Ajker Patrika

পাসপোর্ট ফেরত ও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চান সম্রাট, বাড়ল জামিন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পাসপোর্ট ফেরত ও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চান সম্রাট, বাড়ল জামিন 

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট আদালতে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে জামিন পান। গত ২২ আগস্ট জামিন পাওয়ার আগে তাঁর পাসপোর্টও আদালতে জমা দেওয়া হয়। এখন আদালতে জমা দেওয়া পাসপোর্ট ফেরত চান তিনি। সঙ্গে অনুমতি চান আবারও বিদেশ যাওয়ার।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ এই আবেদন জানান সম্রাট। একই সঙ্গে তাঁর জামিন স্থায়ী করারও আবেদন করেন তিনি। বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান জামিনের মেয়াদ আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর আদেশ দেন। ওই দিন সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিনও ধার্য করেন আদালত। তবে আদালত পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া ও বিদেশ যাত্রার অনুমতি বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।

আজ অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ধার্য করা দিনে আদালতে হাজির হন সম্রাট। আজ তাঁর পক্ষে আইনজীবী জামিন স্থায়ী করার আবেদন জানান আদালতের কাছে। পৃথক আবেদনে আইনজীবী অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য আরও সময় চান। আবেদনে বলা হয়, সম্রাটের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী বিদেশে থাকায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি সম্ভব নয়। শুনানি শেষে আদালত সম্রাটের জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেন এবং অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেন।

গত ২১ জুন, ৬ জুলাই, ১১ আগস্ট, ২২ আগস্ট ও ১৯ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির কথা থাকলেও তা হয়নি। গুরুতর অসুস্থ বিবেচনায় পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার শর্তে গত ২২ আগস্ট সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এরও আগে গত ২৪ মে সম্রাট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে তাঁর ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাঁকে নিয়ে সেদিনই দুপুর দেড়টায় তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পরদিন র‍্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। সেই সব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। পরে সিআইডি অর্থপাচারের অভিযোগে এবং দুদক জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুটি মামলা করে। মাদক মামলা এবং অর্থ পাচার ও অস্ত্র আইনে দায়ের করা পৃথক তিনটি মামলায় সম্রাটকে জামিন দেন ঢাকার তিনটি পৃথক আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত