Ajker Patrika

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটবে: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৪৭
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগোপযোগী পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম–২০২২ অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা হাতেকলমে প্রয়োগ করতে পারার পারদর্শিতা অর্জন করবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটবে।’

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষাক্রম–২০২২ বিস্তরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, ‘পারদর্শিতা পরিমাপের জন্য আগের মতো শুধু খাতা-কলমের পরীক্ষা পদ্ধতিতে এখন চলছে না। ফলে পরীক্ষা পদ্ধতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। নতুন পদ্ধতিতে শ্রেণি কক্ষে বা শ্রেণি কক্ষের বাইরে শিক্ষার্থীরা যখনই শিখবে তখনই তার মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়াও বছরে দুইবার তাদের সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। অবশ্যই এটা একটা বড় ধরনের পরিবর্তন। প্রচলিত পদ্ধতিতে যেখানে শিক্ষার্থীরা বেশি নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত সেখানে হঠাৎ করেই এখন নম্বরের বদলে শেখার প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। যদি এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে আগামী প্রজন্ম অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে বড় হবে। তাদের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটবে।’

শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন অব চেঞ্জ। আপনারা বিশ্বাস, আস্থা রাখুন। আগামী এক বছরের মধ্যে বাচ্চাদের মধ্যে যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখবেন তাতে সবাই গর্ব অনুভব করবেন।’

নতুন শিক্ষাক্রমের আঙ্গিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটিতে শেখার পদ্ধতি, পরিসর, মূল্যায়ন পদ্ধতি ভিন্ন। প্রশ্ন করাকে এখানে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুসন্ধিৎসা জাগিয়ে তুলবে এই শিক্ষাক্রম। আমরা অনেক কিছু মুখস্থ করেছি কিন্তু প্রয়োগ করতে পারিনি। নতুন শিক্ষাক্রম আনন্দময় শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করবে।’

আগামী দিনে শিক্ষার্থীরা মানবিকতা, সৃজনশীলতা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সংস্কৃতিসহ সবকিছু নিয়েই ভাবনার ডানা মেলতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যোগাযোগের দক্ষতা, দলবদ্ধতা, সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতা অর্জনে এ শিক্ষাক্রম উদ্বুদ্ধ করবে। বেশি নাম্বার পাওয়ার প্রতিযোগিতা থেকে বেশি শেখার প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অনেক দেশ থেকে এগিয়ে থাকলেও উদ্ভাবনা কাজে ও উন্নত চিন্তাভাবনা থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। কট্টর প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী আমাদের এগিয়ে যাওয়ার যে লক্ষ্য সেটা বন্ধ করার একটা ব্যাপক চেষ্টা করছে। তারা চায় না শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করুক, চিন্তা করুক। তারা এখনো মধ্যযুগীয় ফতুয়া দিয়ে শিক্ষা-সমাজ ব্যবস্থা প্রচলনের চেষ্টা চালাচ্ছে।’ 

অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘জোর করে কখনো কাউকে কিছু শেখানো যায় না। শিক্ষকের কাজ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শেখার আগ্রহ তৈরি করা। নতুন শিক্ষাক্রম যদি আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করে তবে শিক্ষায় আর আমাদের চিন্তার কিছু নেই।’ 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষার একটা আনন্দমিছিল হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রম প্রসঙ্গে যখন জানতে চেয়েছি, শিক্ষার্থীরা বলছেন, আগে আমরা শুধু মুখস্থ করতাম। কিন্তু এখন বুঝে শিখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত