Ajker Patrika

নামে কুটিরশিল্প মেলা, আড়ালে চলছে ‘জুয়া’

  • মেলায় কুটিরশিল্প সামগ্রীর একটি দোকানও নেই।
  • লটারির প্রচার চালানো হচ্ছে জেলাজুড়ে।
গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আয়োজিত মাসবাপী কুটিরশিল্প মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আয়োজিত মাসবাপী কুটিরশিল্প মেলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে মাসব্যাপী শুরু হয়েছে কুটিরশিল্প মেলা। ১৮ এপ্রিল শুরু হওয়া এ মেলায় হস্ত ও কুটিরশিল্পের কোনো পণ্য নেই। রয়েছে দুটি মিষ্টির দোকান, কয়েকটি ফুচকার স্টল, ভূতের বাড়ি জাদু প্রদর্শনী, সার্কাস, নাগরদোলা, স্লিপার, ওয়াটার বোট, লটারির টিকিট বিক্রির ১০-১২টি কাউন্টার ও লটারির ড্র সেন্টার। গত শনিবার কোনাবাড়ীর বাইমাইল সিরামিক মাঠে হস্ত ও কুটিরশিল্প বাণিজ্য মেলায় গিয়ে এমনটি দেখা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ মেলায় হস্ত ও কুটিরশিল্পের কোনো দোকান বা স্টল নেই। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে মেলায় লটারির নামে পরিচালনা করা হচ্ছে ‘জুয়া’।

লটারিতে লোভনীয় পুরস্কারের চমক দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। মূলত মেলা প্রাঙ্গণে ঢোকার জন্য ২০ টাকায় টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। সেই টিকিটেই হচ্ছে লটারি। এ জন্য জেলাজুড়ে চালানো হচ্ছে প্রচার, বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট। অনেকে মেলায় উপস্থিত না হয়েও ১০-২০টি, কেউ কেউ শতাধিক টিকিট কিনে লটারিতে অংশ নিচ্ছেন। লটারিতে গরু, মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, ইজিবাইকসহ ৪০ থেকে ৪৫টি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

মেলাকে উদ্দেশ্য করে টিকেটের মাধ্যমে অভিনব জুয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। অনেকেই বলছেন, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মেলার আড়ালে লটারির টিকিট বিক্রি করাই আয়োজকদের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও মাদকের ছড়াছাড়ি চলে রাতে, যেকোনো মহুর্তে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা হতে পারে। তারা বলেন, বিভিন্ন মহল্লায় অটোরিকশা, সিএনজিতে মাইকিং করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিল্পকারখানার শ্রমিক সবাই লোভে টিকেট কিনছেন ৷

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, মেলার প্রবেশ টিকিটের উপর আকর্ষণীয় পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, রিক্সা চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের টার্গেট করে চালানো হয় প্রচারণা। অনেকে আকর্ষণীয় পুরস্কারের আশায় সারাদিনের আয়, কেউ কেউ পুরো মাসের বেতনের টাকা দিয়ে টিকি কিনে লটারীতে বাজী ধরেন।

স্থানীয় আশিকুর রহমান বলেন, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মেলার আড়ালে লটারির টিকিট বিক্রি করাই আয়োজকদের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া মাদকের ছড়াছড়ি চলে রাতে।

হৃদয় হোসেন নামের একজন বলেন, মেলায় লটারির নামে জুয়া চলছে। স্বর্ণালংকার, গরু, ফ্রিজসহ লোভনীয় পুরস্কারের জন্য মানুষ লটারির টিকিট কিনে প্রতারিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে ‘অনুমতি ছাড়া কি এত বড় মেলার আয়োজন করেছি?’ এমন প্রশ্ন রেখে মেলার আয়োজকদের একজন কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার নাজমুল ভাই, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদ ভাইসহ সবার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় সব নিয়মমাফিক হচ্ছে, কোনো অনৈতিক কাজ হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খানকে ফোন করা হলে জানান, তিনি দেশের বাইরে আছেন।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) জাহিদ হাসান বলেন, কোনাবাড়ী এলাকায় সুনির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে একজনকে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলার জন্য এক মাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মেলার শর্ত ভঙ্গ করলে অথবা অবৈধ কোনো কাজ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত