Ajker Patrika

থানায় হামলা করে আটকদের ছাড়িয়ে নিল ছাত্ররা, বদলির মুখে ওসি-এসআই

 উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২: ৫০
রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমঝোতা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমঝোতা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা ও পূর্ব থানা ঘেরাওয়ের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আটক তিন ছাত্রকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান ও উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদকে বদলি ও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

উত্তরা পূর্ব থানা প্রাঙ্গণে আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহসিম ফয়েজ সাকিব এবং পুলিশের হাতে আটক হওয়ার মুক্ত হওয়া ইন্ডিপেডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) ছাত্র আসিফুল হক রবিন আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানান।

উত্তরা পূর্ব থানা থেকে ছাড়া পাওয়া ওই তিন ছাত্র হলেন— আইইউবিএর ছাত্র আসিফুল হক রবিন, উত্তরা টাউন ডিগ্রি কলেজের আকাশ ও গাজীপুরের বিএএসটির ছাত্র বাপ্পি।

আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ সড়কে উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি মিটিংয়ের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। মিটিং চলাকালে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে থেকে আকাশ, রবিন ও বাপ্পি নামের তিন ছাত্রকে আটক করে। পরে তাদের উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে ছাত্রদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তরার অন্য ছাত্ররা তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। একপর্যায়ের তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশকে মারধর করেন। এতে উত্তরা পশ্চিম থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহাদেব আহত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আটক তিন ছাত্রকে ছাড়িয়ে নিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আটক তিন ছাত্রকে ছাড়িয়ে নিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থী তাহসিম ফয়েজ সাকিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা আমাদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছে, তাঁরাই চাঁদাবাজির করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। আবার তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে আমাদের তিন সহযোদ্ধাকে পুলিশ আটক করেছে। কিন্তু আটকের কারণ জানার জন্য আমরা তিন ঘণ্টা থানায় অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনো সদুত্তর না দিয়ে আমাদের বসিয়ে রেখেছে। পরে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলন শুরু করি। তারপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। আটকের কারণ জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহানও কোনো কারণ জানাতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি কোনো নির্দেশও দিই নাই।’’’

সাকিব আরও বলেন, ‘তিন ছাত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে এসে হয়রানির বিষয়ে ডিসি রওনক জাহান আমাদের বলেছেন, উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান ও এসআই আবু সাঈদকে বদলি ও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’

উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আটকের পর মুক্তি পাওয়া ছাত্র আসিফুল হক রবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা উত্তরার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালিকা করছিলাম। ওই সময় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আবু সাঈদ আমাদের নিয়ে আসে। আটক করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আমাদের নামের উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওসি স্যার বলছে, ডিসি স্যার আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’’’

তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে আসছে, তখন উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ বলছে, ওদের নামে তো কোনো মামলাই নেই। ওদেরকে কেন অ্যারেস্ট করব?’

অভিযোগ করে রবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা রিস্ক নিয়ে আওয়ামী লীগ ধরায়ে দেই, ছিনতাইকারী ধরায়ে দিই। অথচ ক্রেডিট নেয় উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান। আবার সেই ওসিই আমাদের নামে অভিযোগ নিয়ে ধরে নিয়ে গেছিল। অথচ ওসি হাফিজই বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য করেন। আমার সামনেও বিএনপির এক লোক তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বলেছে, ‘এই নেন আপনার বাকি টাকাটা। তখন আমরা থাকায় ওসি ওই বিএনপির নেতাকে বলেছেন, ‘‘আমি এসবে নেই। এসব আমাকে দেন কেন?’’’

উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যে কারণে আটক হন তিন ছাত্র

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোদ্ধা পরিচয়ে কাজী জুবায়ের, সৈয়দ সামিউল ইসলাম, মো. আজাদ ও মাহতাব খান বাঁধন বাদী উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ বরাবর কাছে একটি অভিযোগ দেন।

অভিযোগে তাঁরা উল্লেখ করেন, আকাশ, লাবিব মুহাম্মাদ, রাজু আহমেদ আসিফ, বাপ্পি খান, ওয়েস রহমান, নাহিদ শিকদার, আসিফুল রবিন, সাকিব অত্যন্ত খারাপ, দুষ্ট, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ, পরধনলোভী, প্রতারক এবং সমাজের বিশৃঙ্খলাকারী। তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি পরিচয়ে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকায় বিভিন্ন প্রকারের বিশৃংখল এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। বর্তমানেও তারা নির্দ্বিধায় এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজি প্রতারণা এবং হুমকি দেওয়ার মতো নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তাঁদের দ্বারা সমাজের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগণ যখন আমাদের বরাবর নালিশ জানায়, তখন আমরা উক্ত অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে কাজ শুরু করি। তবে সমাজের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের ডাকে এবং তাদের উপকারে আমরা যখন এগিয়ে আসি তখন আমরা দুষ্কৃতকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমরা খুবই ভীত ও জীবন সংকটে রয়েছি।

আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামীম আহমেদ ও বিমানবন্দর জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম এমরানুল হক মারুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশই বলতে পারবে, তাঁরা কেন আটক করেছে। তারা আটকের পর কেন আমাদের থানায় দিয়ে গেছে, সেটাও আমরা জানি না। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসিই বলতে পারবেন, কেন তিন ছাত্রকে আটক করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি।

সর্বশেষ রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত উত্তরা পূর্ব থানার কম্পিউটার ল্যাব রুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের মিটিং করতে দেখা যায়।

মিটিংয়ে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান, উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আহম্মেদ আলী, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) সাদ্দাম হোসেন, বিমানবন্দর জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম এমরানুল হক মারুফ, উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মোহাম্মদ শামীম আহমেদসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা রয়েছেন। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান ও এসআই আবু সাঈদের বদলি ও ব্যবস্থার বিষয়ে কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনী প্রতিনিধি
চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিন পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকার মজিবুল হকের ছেলে। তিনি দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা গেছে, ৫ অক্টোবর গভীর রাতে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া খুশিপুর এলাকায় দুই বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকা থেকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে ভিন্নমতের রাজনীতি করার কারণে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলাগুলোয় জামিনে আছেন। বর্তমানে প্রতিহিংসা করে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’

দাগনভূঞা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যদি এ ঘটনা সত্য হয়, তাহলে তা দলের জন্য বিব্রতকর। ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যদি তিনি জড়িত থাকেন, অবশ্যই তাঁর বিচার হোক। আইন সবার জন্য সমান। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হবে।   

এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গরু চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাগনভূঞা ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষে সবাই কাজ করব: আরিফুল হক চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারের মধ্য দিয়ে সিলেট-১ আসনে ধানের শীষের পক্ষে পদযাত্রা করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে জোহরের নামাজের পর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তিনি এই প্রচার শুরু করেন।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেতা তারেক রহমান বলেছেন, তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করবেন। অনেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এখনো কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের মনোনয়ন বোর্ড বসে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরিফ বলেন, ‘৪৭ বছর ধরে আমি দলের সঙ্গে আছি। সব সময় দলের সিদ্ধান্ত মেনে এসেছি। কখনো দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। আর উনিও (তারেক রহমান) বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা, জনগণের সম্পৃক্ততা যাঁর সঙ্গে থাকবে, তিনি তাঁকে নমিনেশন দেবেন। আজকে দেখুন, শুধু প্রচার অভিযানে হাজার হাজার মানুষ চলে এসেছেন।’

পদযাত্রায় সিলেটের বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নেন। এ সময় অনেকে ধানের শীষ হাতে নিয়ে প্রচারণায় অংশ নেন। রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে স্বাগত জানান অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলন থেকে ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জোবায়েদের সম্পর্কে তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা যতটুকু জানে, তাতে এই ধরনের মন্তব্য তার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। তা ছাড়া জোবায়েদ যদি প্রেমই করত, তাহলে তো তাকে আর মেয়ের পরিবার টিউশনিতেই রাখত না।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আজকের পত্রিকাকে এসব কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। এর আগে বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ভাষাশহীদ রফিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং জোবায়েদের আইনজীবী মো. ইশতিয়াক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার দ্বিতীয় দিনে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮), মাহির রহমান (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)। এরপর মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে জোবায়েদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে বর্ষার সঙ্গে মাহিরের পূর্ববর্তী সম্পর্ক ছিল। এটা মূলত ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’। এর জেরে মাহির ও আয়লান মিলে বর্ষার সহযোগিতায় হত্যা করেন জোবায়েদকে।

পুলিশের এই বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে সংশয় আছে, প্রশ্ন আছে। জোবায়েদকে হত্যার আগে তার ছাত্রী বর্ষা তাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, সে কখন আসতেছে, কতটুকু এসেছে এবং তার আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, পরে তার লোকেশন চেক করে। বিষয়টা স্বীকারোক্তি দিয়েছিল ছাত্রী বর্ষা। সেটি এজাহারের প্রথম সূত্র হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটি কেন বাদ দেওয়া হলো? সেটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, নাকি পরে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা আমাদের প্রথম প্রশ্ন।’

ডিএমপির বক্তব্য অনুযায়ী, মাহিরকে বর্ষা বলেছিলেন, জোবায়েদকে না সরালে তিনি ‘মাহিরের হতে পারবেন না’। এরপর এক মাস আগে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

পুলিশের দেওয়া ঘটনার বর্ণনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘জোবায়েদকে আক্রোশে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, আক্রোশে হত্যা করলে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। কিন্তু পুলিশ বলল, এক আঘাতেই হত্যা করা হয়েছে জোবায়েদকে। এটা তো পেশাদার হত্যাকারী ছাড়া কেউ করতে পারার কথা নয়। তাহলে আমাদের প্রশ্ন পেশাদার হত্যাকারী দিয়ে হত্যা করিয়ে অন্যদের ফাঁসানো হয়েছে কি? এ ছাড়া মাহিরের উচ্চতা ও জোবায়েদের উচ্চতায় অনেক তফাত। জোবায়েদ মাহিরের থেকে অনেক লম্বা, সে (মাহির) তার (জোবায়েদ) গলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারার কথা নয়। সে জায়গা থেকে হত্যা করা সম্ভব কি?’

তিনি আরও বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দুজন ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। একজন কালো টি-শার্ট পরিহিত, আরেকজন লাল টি-শার্ট পরিধান করা ছিল। এই দুজনই কি গ্রেপ্তার হওয়া দুজন কি না, আমরা কীভাবে নিশ্চিত হব? সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রমাণ জব্দ করেছে কি না, সেটা আমরা জানতে চাই।’

পুলিশের বিবরণের আরেকটি অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই অধ্যাপক বলেন, ‘অভিযুক্ত বার্জিস শাবনাম বর্ষার মা-বাবার জবানবন্দি নেওয়া প্রয়োজন ছিল, হত্যার সময় বাসায় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। যদি তাঁরা এ ঘটনায় সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাঁদেরও তো এই মামলার আসামি হওয়ার কথা। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়েও পুলিশ স্পষ্ট কিছু জানায়নি।’

এদিকে জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখান থেকেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সমাবেশে পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু সাইদ মো. রিপন রউফ বলেন, ‘গতকাল পুলিশের কর্মকর্তারা যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা যেভাবে হাসাহাসি করেছেন, তাতে মনে হয় না, তাঁরা একটি হত্যার বিবরণ দিচ্ছেন। তাঁরা কোনোভাবেই দায়িত্বশীল আচরণ করেননি।’

জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা, নিহত ২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মিজানুর রহমান ও শিহাব আলী নামের দুই যুবক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইমন আলী নামের আরও এক যুবক।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের কেন্দুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত যুবকেরা হলেন সদর উপজেলার মাঝপাড়ার তাজেবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (২২) ও ধীনগর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে শিহাব আলী (২০)।

আহত যুবক হলেন আমনুরা কলোনির শফিকুল ইসলামের ছেলে ইমন আলী।

সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আজ বেলা পৌনে ৩টার দিকে একই মোটরসাইকেলে তিন যুবক ঝিলিমবাজার থেকে গোদাগাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি একটি কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মিজানুর। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিহাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত