়া হোটেলের মালিকের সঙ্গে দেখা করে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে তিনি আর বাসায় যাননি। তাঁকে না পেয়ে ওই দিন রাতেই আমরা খুঁজতে বের হই। তবে তাঁকে রাতে কোথাও খুঁজে পেলাম না।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আশুলিয়া ইপিজেড বসে ওই দিন রাত ৭টা ১০ মিনিটের দিকে রবিউল ইসলাম তাঁর নিজের মোবাইল ফোন থেকে স্ত্রী হাফিজা বেগমকে ফোন দেন। ফোনটি রিসিভ করে মেয়ে হাবিবা। হাবিবার বয়স ছিল তখন ৯ বছর। ওই দিন রাতে বাবার সঙ্গে ফোনের কথোপকথনের বিষয়ে হাবীবা বলে, ‘আমি বলি, আব্বু সারা দিন তোমাকে দেখি না, তুমি তাড়াতাড়ি বাসায় আসো। আব্বুও আমাকে বলেছিল, মা, আমি আসছি।’

মেয়ের সঙ্গে কথোপকথনের পর পরিবারের আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি রবিউলের। এর মধ্যে তার স্ত্রী কয়েকবার ফোন দিয়ে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পান। অনেক রাত হলেও তিনি বাসায় ফেরেননি বলে, পরিবার তাঁকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে থাকে। হঠাৎ ওই দিন রাত ১২টার দিকে রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোন থেকে তার শাশুড়ি রেখা বেগমরে মোবাইল ফোন নম্বরে একটি ফোন আসে। হঠাৎ নিখোঁজ রবিউলের ফোন দেখে দ্রুত ফোনটি রিসিভ করেন। ফোন রিসিভ করেই তিনি প্রশ্ন করেন, রবিউল তুই কই? তবে ওপাশ থেকে কোনো উত্তর আসে না। কিছুক্ষণ পর রেখা বেগমকে ফোনদাতা প্রশ্ন করেন, রবিউল তোমার কী হয়? রেখা বেগম তাঁকে বলে, ‘আমার ছেলে।’ এরপর ফোনদাতা বলেন, রবিউল মারা গেছে, তাঁর লাশ হেমায়েতপুরে রাখা হবে। সেখান থেকে নিয়ে নিও।

রেখা বেগম রবিউলের আপন খালা ও শাশুড়ি। খালাতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন রবিউল। মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পল্লিতে রবিউলের সঙ্গেই তিনি থাকতেন। গত মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে কথা হয় রেখা বেগমের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তখন বিশ্বাস করিনি, রবিউলকে তাঁরা মেরে ফেলেছে। আমি ভাবছি কেউ আমার সঙ্গে মজা করে। কিন্তু আমার বিশ্বাস অসত্য হয়েছে। ঠিকই তারা রবিউলকে মেরে আমাকে ফোন দিয়েছে।’

রবিউল হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ঢাকা জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ একটি নীল রঙের বাসের সন্ধান পায়। নিরালা সুপার নামের ওই বাসটি মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে তিন দিনের জন্য ৩০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছিল ৮ / ১০ জনের একটি চক্র। চক্রের সবাই সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন। এই চক্রের প্রধান বশির মোল্লা। তিনি থাকেন আশুলিয়া তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। চক্রটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—হাফিজ শেখ, আনোয়ার হোসেন, বড় আলামিন, জুয়েল, নাঈম ইসলাম, আসলাম, টিটো খান, আজাদ হোসেন জাবেদ, আ. রহিম, জসিম মিয়া, আমির হোসেন, নাজমুল ও তপন মন্ডল।

২০২০ সালের ৪ অক্টোবর চক্রের চালক নাজমুল ও হেলপার তপন বাসটি নিয়ে সাভারের নবীনগর যায়। নবীনগর থেকে বাসটিতে চক্রের অন্য সদস্যরা ওঠেন। তাদের মধ্যে কেউ যাত্রী সাজেন, কেউ বাসটির স্টাফ সেজে যাত্রী তুলতে তুলতে পাটুরিয়া ঘাটের দিকে যান। পর দিন ৫ অক্টোবর তারা ফের বিভিন্ন বাস স্টপেজ থেকে যাত্রী তুলে ঢাকার দিকে রওনা হয়। বাসটি গাবতলী যাবে বলে যাত্রী তুলতে থাকে। সাভারের নবীনগর থেকে রবিউল ইসলাম ঢাকায় আসবে বলে ওই বাসে উঠে বসেন।

পিবিআই জানায়, রবিউলকে নিয়ে ওই বাসটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় চক্রের দলনেতা বশিরকে মারধর করে তার কাছ থেকে নগদ টাকা, গলার স্বর্ণের চেইন নিতে চায়। এ সময় রবিউল বাধা দিলে চক্রের চার-পাঁচজন সদস্য তাঁকে বাসের মেঝেতে ফেলে মারধর করে। একপর্যায়ে তাঁকে লোহার হুইল রেঞ্জ দিয়ে পুরুষাঙ্গ ও মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে রবিউল বাসের মধ্যেই মারা যান। এরপর তাঁর মরদেহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যমুনা ন্যাচারাল পার্কের সামনের ঝোপে ফেলে রাখে। হত্যার পর খুনিরা তাঁর শাশুড়িকে ফোন দিয়ে জানিয়ে দেয়।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই। অভিযোগপত্রে ওই ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সালে ইমরান বলেন, আসামিরা প্রত্যেকেই ডাকাত। তারা বাস ভাড়া করে ডাকাতি করে, ছিনতাই করে যাত্রীদের মারধর করে নামিয়ে দেয়, আবার কখনো হত্যা করে। এরা প্রত্যেকেই ডাকাত।

তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতি মামলাসহ সাত-আটটি মামলা রয়েছে। তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে রবিউলের পরিবার এখনো মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পল্লির একটি ছোট টিনশেড ঘরে থাকেন। স্ত্রী হাফিজা বেগম, দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং হাফিজার মা রেখা বেগমের সংসারে এখন অভাব। রবিউলের সেই হোটেলটিও নেই। হোটেলটি না চালাতে পেরে সেটির আসবাবপত্র, হাঁড়িপাতিল অপর এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়েছে রবিউলের স্ত্রী। তা থেকে কিছু টাকা পান তারা। তা দিয়ে তাঁর পরিবার কোন রকম চলে।

রবিউলের স্ত্রী হাফিজা বেগম বলেন, ‘বড় ছেলে আমির হামজা হেফজখানায় পড়েছে। এরপর মেয়ে হাবীবা ও ছোট ছেলেকেও একটা মাদ্রাসায় দিয়েছি। তবে সংসার চালানো দায় এখন। আমি অনেক রোগে ভুগছি, চিকিৎসাও করাতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই, জনতার হাতে আটক ২

নীলফামারী প্রতিনিধি
আটক দুজন। ছবি: সংগৃহীত
আটক দুজন। ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে পথচারীকে আটকে দেহ তল্লাশি, মারধর ও ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে জনতা। পরে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ ভেড়ভেড়ী এসডিএফ অফিসসংলগ্ন এলাকায়। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে নিশ্চিত করেন কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল কুদ্দুস।

আটক দুজন হলেন নীলফামারী সদরের কিশামত পঞ্চপুকুর গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে হেদায়াতুল্লাহ সুজন (৩২) এবং একই উপজেলার বেড়াডাঙ্গা ব্রমোতর গ্রামের সুরত আলীর ছেলে নুর আলম (২৮)।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস জানান, গতকাল বিকেলে পুটিমারীর চৌধুরীবাজার থেকে ভ্যানে বাড়ি ফিরছিলেন তোহা ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। এ সময় দক্ষিণ ভেড়ভেড়ী এসডিএফ অফিসসংলগ্ন রাস্তায় তাঁকে পাঁচ-ছয় ব্যক্তি নিজেদের ডিবি সদস্য পরিচয় দিয়ে আটক করে দেহ তল্লাশি করেন। এতে বাধা দিলে তোহাকে তাঁরা মারধর শুরু করেন এবং পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা বের করে নেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে ডিবি পরিচয়দানকারীরা মোটরসাইকেলে করে পালানোর চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী এ সময় দুজনকে আটক করে। অন্যরা পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় তোহা ইসলামের ভাই ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার থানায় একটি মামলা করেন। দুপুরে ওই মামলায় পুলিশ তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য ডাকাতিয়ার পাড়ে অধিগ্রহণ হচ্ছে ৩০ একর জমি

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ করতে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আজ বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন সহকারী প্রকল্প পরিচালকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ করতে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আজ বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন সহকারী প্রকল্প পরিচালকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিষ্ঠার প্রায় সাত বছর পর ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের চূড়ান্ত কাজ চলছে। প্রস্তাবিত জমির শ্রেণি যাচাই-বাছাই শেষে ওই এলাকায় ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নের নিজ গাছতলা গ্রামে ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে পূর্ব দিকে দেওয়ানবাড়ি পর্যন্ত ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের জমিগুলোর শ্রেণি সঠিক আছে কি না তা পরিদর্শন করা হয়।

এ সময় চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) একরামুল সিদ্দিক, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রকল্প পরিচালক হারুন অর রশিদ, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাপ্পি দত্ত রনি উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে প্রস্তাবিত জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে প্রস্তাবিত জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

একরামুল সিদ্দিক বলেন, ‘চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য এর আগেও জমির শ্রেণি সঠিক আছে কি না, তা দেখা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব সার্ভেয়ারদের মাধ্যমে এখন আবার অধিকতর যাচাই করা হলো। কারণ, এর সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের আর্থিক বিষয় জড়িত। যাচাই শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপর প্রাক্কলন তৈরি করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হবে এবং আমরা দুটি মৌজায় মেডিকেলের জন্য এখানে ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করব।’

সহকারী প্রকল্প পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘২০১৮ সালে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ইতিমধ্যে দুটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পাস করে বের হয়েছেন। চাঁদপুর সদর হাসপাতালে বর্তমানে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে জেলা ও আশপাশে অনেক রোগী সেবা নিতে পাচ্ছেন।’

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে শ্রেণি যাচাই-বাছাই কাজের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নকাজ এগিয়ে চলছে। মেডিকেলের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের বহুদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তৃতীয় দিনের মতো রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

রাবি প্রতিনিধি  
বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাঁরা বিভাগের সভাপতির অপসারণেরও দাবি জানান।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভাগের সামনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

সমাবেশে বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা তিন দিন ধরে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছি। আমরা বিভাগের সভাপতিকে ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি আমাদের দাবি মেনে নেননি এবং আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলেননি। তিনি আমাদের প্রতি অসহযোগিতা করেছেন।’

বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন রাবির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাইসুল ইসলাম মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা পিএসসিতে চিঠি পাঠানোর জন্য একটি আবেদনপত্র প্রস্তুত করে স্বাক্ষর নিতে গেলে বিভাগের সভাপতি তাতে স্বাক্ষর করেননি। তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতেও অস্বীকৃতি জানান। এ কারণে আমরা বর্তমান সভাপতির অপসারণ চাই।’

এ বিষয়ে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এনামুল হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

এর আগে গত মঙ্গলবার তিন দফা দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের তিন দফা দাবিগুলো হলো–বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন, ইন্টার্নশিপ ভাতা চালু করা এবং বিসিএস পরীক্ষায় চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানের টেকনিক্যাল ক্যাডার সংযোজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, কিশোরের মৃত্যু

চৌগাছা প্রতিনিধি  
সাগর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
সাগর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের চৌগাছায় সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে সাগর হোসেন (১৭) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে তারিনিবাস মাঝেরপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সাগর উপজেলার মাশিলা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, আজ সকালে সাগর নিজ বাড়ি মাশিলা থেকে মাশিলা-তারিনিবাস সড়ক দিয়ে চৌগাছা শহরে যাচ্ছিলেন। তারিনিবাস মাঝেরপাড়া এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি কাঁঠালগাছে ধাক্কা খায়। এতে সাগর গুরুতর আহত হন।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার ১৬২ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিভক্ত ইউরোপ

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ‘অস্বীকৃতি জানানোয়’ রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের ‘প্রথম’ নিষেধাজ্ঞা

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত