Ajker Patrika

আদালতে নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের বর্ণনা দিলেন কানাডীয় দুই পুলিশ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আদালতে নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের বর্ণনা দিলেন কানাডীয় দুই পুলিশ কর্মকর্তা

বাংলাদেশে গ্যাসক্ষেত্রে কাজ পেতে কানাডীয় কোম্পানি নাইকো রিসোর্স লিমিটেড ঘুষ লেনদেন করে। আজ সোমবার কানাডীয় দুই পুলিশ কর্মকর্তা বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা কেভিন ডুগান ও লিওড স্কোয়েপের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। 

ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে এই সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। প্রথমে সাক্ষ্য দেন লিওড স্কোয়েপ। তাঁকে আসামিপক্ষের জেরা করা শেষ হয়। এরপর সাক্ষ্য দেন কেভিন ডুগান। তাঁকে আসামি সেলিম ভূঁইয়া ও গ্যাস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে জেরা শুরু হওয়ার পর আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার আবার তারিখ ধার্য করা হয়। 

সাক্ষীরা খালেদা জিয়ার নাম না বলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী জেরা করবেন না বলে আদালতকে জানান। খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়াউদ্দিন জিয়া ও আসামি সেলিম ভূঁইয়ার আইনজীবী জাকারিয়া হায়দার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 
 
এর আগে কানাডার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজির হতে গত ১৯ অক্টোবর সমান জারি করেন আদালত। দুই দিন আগেই দুই সাক্ষী বাংলাদেশে আসেন সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও মোশারফ হোসেন কাজল দুই সাক্ষীকে নিয়ে সকালে আদালতে যান। এই মামলায় কারাগারে থাকা আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

দুই সাক্ষী আদালতকে বলেন তাঁরা কানাডার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসেস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট গ্রুপের এবং রয়্যাল কানাডীয় মাউন্টেড পুলিশের আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ ইউনিটের সদস্য। তাঁরা কানাডার ফরেন পাবলিক অফিশিয়াল অ্যাক্ট অনুযায়ী নাইকো রিসোর্সের দুর্নীতি তদন্তের সঙ্গে জড়িত থাকার সূত্রে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এই মামলায় সাক্ষ্য দিতে অনুরোধ করেন। তাঁরা তখন সাক্ষ্য দিতে সম্মতি প্রকাশ করেন। সেই কারণে আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। 

সাক্ষীরা বলেন ২০০৫ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী একেএম মোশারফ হোসেনকে নাইকো রিসোর্স লিমিটেড ঘুষ হিসেবে একটি গাড়ি দেয়। ওই সংবাদের ভিত্তিতে কানাডার আলবার্তার ক্যালগরির আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন ইউনিট তদন্ত শুরু করে। 

বিষয়টি কানাডার আদালতে উত্থাপিত হলে ২০১১ সালে নাইকো রিসোর্স লিমিটেড দোষ স্বীকার করে। নাইকোকে ৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়। কানাডার পুলিশের দুর্নীতি দমন ইউনিট তিন বছর তদন্ত করে জানতে পারে নাইকো রিসোর্সের কাছ থেকে বাংলাদেশের কোম্পানি স্ট্রেটাস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মালিক কাসেম শরীফ ২ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার নেন। সেলিম ভূঁইয়ার নির্দেশে কাসেম শরীফ সেখান থেকে ২০ হাজার ইউএস ডলার ফজলে সিদ্দিক নামে একজনকে পাঠান। জামাল শামসি নামে একজনকে ৫৭ হাজার ইউএস ডলার পাঠান। পরে আরও এক লাখ ৩৩ হাজার ইউএস ডলার জামাল শামসিকে পাঠানো হয়। তাঁরা সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাঠান। গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও সেলিম ভূঁইয়া কাশেম শরীফের কোম্পানির পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। তবে শর্ত থাকে কাসেম শরীফ গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের অনুমতি ছাড়া বা তাঁর কথার বাইরে কারও সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তা বলতে পারবেন না। তাহলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তাঁর ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর এফবিআইয়ের কর্মকর্তা ডেবরা ল্যাপ্রেভোট গ্রিফিত ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা কেভিন ডুগান ও লিওড স্কোয়েপকে মামলায় সাক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন আদালত। এদের মধ্যে দুজনের প্রতি সমন জারি করা হয়। অন্য একজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পরবর্তীতে সমন জারি করা হবে বলে দুদকের আইনজীবী জানান। এই তিনজনই নাইকো কেলেঙ্কারি নিয়ে এর আগে তদন্ত করেছেন। 

মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হয় গত ১৭ সেপ্টেম্বর। গত ২৩ মে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। 

এই মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অন্য আসামিরা হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। 

সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ, এ কে এম মোশারফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মৃত্যুবরণ করায় ইতিপূর্বেই তাঁদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ববির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান সানজিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
খান সানজিয়া সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত
খান সানজিয়া সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার খান সানজিয়া সুলতানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ড. মোছা. সানজিদা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন। বিধি অনুযায়ী তিনি সব সুবিধা পাবেন।

নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান সানজিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি চিঠি পেয়েছেন এবং এর পর থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. মুসিন উদ্দিন ইউজিসির চারটি অবজারভেশনসহ নানা কারণে পদত্যাগ করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে খান সানজিয়া সুলতানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে সতর্ক মহড়ায় পুলিশ, ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উদ্যোগে সতর্ক মহড়া। তবে পুলিশ সদস্যদের মাথায় হেলমেট ছিল না। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উদ্যোগে সতর্ক মহড়া। তবে পুলিশ সদস্যদের মাথায় হেলমেট ছিল না। ছবি: সংগৃহীত

‘জনগণের নিরাপত্তায় আমরা আছি’—এ স্লোগান সামনে রেখে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উদ্যোগে দিনব্যাপী সতর্ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহড়াটি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বের হয়।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উদ্যোগে সতর্ক মহড়া। তবে পুলিশ সদস্যদের মাথায় হেলমেট ছিল না। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উদ্যোগে সতর্ক মহড়া। তবে পুলিশ সদস্যদের মাথায় হেলমেট ছিল না। ছবি: সংগৃহীত

তবে মোটরসাইকেলের বহরের সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের কারও মাথায় হেলমেট দেখা যায়নি।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জনগণের জানমাল রক্ষায় ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ মহড়া দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী আলফাডাঙ্গা বাজার, গুরুত্বপূর্ণ মোড়, জনবহুল স্থান ও গ্রামীণ এলাকায় টহল দেওয়া হয়। এতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেলযোগে উপজেলাজুড়ে টহল ও মহড়ায় অংশ নেন। এ সময় তাঁরা জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে ওই মহড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন এসআই লিয়াকত হোসেন, যা ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ছয়টি মোটরসাইকেলে পুলিশের দুজন সদস্য করে ১২ জন রয়েছেন এবং ছয়জন চালকসহ কারও মাথায় হেলমেট নেই। তাঁদের পেছনে ছিল টহলরত আরও একটি জিপগাড়ি।

ফরিদপুর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কান্তি বালা পান্না বলেন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট না পরা, এটা একটা অপরাধ। হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালালে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। অবশ্যই তাঁদের হেলমেট পরা উচিত ছিল।

জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা থানার এসআই লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘আসলে হেলমেট পরা উচিত ছিল। কিন্তু হেলমেটটা পরলে ওইভাবে আমরা যে মুভ করতেছি, বোঝা যেত না। পরলে ভালো হতো। আসলে সব ভুল ধরলে তো আর কাজ করা যাবে না। পরে আমরা হেলমেট পরে নেব।’

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম বলেন, ‘টহলের সময় আমি ছিলাম না। বিষয়টি আমার জানা নেই। তারপরও বিষয়টি দেখছি। যদি এমন হয়, তাহলে পরবর্তীতে যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আটজন। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আটজন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল কর্মী সাজ্জাদ নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বাকলিয়া থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সবুজ ইসলাম মিরাজ (২৪), সাইদুল ইসলাম (২০), এমরান হোসেনসাগর (৩০), জিহান (২২), তামজিদুল ইসলাম ওরফে সাজু (৪৭), আরাফাত (২২), ওসমান (২৮) ও দিদারুল আলম রাসেল (২৪)।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ নিহত সাজ্জাদের বাবা মো. আলম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জন আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১টায় নগরের বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোডের সৈয়দ শাহ রোড এলাকায় ব্যানার টানানো নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি হয়। যুবদল নেতা পরিচয় দেওয়া সোহেল ও বোরহান উদ্দিন গ্রুপের সঙ্গে নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার অনুসারীদের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বাকলিয়া থানা-পুলিশ জানায়, গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় যুবদল কর্মী সাজ্জাদ হোসেন মারা যান। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন আরও ১৩ জন। তাঁরা হলেন মো. পারভেজ (২০), শরীফ (২৯), রিফাত (২৫), ইউসুফ (৩০), জিসান (২২), জুয়েল (২৫), একরাম (২৩), ইব্রাহিম (২৩), শুক্কুর (২৫), ওবাইদুল (৩০), সাব্বির (২২), ফারুক (২৮) ও ফয়সাল (২০)।

তবে ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় ব্যানার টানানোসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ করলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

পুলিশের তথ্যে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন (২৯), নজরুল ইসলাম সোহেল (৪২), মিল্টন (৪৪), বাদশা ওরফে ছোট বাদশা (৩০), ইউসুফ ওরফে হিরন (২৫), সবুজ ইসলাম মিরাজ (২৪), সাইদুল ইসলাম (২০), এমরান হোসেন সাগর (৩০), মোহাম্মদ দিদার (৪৫), রিয়াজ করিম (৩৩), জিহান (২২), তামজিদুল ইসলাম সাজু (৪৭), আরাফাত (২২), বোরহান (২৫), মোজাহের মেম্বার (৫০), এহতেশামুল হক ভোলা (৫০) ও নাঈম উদ্দিন (২৪)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, মামলার আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম সোহেল যুবদল নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকলেও তাঁরা গত বছর অভ্যুত্থানের আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত সোমবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনাটির সূত্রপাত বোরহান উদ্দিনের একটি ব্যানার টানানো নিয়ে। ওই ব্যানারে বোরহান নিজেকে যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে চসিক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেনের ছবি যুক্ত করেছিলেন।

একই মামলায় এহতেশামুল হক ভোলা (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যিনি সারা দেশে আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।

ভোলার বিরুদ্ধে মিতু হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তোলে পুলিশ। তবে ভোলা এসব অস্বীকার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হালদায় ভেসে উঠেছে ২০ কেজি ওজনের মৃত কাতলা

রাউজান প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম 
হালদায় ভেসে উঠেছে ২০ কেজি ওজনের মৃত কাতলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালদায় ভেসে উঠেছে ২০ কেজি ওজনের মৃত কাতলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের রাউজানে মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী থেকে প্রায় ২০ কেজি ওজনের একটি মৃত কাতলা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আজিমের ঘাট এলাকায় নদীর পাহারাদার অর্ধগলিত মাছটি ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। পরে মাছটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন ফাহিম জানান, প্রায় ২৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের কাতলা মাছটির বয়স ছিল ১১-১২ বছর। মাছটির দেহে গুরুতর কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং অর্ধেকের বেশি পচে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

প্রাথমিকভাবে এটি একটি পুরুষ মাছ বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং বার্ধক্যজনিত কারণে এটির মৃত্যু হতে পারে। সুরতহাল শেষে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মৃত মাছটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে হালদা নদী অরক্ষিত। এ সুযোগে হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে জাল ও বড়শি দিয়ে প্রতিনিয়ত মাছ ধরা হচ্ছে। তাই এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে নিয়মিত প্রশাসনিকভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত