Ajker Patrika

রাস্তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর যুবক বলছিলেন, ‘মেয়েটা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে’

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, ১০: ৩৩
শিল্পী বেগমের আইডি কার্ড। ছবি: সংগৃহীত
শিল্পী বেগমের আইডি কার্ড। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর দক্ষিণখানে রাস্তায় প্রকাশ্যে শিল্পী বেগম (২৫) নামের এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী মো. তুহিন (৩২)। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা স্বামীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেছে।

আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে দক্ষিণখানের শাহ কবীর মাজার রোডের চালাবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই নারী দক্ষিণখানের চালাবন এলাকার ওলিও অ্যাপারেলস লি. নামের একটি পোশাক কারখানায় জুনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। আর স্বামী তুহিন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার জয়নগর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।

বর্তমানে দক্ষিণখানের চালাবন এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তুহিন-শিল্পী দম্পতি। তাঁদের সংসারের জান্নাত (৭) নামের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

শিল্পী ভোলা জেলার দুলারহাট উপজেলার আবু বাকেরপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। শিল্পীর মা-বাবা উত্তরখানের ফজির বাতান এলাকায় থাকেন।

হত্যাকাণ্ডের সময় পুরো ঘটনাটি দেখেছেন ঘটনাস্থলের পাশের একটি মসলার দোকানি কামাল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মাত্র দোকানে এসে দোকান গোছাচ্ছিলাম। তখন দেখি, এক যুবক এক নারীকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর শরীরে পাড়া দিয়ে ধরে হাতে থাকা দা দিয়ে গলায় পরপর দুটি কোপ দিয়েছে। একটি কোপে প্রথমে কিছুটা কেটে গেছে। দ্বিতীয় কোপে তাঁর মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’

কামাল বলেন, ‘ওই সময় আমি ফেরাতে যাওয়ার চেষ্টা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর হাতে ধারালো দা থাকার কারণে পারিনি। আর ঘটনার সময় চায়ের দোকানের আরেক লোক ছিল। তিনিও সাহস পাননি।’ তিনি বলেন, ‘হত্যার পর ওই যুবক কোথাও পালিয়ে যাননি। লাশের পাশে ঘুরতেছিলেন আর বলতেছিলেন, এই মেয়েটা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমার সব শেষ করে দিয়েছে। আর ৪-৫ মিনিট লাশের আশপাশে ঘুরছেন। তারপর থানা রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় আশপাশের ছাত্র ও লোকজন তাঁকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এদিকে ঘটনাস্থলেই ওই নারী মারা যান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’

হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মহিদুল ইসলাম, দক্ষিণখান জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) মো. নাসিম এ গুলশান, দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাইফুর রহমান মির্জাসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেই সঙ্গে আশপাশের লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে ক্রাইম সিন ও আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জব্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি-পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্ত্রীকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা স্বামীকে গ্রেপ্তার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

মহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজহারুলের খালাসের রায়ের পর ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বললেন, প্রহসনের সাক্ষী হয়েছি

রাস্তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর যুবক বলছিলেন, ‘মেয়েটা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে’

সুব্রত বাইন বরিশালের বাড়িতেও গিয়েছেন, গ্রেপ্তারে স্বজনদের স্বস্তি

ডিএনসিসির প্রশাসক এজাজের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল সেনাবাহিনী

৫ আগস্টের পর গাজীপুরের বাড়িতে আসেন সুব্রত বাইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত