Ajker Patrika

মহাসড়কের পাশের ট্রমা সেন্টারটি হয়নি চালু

  • নির্মাণকাজ শেষ করে হস্তান্তর করা হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে
  • ধার করা দুজন সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার কাজ করছেন
  • ১৪ জনবলের জায়গায় নিয়োগ হয়েছে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী
জাবেরুল ইসলাম বাঁধন, গোপালগঞ্জ
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ঘোনাপাড়ায় অবস্থিত গোপালগঞ্জ ট্রমা সেন্টার। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ঘোনাপাড়ায় অবস্থিত গোপালগঞ্জ ট্রমা সেন্টার। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জে হস্তান্তর হওয়ার পর সাড়ে পাঁচ বছর কেটে গেলেও পরিপূর্ণভাবে চালু হয়নি ট্রমা সেন্টারের কার্যক্রম। ধার করে আনা মাত্র দুজন সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে কোনো রকমে চালু রাখা হয়েছে বহির্বিভাগ। এখানে চিকিৎসকসহ ১৪ জন জনবল দেওয়ার কথা থাকলেও নিয়োগ হয়েছে মাত্র একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। নষ্ট হচ্ছে এক্স-রে মেশিনসহ অস্ত্রোপচার কক্ষের যন্ত্রপাতি। কয়েকবার ঘটেছে চুরির ঘটনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা বা আঘাতের রোগীদের জরুরি ও নিবিড় চিকিৎসাসেবা দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ঘোনাপাড়ায় ১ একর জায়গার ওপর নির্মাণ করা হয় গোপালগঞ্জ ২০ শয্যাবিশিষ্ট ট্রমা সেন্টার, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় ২০১৪ সালের মার্চে। মেয়াদ ছিল ৬ মাস। এরপর মেয়াদ বৃদ্ধি হয় ছয় দফা, আর প্রকল্পের পরিচালক পরিবর্তন হয় চারবার। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হলেও হস্তান্তর করা হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে।

এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা বেগমের নামের একজন বলেন, ‘ট্রমা সেন্টার থেকে আমাদের জ্বর, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানাসহ ছোটখাটো কিছু রোগের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। আর কোনো চিকিৎসা এখানে হয় না। সাধারণ রোগের কোনো ওষুধ লাগলে এখন আমরা ট্রমা সেন্টারে আসি।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাম আজম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই ট্রমা সেন্টার তৈরি হয়ে আছে; কিন্তু এখানো চালু করতে পারেনি। শুধু গ্যাসের বড়ি, মাথাব্যথার বড়ি, জ্বরের বড়ি দেওয়া হয়। ট্রমা সেন্টার কি এ জন্যই তৈরি করা হয়েছে? আমরা এলাকাবাসী একেবারেই এর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারের লাখ লাখ টাকা খরচ করে যা করা হইছে, এর প্রতিদান আমরা কিছুই পাই না।’

পাশের চা বিক্রেতা বাবর আলী মুন্সী বলেন, ‘পঙ্গু হাসপাতাল হওয়ার পর এখানে অনেকবার চুরি হইছে। চালু না করায় এসব সমস্যা হইছে। হাত-পা ভাঙলে আমাদের খুলনা, না হয় ঢাকা পাঠায়ে দেয়। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ, আমাদের কি ঢাকা বা খুলনা গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব? এ জন্য গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রুত পঙ্গু হাসপাতাল চালুর ব্যবস্থা করা হোক।’

এ নিয়ে কথা হলে প্রকল্প পরিচালক (সর্বশেষ ও সাবেক) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্রুতই মূল নির্মাণকাজ শেষ হয় এবং ২০২০ সালে মূল ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। এখানে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১৪টি পদে নিয়োগের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সে সময় চালু করা সম্ভব হয়নি ট্রমা সেন্টারের কার্যক্রম।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘ট্রমা সেন্টারটি চালু করার জন্য কয়েক দফা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে একজন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি এখান থেকে বদলি হয়ে চলে গেছেন। তাই সেন্টারটি চালু রাখার জন্য দুজন সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে শুধু বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছে। আশা করি, দ্রুত জনবল নিয়োগ হলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সালিস না মেনে মামলা, ক্ষিপ্ত মেম্বার-চেয়ারম্যানরা হত্যা করেন মা ও ছেলে-মেয়েকে: র‍্যাব

১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, ভারতীয় নিরব মোদির বেলজিয়ান ভাই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার

‘ভিজিএফ কার্ড চাওয়ায়’ নারীনেত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন বিএনপি নেতা

নিউইয়র্কে মামদানির জয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে মোদি সমর্থকেরা

চাঁদা না পেয়ে ‘মব’ তৈরি করে নওশেদকে মারধর, বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত