Ajker Patrika

বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উদীচীর নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উদীচীর নিন্দা

বাউল সাধক আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আজ রোববার (২৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে আবহমান বাংলার অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনকারী বাউলদের নির্যাতনের এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয় বলে মত দিয়েছেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। পাশাপাশি ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের হুমকির মুখে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নরসিংপুর গ্রামে লালন সাধুসঙ্গ আয়োজন সীমিত করার নিন্দাও জানান তাঁরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থেকে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী অপশক্তি এ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চা বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিভিন্ন স্থানে লোকসংগীতের আসর বন্ধ করে দেওয়া, লালন উৎসবে বাধা দেওয়া, মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা এবং ধর্মীয় ও জাতিগতভাবে সংখ্যায় কম—এমন মানুষদের ওপর ধারাবাহিক হামলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

তাঁরা আরও জানান, আবহমান কাল থেকে এ ভূখণ্ডে পালা গান, জারি গানসহ নানা ধরনের গানের আসর জনপ্রিয়। এসব আসরে সৃষ্টিকর্তার নানা বিষয় নিয়ে পরস্পর তর্ক ও আলোচনা করেন বাউল ও লোকশিল্পীরা। এসব আলোচনায় মূলত ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হয়। বাউল আবুল সরকারও দীর্ঘদিন ধরে সে কাজ করে আসছেন। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে।

উদীচী নেতাদের ভাষ্য, বিভিন্ন সময় ধর্মীয় ইস্যু তুলে লোকসংস্কৃতি চর্চায় বাধাদান ও সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোনো ঘটনাতেই দৃষ্টান্তমূলক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি পুলিশ-প্রশাসনকে। মানুষের মতপ্রকাশ, ধর্মপালন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালনে বারবারই ব্যর্থ হয়েছে তারা।

অবিলম্বে মৌলবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করে দেশে সংস্কৃতিচর্চার অবাধ পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানান উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৯ বিয়ে করা মুফতি কাসেমী নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৪
মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। ছবি: সংগৃহীত
মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরোর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমীকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ রোববার (২৩ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন শাক্তা ইউনিয়নের আটিবাজার এলাকা থেকে উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী ৯টি বিয়ে করেছেন। চার বউ বর্তমানে রয়েছে। তিনজন তাঁকে ডিভোর্স দিয়েছেন এবং দুজনের ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

ওসি আরও বলেন, সাবেক এক স্ত্রীর পক্ষে তাঁর মামি আন্না পারভিন গতকাল কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলার পর আটিবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামুনুর রশিদ কাসেমীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মামুনুর রশিদ কাসেমী এক নারীকে বিয়ে করার পর সংসার করেন। পরে তালাক দেন। পরে আবার বিয়ে করবেন বলে ওই নারীকে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর কাসেমী তাঁর হেফাজতে রেখে লাগাতার ধর্ষণ করেন এবং পরে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ববিরোধের জেরে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরফোজ আলী (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আরফোজ ওই গ্রামের মৃত ফুল মিয়ার ছেলে। আর আহতদের মধ্যে ফারুক মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কয়েক দিন ধরে দেওড়া গ্রামের মাগুরহাটি এলাকার একটি জায়গা নিয়ে স্থানীয় দানা মিয়া গোষ্ঠী ও শিপন গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এই নিয়ে ১৫ নভেম্বর থেকে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে রোববার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের লোকজন আবার দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান।

সংঘর্ষ চলাকালে দানা মিয়া গোষ্ঠীর আরফোজ মিয়া নিহত হন। এই সময় উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, শিক্ষককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
অভিযুক্ত শিক্ষক রোমান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত শিক্ষক রোমান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রোমান মিয়া (৩৩) নামের শিক্ষককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। পরে ওই ঘটনার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম মিঞা।

অভিযুক্ত রোমান মিয়া হবিগঞ্জে লাখাই উপজেলার বউবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মুন্সিগঞ্জ শহরে হোস্টেলে থেকে শিক্ষকতা করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষক বাথরুমে নিয়ে ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় ফেল করানোসহ ভয় দেখিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করেন। তখন ওই ছাত্রী চিৎকার দিয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায়। পরে তার অভিভাবক ঘটনা জেনে অন্য শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ করেন। প্রতিষ্ঠানপ্রধান উপস্থিত না থাকায় অন্য শিক্ষকেরা কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা রোববার সকালে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা ওই শিক্ষককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেন।

বিক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা বলেন, ওই শিক্ষক এর আগেও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফিরোজ কবির জানান, অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরির অভিযোগ, সালিস বৈঠকে যুবককে ২০ ফুট মাটিতে নাকে খত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
চুরির অভিযোগে নাকে খত দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
চুরির অভিযোগে নাকে খত দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে চুরির অভিযোগে এক যুবককে (২৮) গ্রাম্য সালিসে নাকে খত দেওয়ানো হয়েছে। গতকাল শনিবার (২২ নভেম্বর) উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালীশংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের পল্লিচিকিৎসক এনামুলের বাড়িতে চুরির অভিযোগ তাঁকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালিসের মাতব্বররা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত শুক্রবার রাতে কালীশংকরপুর গ্রামের এনামুলের গরু চুরি করতে প্রবেশের অভিযোগে গতকাল বিকেলে একই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সালিস বসানো হয়। সালিসে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলামসহ কয়েক শ লোক উপস্থিত ছিলেন। সালিসে অভিযোগ তোলা হয়, শুক্রবার রাতে এনামুলের বাড়ির পাশে ওই যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে এনামুলের ছেলে ইমরান। ইমরানের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবক ও তাঁর বাবাকে পরদিন জোরপূর্বক সালিসে হাজির করা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, সালিসে মাতব্বরদের একজন সাদা শার্ট ও লুঙ্গি পরে ওই যুবকের ঘাড় মাটির সঙ্গে চেপে ধরে প্রায় ২০ ফুট নাকে খত দেওয়ান। পরে কান ধরে ওঠবস করিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই ছেলে চোর। আওয়ামী লীগের সময় থেকেই তার চুরির অভিযোগ আছে। গ্রামের লোক এই ছেলেকে ধরে মারধর করে হাত কেটে দিতে চাচ্ছিল। এই কারণে আমি উপস্থিত থেকে তাকে সালিসে নাকে খত দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছি। এর পরেও সে এমন কাজ করলে তাকে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

ওই যুবকের বাবার দাবি, চুরি করে চলতে হবে—এমন অভাব তাঁর সংসারে নেই। তাঁরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণ আগে একটি ভিডিও দেখেছি। এটা খুবই অন্যায় কাজ করেছে। কেউ যদি কোনো অপরাধ করে থাকে, তাহলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। কিন্তু সালিসে কেউ আইন হাতে তুলে নিলে তারাও অপরাধী হবে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত